আগামী মে ও জুন মাসের মধ্যে দেশের পাঁচ সিটি করপোরেশন নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। ইতোমধ্যে তফসিল ঘোষণা করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। তাই স্থানীয় এই নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষভাবে সম্পন্ন করার লক্ষ্যে নির্বাচন কর্মকর্তা (বিশেষ বিধান) আইন, ১৯৯১ এর বিধান অনুসরণ এবং নির্বাচন কমিশনকে (ইসি) সহযোগিতা করতে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগকে চিঠি দিয়েছে ইসি। পাশাপাশি এসব এলাকার নির্বাচন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের ইসির পরামর্শ ছাড়া বদলি বা ছুটি না দেয়ারও অনুরোধ জানিয়েছে সংস্থাটি।
বৃহস্পতিবার (২৭ এপ্রিল) নির্বাচন কমিশনের উপসচিব মো. আতিয়ার রহমান স্বাক্ষরিত চিঠিতে এসব কথা বলা হয়েছে।
‘নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষভাবে সম্পন্ন করার লক্ষ্যে নির্বাচন কর্মকর্তা (বিশেষ বিধান) আইন, ১৯৯১ এর বিধান অনুসরণ এবং নির্বাচন কমিশনকে সহযোগিতা প্রদান’ শিরোনামের চিঠিতে বলা হয়, নির্বাচন কমিশন ঘোষিত সূচি অনুযায়ী আগামী ২৫ মে গাজীপুর, ১২ জুন খুলনা ও বরিশাল এবং ২১ জুন রাজশাহী ও সিলেট সিটি করপোরেশন নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এসব নির্বাচন পরিচালনার জন্য রিটার্নিং অফিসার ও সহকারী রিটার্নিং অফিসার নিয়োগ করা হয়েছে ।
মন্ত্রিপরিষদ সচিবকে দেয়া চিঠিতে বলা হয়, নির্বাচন সংক্রান্ত কার্যাদি সুষ্ঠুভাবে সম্পাদনের জন্য সকল মন্ত্রণালয়/বিভাগ তথা সরকারি, আধা-সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত, আধাস্বায়ত্তশাসিত অফিস/প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের মধ্য হতে এবং কোন কোন ক্ষেত্রে বেসরকারি অফিস/প্রতিষ্ঠান হতেও প্রয়োজনীয় সংখ্যক ভোটগ্রহণ কর্মকর্তা নিয়োগ করা প্রয়োজন হবে। উল্লিখিত কর্মকর্তা/কর্মচারীদের মধ্য হতে কারও কারও নির্বাচনে অন্যান্য দায়িত্ব পালনের প্রয়োজন হতে পারে। সরকারি, সরকারি অন্যনপ্রাপ্ত ও বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকগণের মধ্য হতে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক ভোটগ্রহণ কর্মকর্তা নিয়োগ ছাড়াও নির্বাচনে বিভিন্ন দায়িত্ব প্রদান করা হবে।
এছাড়া নির্বাচনে আইনশৃঙ্খলা রক্ষার জন্য প্রয়োজনীয় সংখ্যক ম্যাজিস্ট্রেট ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য মোতায়েন করা হবে। তাছাড়া বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান/সংস্থার স্থাপনা/অঙ্গন ভোটকেন্দ্র হিসেবে ব্যবহৃত হবে।
এতে বলা হয়, সংবিধানের ১২৬ অনুচ্ছেদ অনুসারে নির্বাচন কমিশনের দায়িত্ব পালনে সহায়তা করা সকল নির্বাহী কর্তৃপক্ষের কর্তব্য এবং স্থানীয় সরকার (সিটি করপোরেশন) নির্বাচন বিধিমালা, ২০১০ এর বিধি অনুযায়ী নির্বাচন কমিশন তার দায়িত্ব পালনে সহায়তা প্রদান করার উদ্দেশ্যে রাষ্ট্রের যে কোন ব্যক্তি বা নির্বাহী কর্তৃপক্ষকে প্রয়োজনীয় নির্দেশ দিতে পারবে। অনুরূপভাবে নির্দেশিত হলে উক্ত ব্যক্তি বা নির্বাহী কর্তৃপক্ষ উল্লিখিত দায়িত্ব পালন বা উক্তরূপ সহায়তা প্রদান করতে বাধ্য থাকবে।
চিঠিতে আরও বলা হয়, উক্ত বিধিমালার বিধি ৮১ অনুযায়ী নির্বাচনের সময়সূচি প্রজ্ঞাপন জারির পর হলে ফলাফল সরকারি গেজেটে প্রকাশিত হওয়ার পর ১৫ (পনের) দিন সময় অতিক্রান্ত না হওয়া পর্যন্ত নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে পরামর্শ ব্যতীত বিধি উল্লিখিত কর্মকর্তাগণকে অন্যত্র বদলি করা যাবে না। নির্বাচন কর্মকর্তা (বিশেষ বিধান) আইন, ১৯৯১ অনুসারে কোন ব্যক্তি নির্বাচন সংক্রান্ত কাজের দায়িত্বপ্রাপ্ত হলে তিনি তার উক্তরূপ নিয়োগের পর নির্বাচনী দায়িত্ব হতে অব্যাহতি না পাওয়া পর্যন্ত তার চাকরির অতিরিক্ত দায়িত্ব হিসেবে নির্বাচন কমিশনের অধীনে প্রেষণে চাকরিরত আছেন বলে গণ্য হবেন।
চিঠিতে আরও বলা হয়েছে, নির্বাচনের কার্যক্রম সুষ্ঠুভাবে সম্পাদনের লক্ষ্যে নির্বাচনের কাজে নিয়োজিত ব্যক্তিবর্গ তাদের উপর অর্পিত দায়িত্ব আইন ও বিধি মোতাবেক নিরপেক্ষভাবে পালনের মাধ্যমে নির্বাচন কমিশনকে অতীতের ন্যায় সহায়তা প্রদান করবেন। নির্বাচন কমিশন কর্তৃক নির্বাচনের কাজে নিয়োজিত ব্যক্তিবর্গকে অব্যাহতি না দেয়া পর্যন্ত যাতে তাদের অন্যত্র বদলি করা বা ছুটি প্রদান না করা হয় অথবা নির্বাচনী দায়িত্ব ব্যাহত হতে পারে এমন কোন কাজে নিয়োজিত না করা হয় তার নিশ্চয়তা বিধানের লক্ষ্যে সকল মন্ত্রণালয়/বিভাগ তথ্য সরকারি, আধাসরকারি, স্বায়ত্তশাসিত ও বেসরকারি অফিস/ প্রতিষ্ঠান সংস্থাসমূহকে নির্দেশ প্রদানের জন্য আদিষ্ট হয়ে অনুরোধ করা হলো।