এলাকার চিহ্নিত সন্ত্রাসীরা শিশুটির বাবার ওপর ক্ষুব্ধ হয়ে প্রথমে শিশুটির দিকে ইট ছুঁড়ে মারে এবং শিশুটির বাবা প্রতিবাদ করলে শিশুটিকে টার্গেট করে গুলি করে। নোয়াখালীর বেগমগঞ্জের হাজীপুর ইউনিয়নে বাবার সাথে থাকা চার বছরের শিশু খুনের ঘটনার লোমহর্ষক বিবরণ দিচ্ছেন এলাকাবাসী।
`পেছন থেকে আবার এসে সন্ত্রাসীরা শিশুটির বুক ও মাথা লক্ষ্য করে গুলি করে। একই সাথে তারা শিশুর বাবাকেও গুলি করে। গুলিতে শিশুটির মাথা ঝাঁঝরা হয়ে যায়’। বিবিসিকে বলছিলেন স্থানীয় এক ব্যক্তি। নিরাপত্তার কারণে তিনি তার নাম প্রকাশ না করার অনুরোধ করেছেন।
গুলি করার সময় বাচ্চাটি বাবার কোলে ছিল। হাজীপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. শাহ আজিম বৃহস্পতিবার বেলা বারটার দিকে ওই শিশুটির বাড়িতেই ছিলেন।
সেখান থেকেই তিনি বলছেন বুধবার বিকেলে ঘটে যাওয়া এ ভয়াবহ ও বীভৎস ঘটনার জন্য দায়ী ব্যক্তিরা এলাকায় সন্ত্রাসী হিসেবে পরিচিত, কিন্তু কখনো তাদের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা নেয়া হয় না। তিনি বলেন শিশুটির বাবার সাথে সন্ত্রাসীদের কোন বিষয় ছিলো না। সন্ত্রাসীরা একজনের দোকানে গিয়ে ঝামেলা করছিলো।
সেই দোকানেই বাচ্চাটি বাবার পাশে দাঁড়ানো ছিলো। শিশুর বাবা সন্ত্রাসীদের আচরণের প্রতিবাদ করেছিলেন। এতেই ক্ষুব্ধ হয়ে বাচ্চাটিকে ইট মেরে আহত করা হয়।
‘এরপর তো বাচ্চাটাকে খুনই করে ফেলা হলো। এখানে সবাই জানে কারা করেছে। এদের অত্যাচারে সবাই অতিষ্ঠ। কিন্তু কারও কোন মাথাব্যথা নেই,’ বলছিলেন আজিম।
যদিও বেগমগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মীর জাহেদুল হক রনি বলছেন তারা তিন জনকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করছেন এবং এ ঘটনায় মামলার প্রক্রিয়া চলছে। স্থানীয় আরেকজন জানিয়েছেন শিশুর বাবা যে বাড়িতে বসবাস করছিলেন সেখানকার এক ব্যক্তির সাথে জমির মাটি কাটা নিয়ে আরেক ব্যক্তির বিরোধ চলছিলো।
সে বিরোধের জের ধরে আগেও হামলা করেছিলো একই সন্ত্রাসীরা। পরে এ নিয়ে সালিশও হয়। সে সালিশে শিশুটির বাবাও উপস্থিত ছিলেন।
ওদিকে শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে গুলিতে নিহত শিশুটির মৃতদেহের ময়না তদন্ত চলছিলো। চেয়ারম্যান শাহ আজিম জানিয়েছেন ময়না তদন্তের পর লাশ এনে দাফন করা হবে। গুলিবিদ্ধ হয়ে শিশুটির বাবাও হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।