নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে মুড়াপাড়া ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনে সদস্য প্রার্থীদের মধ্যে বিরোধকে কেন্দ্র করে আব্দুর রশিদ নামে এক যুবক নিহতের ঘটনায় মামলা হয়েছে। নিহতের বড়ভাই হানিফ মিয়া বাদী হয়ে রূপগঞ্জ উপজেলার ভাইস চেয়ারম্যান শাহরিয়ার পান্না ওরফে ভিপি সোহেলকে প্রধান আসামি, ইউপি প্রার্থী সিরাজুল ইসলামসহ ৩২ জনের নাম উল্লেখ করে এ হত্যা মামলা দায়ের করা হয়। মামলায় এখন পর্যন্ত পাঁচ আসামিকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন রূপগঞ্জ থানার ওসি এএফএম সায়েদ।
তিনি জানান, ঘটনার পর পরই মামলার এজাহারভুক্ত পাঁচ আসামিকে গ্রেফতার করা হয়েছে। প্রধান আসামিসহ অন্যদের গ্রেফতারে পুলিশ সর্বোচ্চ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। এদিকে রবিবার সকালে অভিযুক্ত উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান শাহরিয়ার পান্না ওরফে ভিপি সোহেলের দুই সমর্থকের বাড়িতে হামলা ও ভাঙচুরের অভিযোগ পাওয়া গেছে।
এদিকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ময়নাতদন্ত শেষে রবিবার বিকালে নিহত রশিদের লাশ বাড়ি নিয়ে আসা হলে নিহতের স্বজনেরা কান্নায় ভেঙে পড়েন। সন্তান হারানোর শোকে স্তব্ধ হয়েছিলেন তার মা হাজেরা বেগম। এ সময় নিহতের ভায়রা মো. রাসেল মিয়া এই হত্যাকাণ্ডের ন্যায়বিচার পাওয়া নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, ‘ঘটনার সঙ্গে জড়িতরা ক্ষমতাধর। নানান পক্ষ তাদেরকে বাঁচানোর চেষ্টা করছে।’
ঘটনার পর থেকেই অভিযুক্ত শাহরিয়ার পান্না ও তার দেহরক্ষী জসিম উদ্দিনকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না বলে জানান নারায়ণগঞ্জের সহকারী পুলিশ সুপার (গ-সার্কেল) আবির হোসেন। তিনি বলেন, ‘আমাদের সর্বোচ্চ শক্তি দিয়ে অভিযুক্তদের আটকের চেষ্টা চালাচ্ছি।’ শাহরিয়ার পান্নার সমর্থকদের বাড়িঘর ভাঙচুরের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘ঘটনার পর থেকেই এলাকায় পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। আমরা লোকমুখে একটি অভিযোগ শুনেছি, তবে কারো কাছ থেকে নির্দিষ্ট কোনও অভিযোগ পাইনি।’
এদিকে শনিবার রাতের হত্যাকাণ্ডের পর থেকেই মাছিমপুর ও মিরকুটিরছেঁও এলাকায় থমথমে ভাব বিরাজ করছে। বিশেষ প্রয়োজন ছাড়া কেউ ঘর থেকে বের হচ্ছে না। রবিবার কোনও ইউপি সদস্যপ্রার্থী এসব এলাকায় প্রচারণা চালাননি। গত শনিবার রাত আটটায় রূপগঞ্জের মুড়াপাড়া ইউনিয়নের ৬ নম্বর ওয়ার্ড সদস্য প্রার্থীদের মধ্যে বিরোধের জেরে উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যানের সঙ্গে বাগবিতণ্ডার এক পর্যায়ে আব্দুর রশিদ (৩৩) নামে এক যুবককে গুলি করে হত্যা করা হয়। নিহত আব্দুর রশিদ মাছিমপুর এলাকার মৃত জলিল মোল্লার ছেলে এবং মুড়াপাড়া ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ড সদস্য প্রার্থী তাওলাদ হোসেনের আত্মীয়। ঘটনাস্থলে উপস্থিত একটি সূত্র বলছে বাগবিতণ্ডার এক পর্যায়ে শাহরিয়ার পান্নার দেহরক্ষী জসিম উদ্দিন ওই যুবককে গুলি করে হত্যা করেছে। তবে নিহতের পরিবারের দাবি শাহরিয়ার পান্না নিজেই রশিদের মাথায় অস্ত্র ঠেকিয়ে গুলি করেছেন।