সোমবার (১০ আগস্ট) রাজধানীর আগারগাঁওয়ে জাতীয় আর্কাইভ মিলনায়তনে আয়োজিত ‘বিআইজিডি পালস সার্ভে’র গবেষণা পেপার উন্মোচন ও প্যানেল আলোচনা সভায় এসব তথ্য তুলে ধরেন আলোচকরা। আলোচনার শুরুতে জুলাই আন্দোলনের মোড়ক উন্মোচন করা হয়।
জুলাই মাসে দেশের ৫ হাজার ৪৮৯ জনের ওপর চালানো জরিপে দেখা যায়, ৫১ শতাংশ মানুষ ‘ভালোভাবে সংস্কার সম্পন্ন করে নির্বাচন’ চান। ১৭ শতাংশ ‘কিছু জরুরি সংস্কার’-এর পর নির্বাচন করতে রাজি। আর ১৪ শতাংশ ‘সংস্কার ছাড়াই দ্রুত নির্বাচন’-এর পক্ষে। ১৩ শতাংশের কোনো ধারণা নেই এবং ৮ শতাংশ মন্তব্য করতে অনিচ্ছুক।
জরিপ থেকে জানা যায়, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নয়ন, রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা, নির্বাচনী ব্যবস্থার সংস্কার, মূল্য নিয়ন্ত্রণ, বেকারত্ব হ্রাস, দুর্নীতি দমন ও শিক্ষা খাতের উন্নয়ন—জনগণের প্রধান চাওয়া।
প্যানেল আলোচনায় ড. মির্জা এম হাসান বলেন, অর্থনীতি ও রাজনীতি মানুষ সবচেয়ে বেশি ভাবেন, তবে বর্তমান গবেষণায় দেখা গেছে, নিত্যপণ্যের দাম বাড়লে তারা অন্য বিষয়ে মনোযোগ দিতে পারে না। দাম যদি নিয়ন্ত্রণে থাকে, তখন আইনশৃঙ্খলা বা রাজনৈতিক স্থিতিশীলতায় তারা উৎসাহী হয়।
ড. আসিফ শাহান বলেন, অর্থনীতি ভালো থাকলেও নিরাপত্তা ও আইনশৃঙ্খলার অবনতির কারণে মানুষের মধ্যে দেশের প্রতি অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে। নারীরা ভোটে পিছিয়ে থাকায় তাদের প্রতি রাজনৈতিক দলগুলো তেমন মনোযোগ দেয়নি।
সংস্কারের ব্যাপারে তিনি বলেন, মানুষ জীবনের অভিজ্ঞতা থেকে সংস্কার চায়। পুলিশ ও শিক্ষা খাতে প্রয়োজনীয় সংস্কার হয়নি। স্বাধীন পুলিশ কমিশন গঠনের বিষয়ে দ্বিধা রয়েছে। জনগণের রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতি আস্থা কমেছে। নির্বাচনের আগে প্রতিশ্রুতি পূরণ না হওয়ার কারণে অনেকে দ্রুত নির্বাচন নয়, বরং নির্বাচন-পরবর্তী সংস্কার চান।
ভোটপ্রত্যাশা নিয়ে ড. আসিফ শাহান জানান, বিএনপির প্রতি আগে যারা সমর্থন দেখিয়েছিলেন, অনেকেই এখনো ভোট সিদ্ধান্ত নেননি। আগামী পদযাত্রা এনসিপি পক্ষে কিছু সমর্থন বাড়াতে পারে।
জরিপ অনুযায়ী দেখা যায়, দেশের জনগণ শুধু নির্বাচনের আয়োজন নয়, বরং আইনশৃঙ্খলা, অর্থনীতি, দুর্নীতি দমন ও শিক্ষায় বাস্তব পরিবর্তন প্রত্যাশা করে। নির্বাচনের আগে এসব খাতে কার্যকর সংস্কার তাদের আস্থার শর্ত বলে মত জরিপে উঠে এসেছে।