আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক কৃষিবিদ আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম বলেছেন, পদ্মা সেতু উদ্বোধন উপলক্ষে ২৫ জুন যে জনসভার আয়োজন করা হয়েছে সেটি হবে শতাব্দীর শ্রেষ্ঠ জনসভা। এটি ইতিহাসের সাক্ষী হয়ে থাকবে, এটি হবে ঐতিহাসিক।
তিনি বলেন, এটি শুধু শেখ হাসিনার জনসভা নয়। দলমত নির্বিশেষে সবাই যাতে এ জনসভায় অংশ নেবে। এ জন্য আমাদের সবাইকে উৎসাহ দিতে হবে। সেদিন যেন শ্রমিক, মেহনতি মানুষ, ছাত্রসহ সবাই সমাবেশে অংশ নেয়। সেদিন শুধু পদ্মা সেতুর শুভ উদ্বোধন নয়, সে দিন বাঙালি জাতির জন্য এক অনন্য দিন। সে দিন শেখ হাসিনা সারাদেশের মানুষকে আমাদের সক্ষমতা ও দক্ষতার এক অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করবেন। বঙ্গবন্ধু কন্যা যা বলেন তা করেন এবং তিনি পারেন।
আগামী ২৫ জুন পদ্মা সেতুর শুভ উদ্বোধন ও জনসভা সফল করার লক্ষ্যে সোমবার (২০ জুন) সকালে মাদারীপুর জেলা আওয়ামী লীগ আয়োজিত বিশেষ বর্ধিত সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন তিনি।
বাহাউদ্দিন নাছিম বলেন, পদ্মা সেতু নিয়ে অনেক ষড়যন্ত্র হয়েছে। অনেক অপপ্রচার ও মিথ্যাচার হয়েছে। এখনো অপপ্রচার ও মিথ্যাচার হচ্ছে। একদল প্রচার করছে পদ্মা সেতু উদ্বোধন হবে না, বন্ধ হয়ে গেছে, উদ্বোধনের টাকা দিয়ে অ্যাম্বুলেন্স কিনতে হবে। পদ্মা সেতু উদ্বোধনে কোটি টাকার প্রয়োজন নেই। দেশের জনগণ এটিকে সফল করবে। আমাদের দক্ষিণাঞ্চলের মানুষ এর উদ্বোধনের জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছে। সেদিন বিভিন্ন জায়গা থেকে লাখ লাখ মানুষ আসবে। আমরা তাদের পাশে দাঁড়াবো, এটা আমাদের দায়িত্ব। মাদারীপুরের মানুষ স্বাগতিক জেলা হিসেবে সবার পাশে থাকবে।
তিনি বলেন, আমরা মুজিব আদর্শের সৈনিক, জাতির পিতার আদর্শ আমরা ধারণ করি। জাতির পিতা স্বপ্ন দেখেছেন কীভাবে পদ্মা সেতু করা যায়। তিনি যমুনা সেতুর জন্য তখন জাপানের প্রধানমন্ত্রী ও জাইকার প্রধানের সঙ্গে আলোচনা করেছিলেন। তারই ধারাবাহিকতায় জাতির জনকের সুযোগ্যকন্যা আজ পদ্মা সেতু করেছেন। বিএনপি-জামায়াত ক্ষমতায় আসার পর পদ্মা সেতু যাতে না হয় সব চেষ্টাই করেছে। সেই বিএনপি-জামায়াত আজ বলে খালেদা জিয়া নাকি পদ্মা সেতুর উদ্বোধন করেছে। এটা শতাব্দীর সেরা মিথ্যা কথা।
দেশ-বিদেশে নানা ষড়যন্ত্র করেছে ড. ইউনূস ও খালেদা জিয়া। তারা অপ্রচার ও মিথ্যাচার করেছে। তাদের কারণে বিশ্বব্যাংক সহযোগিতার কথা বলেও করেনি। তারা বলেছে, দুর্নীতি হয়েছে। অথচ সময়ের ব্যবধানে কানাডার আদালতে রায় হয়েছে পদ্মা সেতু নিয়ে কোনো ষড়যন্ত্র ও দুর্নীতি হয়নি। বিএনপি জামায়াতের কতিপয় তথাকথিত অর্থনীতিবিদ বাংলাদেশের ভালো চায় না। কারো কোনো সহযোগিতা ছাড়াই আমরা নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু করেছি।
আওয়ামী লীগের এ যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বলেন, বিএনপির নেত্রী খালেদা জিয়া বলেছিলেন, জোড়া তালি দিয়ে পদ্মা সেতু তৈরি করা হচ্ছে। সেখানে গাড়ি চলবে না।এ সেতু দিয়ে পার হওয়া যাবে না। এটা দেশের জন্য লজ্জাজনক। বিএনপি-জামায়াতের রাজনীতি হলো যা দেখতে না পারি তার চলন বাঁকা। এরাই এক সময় বলেছিল এ পদ্মা চুক্তি হলে পদ্মায় পানি আসবে না। আসলেও দূষিত পানি। এ পানিতে কোনো মাছ থাকবে না। মিথ্যাচার, অপপ্রচার, ষড়যন্ত্র হল এদের একমাত্র রাজনীতি। এরা দেশে অপরাজনীতি করে।
তিনি বলেন, জাতির পিতা মহান মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে দেশকে স্বাধীন করে সামনে যাওয়ার যে স্বপ্ন দেখেছিলেন সেই স্বপ্ন আজ পূরণ হতে চলেছে।দেশ আজ অর্থনৈতিকভাবে সমৃদ্ধ। বাঙালি আজ বিশ্বের বুকে মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়েছে। আর যাই হোক আমরা ভিক্ষুকের জাতি না। আমরা ৩০ লাখ শহীদের রক্ত আর দুই লাখ মা-বোনের ইজ্জতের বিনিময়ে এ দেশ পেয়েছি। আজ আমরা জাতির পিতার স্বপ্নের সোনার দেশ গড়ার জন্য কাজ করে যাচ্ছি। শেখ হাসিনা দেশের মানুষের সঙ্গে ছিলেন, আছেন এবং থাকবেন।
জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শাহাবুদ্দিন মোল্লা বলেন, জনসভা যাতে সফল না হয় সেজন্য নানা কুচক্রী মহল সক্রিয় আছে। তাদের বিরুদ্ধে সতর্ক থাকতে হবে এবং ঐক্যবদ্ধভাবে জনসভা সফল করতে হবে।
এসময় বর্ধিত সভায় জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক কাজল কৃষ্ণ দে, সংসদ সদস্য মোসা. তাহমিনা বেগম, মাদারীপুরের পাঁচটি উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক, পৌরসভার মেয়রসহ জেলা, উপজেলা ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।