রংপুরে নির্মিত হবে হাইটেক পার্ক। অর্থনীতিতে যোগ হবে নতুন মাত্রা। সরকারের এই প্রকল্প ঘিরে তথ্যপ্রযুক্তিনির্ভর কর্মসংস্থানের আশায় বুক বেঁধে আছে হাজার হাজার তরুণ-তরুণী। কথা ছিল ২০১৮ সালে রংপুরে হাইটেক পার্ক নির্মাণ শুরু হবে। কিন্তু সাড়ে চার বছর পার হলেও এখনো তা হয়নি। নির্মাণকাজ শুরুর আগেই ২০২০ সালের জুনে শেষ হয়েছে প্রকল্পের মেয়াদ। বহুল প্রত্যাশিত হাইটেক পার্ক নির্মাণ শুরু না হওয়ায় হতাশ রংপুরবাসী।
জানা গেছে, ২০১৭ সালের ২৫ এপ্রিল সারা দেশের জেলা পর্যায়ে ১২টি হাইটেক পার্ক প্রকল্পের জন্য ১ হাজার ৮০০ কোটি টাকা প্রাক্কলিত ব্যয় অনুমোদন দেয় জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক)। এর মধ্যে রংপুর হাইটেক পার্কের জন্য সম্ভাব্য ব্যয় ১৫৪ দশমিক ৫৪ কোটি টাকা ধরা হয়। বাংলাদেশ হাইটেক পার্ক কর্তৃপক্ষ এবং তথ্য ও প্রযুক্তি বিভাগ এই প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে। দেড় শ কোটি টাকার বেশি ব্যয়ে রংপুরে হাইটেক পার্ক স্থাপনের জন্য নগরীর খলিশাকুড়িতে প্রায় ৯ একর খাসজমি বন্দোবস্ত করে দেয় রংপুর জেলা প্রশাসন। প্রকল্প এলাকা পরিদর্শন, মাপজোখ ও মাটি পরীক্ষার পর আর কোনো দৃশ্যমান অগ্রগতি ঘটেনি। অ্যাপ্রোচ সড়কের জমি অধিগ্রহণে সৃষ্ট জটিলতার কারণে এর কার্যক্রম এখন মুখ থুবড়ে পড়েছে। তবে জেলা প্রশাসকের দাবি হাইটেক পার্ক নির্মাণে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও প্রকল্প কর্তৃপক্ষ তৎপর রয়েছে।
প্রকল্পটি বাস্তবায়ন হলে সেখানে মাথা উঁচু করে দাঁড়াবে বড় বড় ভবন। নকশানুযায়ী তিনটি ভবনের মধ্যে একটি হবে স্টিল স্ট্রাকচারে তৈরি সাততলা ভবন। এছাড়া ক্যান্টিন ও অ্যাস্ফিথিয়েটার ভবন (স্টিল স্ট্রাকচার) এবং ডরমিটরি ভবন (আরসিসি) থাকবে। হাইটেক পার্ক বাস্তবায়নের মধ্য দিয়ে রংপুরে কর্মসংস্থান হবে ৫ হাজার তরুণ-তরুণীর। রংপুরের অর্থনীতিতে যোগ হবে নতুন মাত্রা। কিন্তু রংপুরবাসীর বহু কাঙ্ক্ষিত সেই হাইটেক পার্ক নির্মাণ কবে শুরু হবে? রংপুরবাসীর এখন এটাই প্রশ্ন।
বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগী অধ্যাপক উমর ফারুক বলেন, প্রতি বছর লাখ লাখ তরুণ-তরুণী পড়ালেখা শেষ করছে। তাদের বেশির ভাগই শিক্ষিত বেকার হয়ে থাকছে। রংপুরে ভারী শিল্পকারখানা নেই। সেক্ষেত্রে আইটিনির্ভর হাইটেক পার্কটি গড়ে তোলা জরুরি। এতে কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হবে। হাইটেক পার্ক প্রযুক্তিভিত্তিক শিল্পায়ন তরুণদের কর্মসংস্থান এবং হার্ডওয়্যার ও সফটওয়্যার শিল্প বিকাশের সম্ভাবনার দুয়ার খুলে দেবে বলে মনে করেন বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রকৌশল ও ইঞ্জিনিয়ারিং অনুষদের ডিন ড. আবু কালাম মো. ফরিদ উল ইসলাম। রংপুর জেলা প্রশাসক আসিব আহসান বলেন, বিশিষ্ট পরমাণু বিজ্ঞানী ড. এম এ ওয়াজেদ মিয়ার নামে এই পার্কের নামকরণের প্রস্তাবনাও মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। মন্ত্রণালয় চাইছে হাইটেক পার্কটি দ্রুত নির্মাণ করতে।