অনেকটা বিস্ময়ভরা চোখে তিনি একটার পর একটা সবজি হাতে নিয়ে দেখছিলেন। বললেন, ‘ক্যাপসিকাম এখন বেগুনি রঙেরও হয় দেখছি!’ তবে আশ্চর্য হলেন, অনেক রকমের আলু দেখে। জিজ্ঞাসা করতেই বললেন, ‘সচরাচর আমরা গোল আলু, মিষ্টি আলু, গাছ আলু এসবই দেখি। কিন্তু এখানে দেখছি অনেক ধরনের আলু। লোমা আলু, জুম আলু, মেটে আলু, শোরা জৈন্তা আলু, শিমুল আলু। আবার শাকও দেখছি ৮-১০ রকমের।’
এতক্ষণ যার কথা বলছিলাম, তিনি জেসমিন হায়দার। থাকেন রাজধানীর উত্তর বাড্ডায়। বাড়ির ছাদে শখ করে সবজি বাগান করেছেন। শুধু তিনি নন, তার মতো অনেকেই গতকাল ফার্মগেটস্হ কৃষিবিদ ইনস্টিটিউট মিলনায়তন চত্বরে সবজি মেলায় এসেছেন নানা ধরনের সবজি দেখতে। মেলায় দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে খামারিরা এসেছেন তাদের উত্পাদিত হরেক রকমের সবজি নিয়ে। কৃষি মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, দেশে এখন ৮০ থেকে ১০০ জাতের সবজির চাষ হচ্ছে। গত এক দশকে সবজি চাষে রীতিমতো বিপ্লব হয়েছে। এই সময়ে সবজির উৎপাদন বেড়েছে প্রায় সাত গুণ। এর মধ্যে গত পাঁচ বছরেই সবজি উৎপাদন বেড়েছে ৫৪ লাখ টন। গত ২০১৫-১৬ অর্থবছরে ৮ লাখ ৫ হাজার হেক্টর জমিতে সবজি উৎপাদন হয় ১ কোটি ৪৪ লাখ টন। আর ২০২০-২১ অর্থবছরে তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১ কোটি ৯৭ লাখ ১৯ হাজার টনে।
গতকাল সবজি মেলার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে কৃষিমন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাক বলেন, দেশে সবজি রপ্তানির সম্ভাবনা অনেক। রপ্তানি বাড়াতে আমরা কাজ করছি। অচিরেই সবজি রপ্তানি বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনের অন্যতম উৎসে পরিণত হবে। কৃষিমন্ত্রী মেলায় অংশ নেওয়া বিভিন্ন স্টল ঘুরে দেখেন মন্ত্রী। এ সময় কৃষি মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. সায়েদুল ইসলাম, অতিরিক্ত সচিব হাসানুজ্জামান কল্লোল, বিএআরসি নির্বাহী চেয়ারম্যান ড. শেখ মো. বখতিয়ার, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বেনজির আলম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। কৃষি মন্ত্রণালয় আয়োজিত তিন দিনব্যাপী এই মেলা শেষ হবে আগামী ২ মার্চ। প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত মেলা খোলা থাকবে। মেলায় ৫২টি সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান অংশ নিয়েছে।