‘ভারতকে বলেছি, শেখ হাসিনাকে টিকিয়ে রাখতে হবে’ পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেনের এমন বক্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য আব্দুর রহমান বলেছেন, তিনি (পররাষ্ট্রমন্ত্রী) তো আমাদের দলের কেউ না। আমাদের দল তার এই বক্তব্যে বিব্রত হওয়ার প্রশ্নই আসে না।
শনিবার (২০ আগস্ট) ধানমণ্ডির ৩২ নম্বরে ১৫ আগস্ট স্মরণে আওয়ামী লীগের আন্তর্জাতিক বিষয়ক উপ-কমিটির অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে এমন কথা বলেন তিনি।
আব্দুর রহমান বলেন, দেখুন পররাষ্ট্রমন্ত্রী সাম্প্রতিককালে একটি বক্তব্য নিয়ে আপনারা যে প্রশ্ন করেছেন— আমার প্রথম কথাটি হচ্ছে, এটার ব্যাখ্যা তিনিই ভালো দিতে পারেন। কারণ মিডিয়াতে-পত্রপত্রিকায় তার যে বক্তব্য এসেছে, সে ব্যাপারে হয়তো তার কথা থাকতে পারে। কিন্তু যদি ধরেই নিই মিডিয়ায় যে কথাটি এসেছে, তিনি যদি কথাটি বলে থাকেন তাহলে আমি দলের পক্ষ থেকে আপনাদের স্পষ্ট করেই বলি, এটি আমাদের দলের কোনো কথা না। আমাদের দল সবসময় মনে করে ভারত আমাদের অত্যন্ত ঘনিষ্ট ও পরীক্ষিত বন্ধু। ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতাযুদ্ধে তাদের অবদান আমরা কোনো অবস্থাতেই ভুলতে পারব না।
তিনি আরও বলেন, যে দল বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে দেশের মাটি ও মানুষের ভেতর দিয়ে গড়ে উঠেছে, বড় হয়েছে, সেই দল কখনও কোনো বিদেশি শক্তিনির্ভর হয়ে ক্ষমতায় যাওয়া বা টিকে থাকার নীতেতে বিশ্বাস করে না। এই দল সেটি আশাও করে না। সে (পররাষ্ট্রমন্ত্রী) তো আমাদের দলের কেউ না। আমাদের দল তার এই বক্তব্যে বিব্রত হওয়ার প্রশ্নই আসে না।
এসময় পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে উদ্দেশ্য করে এ আওয়ামী লীগ নেতা বলেন, কথাবার্তায় এবং আচরণের ভেতর দিয়ে এমন কিছু বলবেন না যাতে দুষ্ট লোকেরা এর সুবিধা নিতে পারে। মানুষকে বিভ্রান্ত করতে পারে, সে ব্যাপারে তিনি সতর্ক থাকবেন। এতটুকুই তার কাছে আমাদের চাওয়া।
দল থেকে পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে কোনো নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে কি না, জানতে চাইলে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য বলেন, তিনি (পররাষ্ট্রমন্ত্রী) কেবিনেটের একজন সদস্য। সুতরাং কেবিনেটের প্রধান হিসেবে প্রধানমন্ত্রী এ বিষয়টি দেখভাল করবেন বলে আমরা আশা করি।
পররাষ্ট্রমন্ত্রীর বক্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে ভারতের সঙ্গে সম্পর্কে কোনো প্রভাব কিংবা বিদেশিরা বাংলাদেশ নিয়ে নেতিবাচক ধারণা নেয় কি না -এমন প্রশ্নের জবাবে আব্দুর রহমান বলেন, ভারতের সঙ্গে কেন প্রভাব পড়বে? আমরা তো আমাদের দলে পক্ষ থেকে স্পষ্ট করে জানিয়েছি। সুতরাং দলের কথা হবে যদি সেটা দলের মুখমাত্র বা নেতারা বলেন। আমাদের স্ট্যান্ড বা রাজনৈতিক নীতিমালা বা রাজনৈতিক যে অঙ্গীকার বা দর্শন সেই কথা তারা বিশ্বাস করবে না। একজন কেবিনেট সদস্য তিনি বিচ্ছিন্ন-বিক্ষিপ্তভাবে কথা বলেছেন। সেটি আমাদের দলের সিদ্ধান্তের কথা না। সুতরাং বিদেশিরা আমাদের ভুল বুঝবে না।
বৃহস্পতিবার (১৮ আগস্ট) সন্ধ্যায় চট্টগ্রাম শহরের জে এম সেন হলে জন্মাষ্টমী উৎসবের অনুষ্ঠানে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘শেখ হাসিনার সরকারকে টিকিয়ে রাখার জন্য যা যা করা দরকার, আমি ভারতবর্ষের সরকারকে সেটা অনুরোধ করেছি।’