বারবার চেষ্টা করেও নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘন থামাতে পারছে না নির্বাচন কমিশন। তবে যাতে করে নির্বাচনকে কেন্দ্র করে ভালো সংস্কৃতি গড়ে ওঠে সেজন্য চেষ্টা করে যাবে কমিশন। যদিও নির্বাচনকে কেন্দ্র করে যে উচ্ছ্বাসের সংস্কৃতি গড়ে উঠেছে তা সুইচ টিপে বন্ধ করা যাবে না বলে মনে করেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল।
রোববার (৭ মে) বিকেলে রাজধানীর আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবনে উপস্থিত হয়ে আজমত উল্লা খান নির্বাচন কমিশনের (ইসি) শোকজের জবাব দেয়ার পর সিইসি এসব কথা বলেন।
আগামীতে আচরণবিধি প্রতিপালনে নির্বাচনী সংস্কৃতি গড়ে উঠার আশা রেখে সিইসি বলেন, ‘আমাদের যে নির্বাচনী সংস্কৃতি, কৃষ্টি বহু বছর ধরে গড়ে উঠেছে। সেখানে এ ধরনের উচ্ছ্বাস (মনোনয়নপত্র জমার সময় দলবল নিয়ে উপস্থিতি) প্রকাশ করে থাকে। এটাকে এক ধাক্কায় সুইচ টিপে বন্ধ করে দেওয়া যাবে না। কিন্তু সেজন্য সহযোগিতা লাগবে। এজন্যে এনফোর্স করার চেষ্টা করব, ধীরে ধীরে শুভ কালচার গড়ে উঠবে।’
আজমত উল্লার ব্যাখ্যার বিষয়ে জানতে চাইলে সন্তোষ প্রকাশ করে সিইসি বলেন, ‘অত্যন্ত চমৎকারভাবে, অত্যন্ত বিনয়ের সঙ্গে উনি (আজমত উল্লা খান) দুঃখ প্রকাশ করেছেন। আগামীর বিষয়ে প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। ভুল কিছুটা অজ্ঞতাবশত হয়েছে। স্থানীয় প্রশাসনের মতামত নিয়ে দুয়েকটা সভা হয়েছে সিটি এলাকার বাইরে। প্রাথমিকভাবে উনার বক্তব্যে আমরা অত্যন্ত সন্তুষ্ট।’
আজমত উল্লা খান দুঃখ প্রকাশ করেছেন কেন, এমন প্রশ্নে সিইসি বলেন, ‘এত প্রশ্নের তো দরকার নেই।’
মনোনয়ন জমার সময় পাঁচজনের বেশি লোকের উপস্থিতিতে আচরণ বিধি লঙ্ঘনের অভিযোগের বিষয়ে প্রার্থীর ব্যাখ্যা তুলে ধরে সিইসি জানান, ‘মনোনয়নপত্র জমার দিন বেশ কিছু সংখ্যক কাউন্সিলরও তাদের দলবল নিয়ে এসেছেন তাতে শোডাউনের মতো করে। আমরা উনাকে শোকজ করেছি। উনি বক্তব্য দিয়েছেন। আমরা এখনও সিদ্ধান্ত নেইনি। কিন্তু উনার বক্তব্যটা বিবেচনা করছি। উনি লোকাল লিডার, উনি অত্যন্ত বিনয়ে সঙ্গে ভবিষ্যত প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। আমরা মনে করলে-উনি লিখিতভাবে দেবেন। আমরা ফারদার কোনো তদন্ত করবো না।’
সিইসি আরও বলেন, ‘উনার বক্তব্যে আমরা সন্তুষ্ট। আমাদের সঙ্গে কো-অপারেট করে ভবিষ্যতে যাতে আচরণবিধি প্রতিপালিত হয় সেটা সর্বোতভাবে চেষ্টা করবেন। আমরা শোডাউনকে বড় করে দেখেছি। উনি বলেছেন, যদি ভঙ্গ হয়ে থাকে উনি দুঃখিত।’
ইসির পদক্ষেপের বিষয়ে সিইসি জানান, ইতোমধ্যে দলের সাধারণ সম্পাদক, মন্ত্রিপরিষদ সচিবের কাছে চিঠি দেওয়া হয়েছে সংসদ সদস্য, মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রীদের আচরণবিধি প্রতিপালনের বিষয়টি স্মরণ করিয়ে দিতে ইসির পক্ষ থেকে যা যা করা দরকার করছি। আশা করি, এটা একটা সচেতনতা সৃষ্টি করবে। আগামীতে যে পাঁচটি সিটি নির্বাচন রয়েছে, একটা এক্সাম্পল বাকিদের শিখতে সহায়তা করে। সামনে খুলনা, বরিশাল, সিলেট ও রাজশাহীর ভোট রয়েছে।
খুলনায় একটি রাজনৈতিক সমাবেশও দলের সহায়তায় রিটার্নিং অফিসার প্রতিহত করেছে বলে জানিয়ে সিইসি বলেন, ‘রাজনৈতিক দল সহযোগিতা করছে। আমরা বিশ্বাস করি, এটা ইতিবাচক। রাজনৈতিক নেতাদের রেসপন্স ইতিবাচক। ভবিষ্যতে অব্যাহত থাকবে।’
এর আগে, ৩০ এপ্রিল ও ৪ মে দুই দফায় আচরণবিধি লঙ্ঘনের দায়ে কেন আজমত উল্লা খানের মনোনয়নপত্র বাতিল করা হবে না, ইসিতে এসে তার ব্যাখ্যা দিতে বলেছিল কমিশন।