পটুয়াখালীর গলাচিপায় বিয়েবাড়িতে তরুণীর সঙ্গে কথা বলায় দুই যুবকের মাথা ন্যাড়া করে আলকাতরা দেওয়ার ঘটনায় অভিযুক্ত ইউপি সদস্যসহ তিনজনকে আসামি করে মামলা দায়ের করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার (৯ জুন) পটুয়াখালী সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক মো. মামুনুর রহমানের কাছে নির্যাতনের শিকার মো. তুহিন (১৮) বাদী হয়ে মামলাটি করেন।
আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনকে (পিবিআই) তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেন।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, দণ্ডবিধির ১১৪/৩৭৯/৫০০/৫০৬/৩৩৫/৩২৭/৩৪২/৩৪ ধারায় গলাচিপার চরবিশ্বাস ইউনিয়নের ৮ নং ইউপি সদস্য আবু সায়েম গাজী, মো. হাদি হাওলাদার এবং মো. হজরত হাওলাদারকে আসামি করে মামলা করা হয়েছে। তারা সবাই চরবিশ্বাস ইউনিয়নের ৮ নং ওয়ার্ডের চর আগস্তি গ্রামের বাসিন্দা।
মামলার বাদী তুহিন বলেন, আমরা লোকলজ্জার ভয়ে এখন পালিয়ে থাকি। সমাজে মুখ দেখাতে পারছি না। আমাদের ভবিষ্যৎ কী? তাই ওদের বিচারের দাবিতে আদালতে মামলা করেছি।
প্রসঙ্গত, গত মঙ্গলবার (৭ জুন) গলাচিপা উপজেলার চরবিশ্বাস ইউনিয়নের চর বাংলা গ্রামের বাসিন্দা অহিদুল মৃধার চর আগস্তির নূরু সরদারের মেয়ে মুক্তার বিয়ের অনুষ্ঠান ছিল। চর মহিউদ্দিন নমো স্লুইগেট সংলগ্ন আবাসনে বিয়ের খাবার খাওয়ানো হয়। ওই বিয়েবাড়িতে যায় ভুক্তভোগী দুই যুবক মো. তুহিন ও কালু গাজী।
দুপুরের খাওয়ার পর পার্শ্ববর্তী গ্রামের মন্টু প্যাদার মেয়ে রুপার সঙ্গে কথা বলে তুহিন ও কালু। বিয়ে বাড়ির লোকজনের মধ্যে বিষয়টি জানাজানি হলে মেয়ের আপন ভাই মো. সাইদুল ইসলাম ও স্থানীয় জনসাধারণসহ ওই দুই যুবককে ধরে নিয়ে যায় ৮ নং ওয়ার্ডের স্থানীয় ইউপি সদস্য মো. সায়েম গাজীর অস্থায়ী কার্যালয় নমো স্লুইসগেট বাজারে।
পরে তাদের জিজ্ঞাসাবাদ শেষে জনসম্মুখে ইউপি সদস্য সায়েম গাজীর নির্দেশে মো. হযরত হাওলাদার ও হাদী হাওলাদার মিলে ওই দুই যুবকের মাথার চুল কামিয়ে আলকাতরা লাগিয়ে গ্রাম ছাড়া করে। লোকলজ্জার ভয়ে পালিয়ে ছিলেন দুই যুবক। পরে বনের মধ্যে ফাঁসির হাত থেকে বাঁচায় পরিবার।