পদ্মা নদীতে ট্রলারডুবিতে নিখোঁজ দুই শিক্ষকের সন্ধান মেলেনি তিন দিনেও। নিখোঁজ দুজন হলেন- সারদা সুন্দরী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক আজমল হোসেন এবং ফরিদপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক আলমগীর হোসেন। শনিবার দুপুরে ফরিদপুরের পুলিশ সুপার মো. আলিমুজ্জামান ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। এ সময় তিনি বলেন, খবর পেয়ে ওই দিন থেকেই উদ্ধার তৎপরতা শুরু করা হয়। কিন্তু চার দিনেও তাদের কোনো সন্ধান পাওয়া যায়নি।
পুলিশ সুপার মো. আলিমুজ্জামান জানান, নৌ পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের কর্মীদের সমন্বয়ে কয়েকটি টিম নদীতে উদ্ধার অভিযান পরিচালনা করছে। জেলা পুলিশ, নৌ পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের উদ্ধারকারী দল ছাড়াও নিখোঁজ দুই শিক্ষকের স্বজনরা আলাদা পাঁচটি ট্রলার নিয়ে পদ্মা নদীতে খুঁজে ফিরছেন তারা। ওই স্বজনদের একজন রফিকুজ্জামান লায়েক জানান, আমরা ওই উদ্ধারকারী দলের সঙ্গে ট্রলার নিয়ে খোঁজ করছি। জীবিত না পাই দাফনের জন্য হলেও মরদেহটি চাই।
নিখোঁজ শিক্ষক আলমগীর হোসেনের সহধর্মিনী জোবায়দা জেসমিন জেবা বলেন, পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের সঙ্গে সঙ্গে আত্মীয়-স্বজনও উদ্ধার অভিযানে অংশ নিয়েছে। সকলে মিলে চেষ্টা করলে নিশ্চই তার মরদেহটি খুঁজে পাওয়া যাবে। উদ্ধার অভিযান জোরদার করা উচিৎ।
নিখোঁজ শিক্ষক আজমল হোসেনের মেয়ে আজরিন হোসেন আফরিন বলেন, আমাদের বলার আর কি আছে? এতদিন হয়ে গেল বাবা ফিরে এলেন না। তিনি বেঁচে আছেন কিনা তাও জানি না। তিনি উদ্ধার কাজের পরিব্যাপ্তি বাড়ানোর অনুরোধ জানান।
ফায়ার সার্ভিসের উপসহকারী পরিচালক শিপলু আহমেদ জানান, খবর পেয়ে ওই দিন থেকেই উদ্ধার তৎপরতা শুরু করা হয়। এখন পর্যন্ত তৎপরতা অব্যাহত রয়েছে। নৌ পুলিশ, ফায়ার সার্ভিসের কর্মীদের সমন্বয়ে কয়েকটি দল নদীতে কার্যক্রম পরিচালনা করছে।
উল্লেখ্য, গত বুধবার বিকেলে ফরিদপুর সদর উপজেলার ১৫ শিক্ষকের একটি দল খলিল মণ্ডলের হাট এলাকা থেকে ট্রলারযোগে আনন্দ ভ্রমণে বের হয়। বিকেলের দিকে সিঅ্যান্ডবি ঘাট এলাকায় পৌঁছায়। সেখানে যাত্রা বিরতি শেষে সাড়ে ৫টার দিকে পুনরায় তাঁরা নৌকায় ওঠে। এ সময় ট্রলারের ইঞ্জিনে ত্রুটি দেখা দিলে স্রোতের তোড়ে ঘাট এলাকাতেই ডুবে যায় ট্রলারটি। এতে ১৫ শিক্ষক ও মাঝিসহ ১৬ জনের মধ্যে ১৪ জন সাঁতরে এবং স্থানীয়দের সহযোগিতায় তীরে উঠতে সক্ষম হন। কিন্তু ওই দুই শিক্ষককে আর খুঁজে পাওয়া যায়নি।