রাজধানীর পল্টনে বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদ এলাকায় মিছিল করেছে নিষিদ্ধঘোষিত সংগঠন হিযবুত তাহরীর। শুক্রবার (০৭ মার্চ) দুপুরে জুমার নামাজের পর ‘মার্চ ফর খিলাফত’ কর্মসূচির অংশ হিসেবে মিছিলে অংশ নেন সংগঠনের সদস্যরা। এক পর্যায়ে তাদের বাধা দেয় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। লাঠিচার্জের পাশাপাশি সাউন্ড গ্রেনেড ও টিয়ার শেল ছুড়ে মিছিলে অংশগ্রহণকারীদের ছত্রভঙ্গ করে দেয় পুলিশ। এতে বায়তুল মোকাররম এলাকায় উত্তপ্ত পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়।
হিযবুত তাহরীরের মিছিলটি পল্টন থেকে বিজয়নগরের দিকে এলে পুলিশের বাধার মুখে পড়ে। তবে এর আগে কড়া নিরাপত্তার মধ্যেও কিছুক্ষণ মিছিল করে নিষিদ্ধ এই সংগঠন। পরে পুলিশ টিয়ার গ্যাস ও সাউন্ড গ্রেনেড ছুড়লে ছত্রভঙ্গ হরে যান সংগঠনের সদস্যরা।
এরপর আবার একত্রিত হয়ে মিছিল শুরু করার চেষ্টা চালান তারা। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বাধা উপেক্ষা করে সংগঠনের সদস্যরা বারবার মিছিলের চেষ্টা চালালে পুলিশের সঙ্গে তাদের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া হয়। এ সময় সংগঠনটির প্রায় ১০-১৫ জন সদস্যকে আটক করা হয়। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, মিছিলে অংশ নেওয়া ব্যক্তিরা খিলাফত প্রতিষ্ঠার দাবিতে স্লোগান দিতে থাকেন। তবে পুলিশ দ্রুত তাদের ছত্রভঙ্গ করতে সক্রিয় হলে উত্তপ্ত পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। পুলিশ ও সাংবাদিকসহ বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন।
ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) রমনা বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি) মাসুদ আলম বলেন, পরিস্থিতি এখন মোটামুটি শান্ত রয়েছে। আমরা তাদের ছত্রভঙ্গ করে দিয়েছি। কিন্তু তারা এখনো ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে। তারা আবারো একত্রিত হতে পারে। তাই আমরা সতর্ক অবস্থানে রয়েছি।
এর আগে, সকাল থেকেই নিষিদ্ধঘোষিত সংগঠন হিযবুত তাহরীরের দেওয়া ‘মার্চ ফর খিলাফত’ কর্মসূচি ঘিরে রাজধানীর বায়তুল মোকাররম এলাকায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা সতর্ক অবস্থান নেন। আগের দিন গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে ডিএমপির মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশনস বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি) মুহাম্মদ তালেবুর রহমান জানান, হিযবুত তাহরীর বাংলাদেশের আইন অনুযায়ী একটি নিষিদ্ধ ঘোষিত সংগঠন।
জননিরাপত্তার প্রতি হুমকি বিবেচনায় ২০০৯ সালের ২২ অক্টোবর বাংলাদেশ সরকার হিযবুত তাহরীরকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করে। সন্ত্রাসবিরোধী আইন-২০০৯ অনুযায়ী, নিষিদ্ধঘোষিত যেকোনো সংগঠনের সভা, সমাবেশ, মিছিল, পোস্টার-লিফলেট বিতরণ ও অন্যান্য উপায়ে প্রচারণাসহ সব কার্যক্রম শাস্তিযোগ্য অপরাধ।
তিনি আরও জানান, হিযবুত তাহরীরসহ নিষিদ্ধ ঘোষিত কোন সংগঠন সভা, সমাবেশ ও যেকোনো উপায়ে প্রচারণামূলক কার্যক্রম পরিচালনা করলে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ কর্তৃক প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এদিকে বৃহস্পতিবার রাত ১২টার দিকে রাজধানীর উত্তরা পশ্চিম থানা এলাকা থেকে হিযবুত তাহরীরের তিন সক্রিয় সদস্যকে গ্রেপ্তার করে ডিএমপির সিটিটিসি ইউনিট।