ঘরের মাঠে প্রায় অর্ধলক্ষ দর্শক যেন এই মুহূর্তের সাক্ষী হতেই এসেছিলেন। ব্রাজিলের মত ফুটবল ঐতিহ্যের দেশে নতুন এক রেকর্ড হবে। সর্বকালের সেরার তকমা পাওয়া পেলেকে ছাড়িয়ে যাবেন এই প্রজন্মের একজন তারকা। নেইমার জুনিয়রের এমন কীর্তির অপেক্ষায় অবশ্য ছিল পুরো ফুটবল দুনিয়া।
নেইমার অবশ্য নিরাশ করেননি। ঘড়িতে ম্যাচের বয়স যখন ঠিক এক ঘন্টা, তখনই দারুণ সংঘবদ্ধ এক আক্রমণ থেকে স্কোরশিটে নিজের নাম তোলেন এই সুপারস্টার। বলিভিয়ার বিপক্ষে এই গোলের মাধ্যমে কিংবদন্তি পেলেকে টপকে ব্রাজিলের ইতিহাসে সর্বোচ্চ গোলদাতা হলেন নেইমার। পরে আরও একবার বল জালে জড়িয়েছেন। তাতে ব্রাজিল পেয়েছে ৫-১ গোলের বিশাল এক জয়।
ঘরের মাঠে ম্যাচের ১৭ মিনিটেই গোল করার সুবর্ণ সুযোগ এসেছিল নেইমারের সামনে। পেনাল্টি নিতে বরাবরই দক্ষ তিনি। কিন্তু কি বুঝে যেন আজই নিলেন দুর্বল এক শট। তাতে গোল আর রেকর্ড দুটো থেকেই বঞ্চিত হলেন এই সুপারস্টার।
ব্রাজিলকে অবশ্য বেশিক্ষণ অপেক্ষা করতে হয়নি। ২৪ মিনিটেই দেখা মিললো প্রথম গোলের। জটলার ভেতর দূরহ কোণ থেকে পা ছুঁইয়ে বল জালে জড়ান রদ্রিগো। এরপর গোল না এলেও দাপট দেখিয়েছে ব্রাজিল। প্রথমার্ধের অন্তিম সময়ে ডিবক্সের বাইরে থেকে চার ডিফেন্ডারকে বোকা বানিয়ে একাই গোলমুখে এগিয়ে গিয়েছিলেন নেইমার। শটও নিয়েছিলেন ঠিকঠাক। তবে সেটা আটকে যায় বলিভিয়ার গোলরক্ষকের হাতে।
মাঝে ব্রাজিল অবশ্য উপহার দিয়েছে আরও দুই গোল। ৪৭ মিনিটে নেইমারের অ্যাসিস্টেই গোল করেন রাফিনহা। আর নিজের করা রদ্রিগো পূরণ করেছেন ৫৩ মিনিটে। পুচকে বলিভিয়ার সঙ্গে দারুণ ফুটবল খেলেই বড় জয়ের পথে ছিল পাঁচবারের বিশ্বচ্যাম্পিয়নরা।
তবে আগ্রহের কেন্দ্রে যেন ছিলেন নেইমার। তবে ৬১ মিনিটে আর সুযোগ হাতছাড়া হলো না। ডিবক্সের ভেতর অনেকটা জটলার মধ্যেই রদ্রিগোর পা ঘুরে বল আসে তার সামনে। ফার্স্ট টাইম শটে গোল করে রেকর্ডবুকে নিজের নাম লেখালেন এই ব্রাজিলিয়ান তারকা। বামপ্রান্ত থেকে আক্রমণের সূত্র ধরে বল আসে বলিভিয়া ডিবক্সে। রাফিনহার ব্যাকপাস থেকে রদ্রিগোই শট নিতে চেয়েছেন, তবে শেষ মুহূর্তে বল ঠেলে দেন নেইমারের কাছে। দারুণ শটে দলের চতুর্থ এবং নিজের রেকর্ডগড়া গোল করেন ব্রাজিলিয়ান ফুটবলের এই পোস্টারবয়।
ম্যাচের অন্তিম সময়ে রাফিনহার পাস থেকে আরও একবার গোলের খাতায় নাম লেখান নেইমার। তাতেই নিশ্চিত হয় ব্রাজিলের ৫-১ গোলের বিশাল জয়।