তফসিল পেছানো হতে পারে এমন গুঞ্জন থাকলেও শেষ পর্যন্ত নির্ধারিত সময়েই শেষ হয়েছে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রার্থীদের মনোনয়ন জমা দেওয়া। তফসিল পেছালে বিএনপি নির্বাচনে আসতে পারে এমন আলোচনাও ছিল রাজনৈতিক অঙ্গনে। শেষ পর্যন্ত নির্বাচনী ট্রেনের বাইরেই থাকল দলটি।
মনোনয়নপত্র জমার শেষ দিন ছিল গতকাল বৃহস্পতিবার (৩০ নভেম্বর)। এদিন রাতে নির্বাচন কমিশনের পরিচালক (জনসংযোগ) মো. শরিফুল আলম জানান, ৩০টি নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলের প্রার্থীরা ভোটে লড়ছেন। ৩০০টি সংসদীয় আসনের জন্য এসব দলের মোট দুই হাজার ৭৪১ জন প্রার্থী মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন।
শরীফ নূরুল আম্বিয়া ও নাজমুল হক প্রধানের নেতৃত্বাধীন বাংলাদেশের জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-বাংলাদেশ জাসদের সাধারণ সম্পাদক নাজমুল হক প্রধান বলেন, নির্বাচনের পরিবেশ না থাকায় এ নির্বাচনে অংশ নেয়া থেকে তারা বিরত আছেন।
জাসদ (ইনু) ভেঙে এ দলটি গঠিত হয়েছিল। জাসদ (ইনু) অবশ্য আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন ১৪ দলীয় জোটের আছে এবং এবারের নির্বাচনে অংশও নিচ্ছে। দলীয় নেতা হাসানুল হক ইনুর কুষ্টিয়া-২ আসনে আওয়ামী লীগ কোনো দলীয় প্রার্থী দেয়নি।
ইনসানিয়াত বিপ্লব বাংলাদেশের সাধারণ সম্পাদক মো. রেহান আফজাল বলেন, যে নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে আলোচনার সময় তারা নির্বাচনে অংশ নেওয়ার জন্য বর্তমান সংসদের বিলুপ্তি ও সেনাবাহিনী মোতায়েনের শর্ত দিয়েছিলেন। তারা আমাদের দাবি মানেনি। সে কারণে আমরা মনে করি সুষ্ঠু নির্বাচনের পরিবেশই নেই। এজন্যই আমরা নির্বাচনে যাইনি।
ববি হাজ্জাজের নেতৃত্বাধীন জাতীয়তাবাদী গণতান্ত্রিক আন্দোলন বা এনডিএমও এই একই কারণে অর্থাৎ গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের পরিবেশ না থাকায় নির্বাচনে অংশ নিচ্ছে না বলে জানিয়েছেন দলটির মিডিয়া বিভাগের দায়িত্বে থাকা আব্দুল্লাহ আল মামুন।
আর বাংলাদেশের বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক জানান, তারা নির্বাচনে অংশ নিয়ে একতরফা নির্বাচনের অংশ হতে চাননি। তিনি বলেন, আমরা এ ধরণের নির্বাচনে অংশ নিতে চাইনা যেখানে সবার অংশগ্রহণের সুযোগ নেই।
যেসব দল নির্বাচনে আসেনি তারা দেশে আওয়ামী লীগ বিরোধী -ভোটারদের প্রতিনিধিত্ব করে বলে মনে করেন নির্বাচন বিশ্লেষক ও পর্যবেক্ষণ সংস্থা জানিপপের চেয়ারম্যান প্রফেসর নাজমুল আহসান কলিমউল্লাহ।
তিনি বলেন, দেশের ভোটাররা দুই ভাগে বিভক্ত। এক দিকে আওয়ামী লীগ আর অন্য দিকে আওয়ামী লীগ বিরোধীরা। এই বিরোধী অংশটিরই প্রতিনিধিত্ব করে বিএনপি, জামায়াতসহ তাদের সমমনা নির্বাচন বর্জনকারী দলগুলো। তারা নির্বাচনে না আসায় বিরোধী সমর্থকরা কতটা নির্বাচনে অংশ নিবেন তা নিয়ে প্রশ্ন আছে। সূত্র: বিবিসি বাংলা।