সোমবার (৮ জানুয়ারি) বেলা সাড়ে ১১টায় জাতীয় প্রেস ক্লাবের ভিআইপি লাউঞ্জে এমন প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে দেশগুলোর নির্বাচন পর্যবেক্ষক দল।
এ সময় যুক্তরাজ্য, জার্মানি, অস্ট্রেলিয়া, আয়ারল্যান্ড, নরওয়ে ও জাপানের পর্যবেক্ষকরা উপস্থিত ছিলেন।
পর্যবেক্ষক দল জানায়, আমরা বাংলাদেশের দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন পর্যবেক্ষণ করেছি। গতকাল আমরা তিনটি গ্রুপে বিভক্ত হয়ে ঢাকা ও আশেপাশের এলাকায় মোট ২০টি ভোটকেন্দ্র পর্যবেক্ষণ করেছি। সকাল ৮টা থেকে ভোটগ্রহণ শুরু হয়ে বিকেল ৪টায় শেষ হয়েছে। বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতোই বাংলাদেশের ভোট হয়েছে। নির্বাচন প্রক্রিয়া আন্তর্জাতিক মানের এবং স্বচ্ছতার সঙ্গে অনুষ্ঠিত হয়েছে। নির্বাচন কমিশন কোনো রাজনৈতিক দলের পক্ষপাতিত্ব করেনি। এ সময় নির্বাচনে কে বা কারা অংশ নেয়নি তা তাদের দেখার বিষয় নয় এবং ভোটার উপস্থিতি গুরুত্বপূর্ণ নয় বলেও জানিয়েছেন তারা।
সংবাদ সম্মেলনে আলেকজান্ডার বার্টন গ্রে বলেন, বিশ্বের বিভিন্ন দেশের মতো যুক্তরাষ্ট্রের জনগণ বাংলাদেশের নির্বাচনে খুবই আগ্রহী। তারা বাংলাদেশের উন্নয়ন সহযোগী। সে কারণেই বাংলাদেশে সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন প্রত্যাশা করে সবাই। কিছু রাজনৈতিক দল নির্বাচন থেকে বিরত ছিল এবং একটি প্রধান রাজনৈতিক দলের অংশগ্রহণ না করায় নির্বাচনের উৎসবমুখর পরিবেশকে কিছুটা প্রভাব ফেলেছে। সব রাজনৈতিক দল নির্বাচনে অংশ নিলে পরিবেশ আরও সুন্দর ও আনন্দময় হতো।
তিনি আরও বলেন, আমরা যে কেন্দ্রগুলো পর্যবেক্ষণ করেছি সেখানে ভোটারদের সঙ্গে কথা বলে আমরা দেখতে পেয়েছি, তাদের ভোট দিতে কোনো বাধার সম্মুখীন হতে হয়নি। নির্বাচনে অংশগ্রহণকারী প্রার্থী বা দল দ্বারা ভোটারদের কোনো ভয়ভীতি দেখা যায়নি। এটা গণতন্ত্র ও ভোটাধিকারের জন্য ভালো ইঙ্গিত দেয় বলে মনে করছি।
‘আমরা কিছু বিচ্ছিন্ন ঘটনার কথা শুনেছি। সরকারি প্রার্থী, স্বতন্ত্র ও অন্যান্য দলের সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষের, যা অপ্রত্যাশিত। কিন্তু নির্বাচনের সার্বিক পরিস্থিতি পর্যালোচনা করলে দেখা যায়, এসব ঘটনা খুবই নগণ্য’ যোগ করেন তিনি।
পর্যবেক্ষক টেরি এল এসলে বলেন, বাংলাদেশের নির্বাচন কমিশন নির্ধারিত নিয়মকানুন অনুযায়ী যেহেতু আমাদের নির্বাচন পর্যবেক্ষণ করতে হয়েছে। সেক্ষেত্রে নির্বাচন পর্যবেক্ষণে আমরা অনেক ক্ষেত্রে সীমাবদ্ধতার সম্মুখীন হয়েছি। ভোটকেন্দ্রগুলোতে ভোটারদের উপস্থিতি তুলনামূলকভাবে কম ছিল বলে মনে হয়েছে। তবে সর্বোপরি নির্বাচন সুষ্ঠু হয়েছে। যে নির্বাচন হয়েছে সেজন্য বাংলাদেশের জনগণকে অভিনন্দন জানাতে চাই। বাংলাদেশের সাধারণ মানুষের ভোট দেওয়ার আগ্রহ ও উৎসাহ রয়েছে যা আমরা খুবই উৎসাহব্যঞ্জক বলে মনে করি। নির্বাচনে নারী ভোটারদের উপস্থিতি সন্তোষজনক ছিল।
সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে অস্ট্রেলিয়ান পর্যবেক্ষক শোকেত মোসলেমানে বলেন, নির্বাচনে সব দল অংশগ্রহণ করেছে কিনা সেটা আমাদের দেখার বিষয় না। আমরা দেখেছি যে নির্বাচনটা হয়েছে সেখানে মানুষ নির্বিঘ্নে ভোট দিতে পেরেছে কিনা। আর নির্বাচনের গ্রহণযোগ্যতা দেওয়ার জন্য রাজনৈতিক দল ও দেশের মানুষ রয়েছে।
এর আগে, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের বিজয়ের জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে অভিনন্দন জানান চীনা রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন। স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার নির্বাচনী প্রতিশ্রুতিতে পাশে থাকার আশা ব্যক্ত করেছেন তিনি।
এছাড়াও বাংলাদেশে নিযুক্ত ভারত, রাশিয়া, চীন, ভূটান, ফিলিপাইন, সিঙ্গাপুর, ও শ্রীলঙ্কার রাষ্ট্রদূতগণ গণভবনে আওয়ামী লীগ সভানেত্রী ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন এবং অভিনন্দন জানান।