নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জ উপজেলায় আবারও আওয়ামী লীগের দু’পক্ষের সংঘর্ষে একজন নিহত হয়েছে। প্রতিপক্ষের গুলিতে নিহত যুবকের নাম আলাউদ্দিন (৩০)। স্থানীয় সূত্র দাবি করেছে, আলাউদ্দিন ছাত্রলীগ কর্মী। তিনি বসুরহাট পৌরসভার মেয়র আব্দুল কাদের মির্জা গ্রুপ সমর্থিত কর্মী। সোমবার খিজির হায়াতের ওপর হামলার প্রতিবাদে গতকাল মঙ্গলবার বিকালে বসুরহাট রূপালী চত্বরে প্রতিবাদ সভা চলাকালে কে বা কারা ধরধর বলে উত্তেজনা সৃষ্টি করে। এসময় একপক্ষের লোকজন পরপর বেশ কয়েকটি বোমার বিস্ফোরণ ঘটায়। চারদিক এলোপাথাড়ি গুলিবর্ষণের ঘটনাও ঘটে।
পরে প্রতিবাদ সমাবেশ থেকে স্থানীয় নেতা-কর্মীরা ‘ওবায়দুল কাদের’ ও ‘জয়বাংলা’ স্লোগান দিয়ে বঙ্গবন্ধু চত্বরে গিয়ে বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবর্ষ উদযাপন পরিষদ মেলায় হামলা ও লুটপাটের ঘটনা ঘটায়। হামলায় থানার ওসিসহ ১০ জন আহত হয়েছেন। এসময় সংঘর্ষকারীরা পৌর এলাকার বিভিন্ন স্থানে বোমার বিস্ফোরণ, গাড়ি ও দোকানে ভাঙচুর চালায়। স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা জানান, বসুরহাট উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি খিজির হায়াত খানের ওপর মেয়র আবদুল কাদের মির্জার লোকজনের হামলা ও মারধরের ঘটনার প্রতিবাদে বিকালে রূপালী চত্বরে প্রতিবাদ সভার আয়োজন করে আওয়ামী লীগের একাংশ (মিজানুর রহমান বাদল গ্রুপ)। সন্ধ্যা ৬টার দিকে থানার পশ্চিম পাশের সড়ক দিয়ে সভায় হামলার চেষ্টা চালায় মির্জার সমর্থকরা।
এসময় উভয় পক্ষের সমর্থকরা মুখোমুখি হলে দফায় দফায় ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া এবং সংঘর্ষের সূত্রপাত হয়। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সন্ধ্যা থেকে দফায় দফায় কোম্পানীগঞ্জ থানার পশ্চিম পাশে রূপালী চত্বরে সংঘর্ষ হয়। রাত সাড়ে ৯ টার দিকে থেমে থেমে গুলি বর্ষণ ও বোমার বিস্ফোরণ ঘটে। ওই সময় গুলিবিদ্ধ আলাউদ্দিনকে চিকিৎসার জন্য নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
এদিকে হামলার সময় বিক্ষুব্ধরা বসুরহাট রূপালী চত্বরের পাশে আলেয়া ম্যানশনের ৩য় তলায় বসুরহাট পৌরসভার মেয়র আবদুল কাদের মির্জার ব্যক্তিগত অফিসে হামলা চালিয়ে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সড়ক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের ছবি, অফিসে থাকা আসবাবপত্র ভাঙচুর করে এবং মূল্যবান কাগজপত্র নিয়ে যায়।
কোম্পানীগঞ্জ থানার ওসি জাহেদুল হক রনি বলেন, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ ১০ রাউন্ড গুলি ছোড়ে। হামলার পরে পরিস্থিতি সামলাতে ছয় পুলিশসহ ১০ জন আহত হয়েছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে এলাকায় পুলিশের পাশাপাশি র্যাব টহল দিচ্ছে। প্রসঙ্গত, গত ১৯ ফেব্রুয়ারি উপজেলার চাপরাশির হাট বাজারে আওয়ামী লীগের দুই গ্রুপের সংঘর্ষে সাংবাদিক বুরহান উদ্দিন মুজাক্কির নিহত হন।