শুক্রবার (১২ এপ্রিল) বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে মুন্সীগঞ্জের টঙ্গীবাড়ি উপজেলার দিঘীরপাড় এলাকার পদ্মার শাখা নদীতে গোসল করতে নেমেছিলেন ৩০/৩৫ জন। অল্প পানিতেই গোসল করছিলেন তারা। হঠাৎ করে এক শিশু পা পিছলে পড়ে গেলে তাকে উদ্ধার করতে যান ৭ জন। পা পিছলে যাওয়া শিশুকে উদ্ধার করে ৪ জন ফিরে এলেও নিখোঁজ হন বাবা-ছেলেসহ তিনজন। নিখোঁজের পর তিনজনের মরদেহ উদ্ধার করে ফায়ার সার্ভিস ও নৌ পুলিশের সদস্যরা।
নিহতরা হলেন– ঢাকায় রেলওয়ে কর্মকর্তা রিয়াদ আহমেদ রাজু, তার ছেলে রামিন আরিদ ও ভায়রা ব্যাংক কর্মকর্তা জুয়েল রানা।
জানা গেছে, নিহত রেলওয়ে কর্মকর্তা টঙ্গীবাড়ি উপজেলার দিঘীরপাড় গ্রামের হারুন রশিদ মোল্লার একমাত্র ছেলে। রিয়াদ আহমেদ রাজুদের দিঘীরপাড় গ্রামের বাড়ি প্রায় দুই যুগ আগে পদ্মা নদীতে বিলীন হয়ে যাওয়ার পর তারা ঢাকার মোহাম্মদপুরের সলিমুল্লাহ রোড এলাকার বসবাস করে আসছিলেন। এ বছর হজ করতে সৌদি আরব যাওয়ার কথা ছিল রাজুর। সে উপলক্ষ্যে চাচার সঙ্গে দেখা করতে টঙ্গীবাড়ি উপজেলার বেশনাল গ্রামের ইকবাল হোসেনের বাড়িতে এসেছিলেন তিনিসহ তার পরিবার। শুক্রবার বেলা ১১টার দিকে তিনিসহ তার পরিবার ও আত্মীয়স্বজন মিলে ৩০ থেকে ৩৫ জন চাচার বাড়িতে এসে পৌঁছান। পদ্মা নদীতে ঘোরা শেষে শুক্রবার সন্ধ্যার দিকে ঢাকা ফেরার কথা ছিল তাদের।
অন্য আত্মীয়দের সঙ্গে রেলওয়ে কর্মকর্তা রিয়াদ আহমেদ রাজুর স্ত্রী, তিন ছেলে ও তার ভায়রা ওয়ান ব্যাংক কর্মকর্তা জুয়েল রানা ও তার স্ত্রী দুই ছেলেসহ মোট ৩০ হতে ৩৫ জন বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে তার চাচার বাড়ি থেকে বের হন। পরে তারা দিঘীরপাড় এলাকার পদ্মা নদী ঘাট তেকে ট্রলার ভাড়া নিয়ে প্রথমে হাসাইল বাজার এলাকায় যান। পরে হাসাইল থেকে ফিরে উপজেলার ধানকোড়া এলাকার পদ্মা নদীর চরে নামেন। পদ্মার চরে নেমে তারা তার পাশের নদীতে তিন জন ছাড়া বাকি সবাই গোসল করতে নামেন। এসময় অল্প পানিতেই তারা গোসল করছিলেন। হঠাৎ করে এক শিশু পদ্মা নদীতে হোঁচট খেয়ে পড়ে গেলে তাকে উদ্ধার করতে যান সাত জন। এদের মধ্যে ওই শিশুকে উদ্ধার করে চার জন ফিরে এলেও নিখোঁজ হন ঢাকার মোহাম্মদপুরের সলিমুল্লাহ রোড এলাকার হারুনুর রশিদ মোল্লার ছেলে রিয়াদ আহমেদ রাজু (৪৫), তার ছেলে রামিন আরিদ (১৬) ও তার ভায়রা জুয়েল রানা (৪৫)। পরে শুক্রবার রাত সাড়ে ৮টা পর্যন্ত দুজনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। আর নিহত রামিন আরিদের মরদেহ উদ্ধার করা হয় আজ শনিবার সকাল সাড়ে ৯টায়। নিহত দুই ভায়রার মরদেহ শুক্রবার রাতেই ঢাকায় নিয়ে যাওয়া হয়। আর আরিদের মরদেহ ঢাকায় পৌঁছায় শনিবার দুপুরে।
পরে জানাজা শেষে তাদের শনিবার বিকেল ৪টার দিকে ঢাকার মিরপুর শহীদ বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে দাফন করা হয়েছে।
এ ব্যাপারে নিহতের নিকটাত্মীয় বিথী আক্তার বলেন, নিহত তিন জনকে শনিবার বিকেল ৪টার দিকে মিরপুর বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে দাফন করা হয়েছে। আমাদের পরিবারের সবাই সেখানে লাশ দাফন করতে গিয়েছিল।