নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার বসুরহাটে আওয়ামী লীগের দুই পক্ষের সংঘর্ষে সিএনজিচালিত অটোরিকশা চালক আলাউদ্দিন নিহতের ঘটনায় হত্যা মামলা করা হয়েছে। মামলায় বসুরহাট পৌরসভার মেয়র আবদুল কাদের মির্জা, তার ভাই শাহাদাত হোসেন ও ছেলে মির্জা মাসরুর কাদের তাসিকসহ ১৬৪ জনের নাম উল্লেখ ও অজ্ঞাতনামা আরও ৩০-৪০ জনকে আসামি করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (১১ মার্চ) রাত ৯টার দিকে নিহত আলাউদ্দিনের ছোট ভাই এমদাদ হোসেন বাদী হয়ে কোম্পানীগঞ্জ থানায় এ হত্যা মামলা দায়ের করেন। কোম্পানীগঞ্জ থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মীর জাহেদুল হক রনি বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে, পূর্বপরিকল্পনা অনুযায়ী আসামি কাদের মির্জার নেতৃত্বে অন্য আসামিরা পিস্তল, শর্টগান, পাইপগান, রামদা, লোহার রড নিয়ে অর্ধশতাধিক ককটেলের বিস্ফোরণ ঘটিয়ে জনমনে আতঙ্ক সৃষ্টি করেন এবং প্রতিবাদ সভায় হামলা চালান। এ সময় মামলার চার নম্বর আসামি নাজিম উদ্দিন বাদল তার হাতে থাকা আগ্নেয়াস্ত্র দিয়ে হত্যার উদ্দেশ্যে আলাউদ্দিনের পেটে গুলি করে মারাত্মক জখম করেন। এরপর পাঁচ নম্বর আসামি নাজিম উদ্দিন মিকনসহ তাদের সমর্থকরা আলাউদ্দিনকে এলোপাতাড়ি গুলি করেন। পরে ছয় নম্বর আসামি মাঈন উদ্দিন কাঞ্চন তার হাতে থাকা রড আলাউদ্দিনের পেটে ঢুকিয়ে দেন। পরে হামলাকারীরা চলে গেলে আলাউদ্দিনকে উদ্ধার করে প্রথমে কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ও পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে রাত ১১টার দিকে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
এর আগে বিকেল ৪টার দিকে নোয়াখালী প্রেস ক্লাবের সামনে থেকে কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের স্থগিত কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক মিজানুর রহমান বাদলকে গ্রেফতার করে পুলিশ। প্রথমে গ্রেফতারের বিষয়টি এড়িয়ে গেলেও রাতে মিজানুর রহমান বাদলকে গ্রেফতারের বিষয়টি নিশ্চিত করেন নোয়াখালীর পুলিশ সুপার মো. আলমগীর হোসেন।
উল্লেখ্য, গত ৯ মার্চ রাত ৯টার দিকে কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার বসুরহাট পৌরসভা চত্বরে কাদের মির্জা ও বাদল সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষ ও গোলাগুলির ঘটনা ঘটে। এই ঘটনায় গুলিবিদ্ধ হয়ে সিএনজিচালিত অটোরিকশা চালক আলাউদ্দিন মারা যান। এরপর থেকে কোম্পানীগঞ্জে থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে।