গাজীপুরের কাপাসিয়ায় নির্বাচনকালীন সংবাদ সংগ্রহের সময় দৈনিক যুগান্তরের কাপাসিয়া প্রতিনিধিকে লাঞ্ছিত করার ঘটনা ঘটেছে। শনিবার বিকাল পৌনে ৫টার দিকে উপজেলার চাঁদপুর ইউনিয়নের নলগাঁও বাজার এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। লাঞ্ছিত সাংবাদিক খোরশেদ আলম (৪০) কালীগঞ্জ উপজেলার জাঙ্গালিয়া ইউনিয়নের আজমতপুর গ্রামের মাওলানা মোয়াজ্জেম আলী খানের ছেলে। তিনি দৈনিক যুগান্তরের কাপাসিয়া প্রতিনিধি হিসেবে কর্মরত আছেন।
সাংবাদিক খোরশেদ আলম জানান, কাপাসিয়া উপজেলার চাঁদপুর ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী মিজানুর রহমান খান শনিবার বিকালে নলগাঁও নয়াপাড়া এলাকায় কর্মী-সমর্থকদের নিয়ে প্রচার-প্রচারণা চালাচ্ছিলেন। এ সময় নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট কাপাসিয়া উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) রোবাইয়া ইয়াসমিন তমা নির্বাচনী আচরণবিধি ভঙ্গের দায়ে আওয়ামী লীগ মনোনীত চেয়ারম্যান প্রার্থী মিজানুর রহমান খানকে ১০ হাজার টাকা জরিমানা করেন। পরে তার কর্মী-সমর্থকরা ম্যাজিস্ট্রেটের গাড়ি ঘিরে ফেলে আন্দোলন করতে থাকেন। খবর পেয়ে সাংবাদিক খোরশেদ ঘটনাস্থলে গিয়ে ঘটনার দৃশ্য ধারণ করতে থাকেন।
সাংবাদিক খোরশেদ আলম দাবি করেন, সংবাদ সংগ্রহের সময় মিজানুর রহমানের নির্দেশে কর্মী-সমর্থকরা তার ওপর হামলা করে। এ সময় তাকে কিল-ঘুষি লাথি মেরে একটি সনি ভিডিও ক্যামেরা, দুটি স্মার্ট মোবাইল ফোন এবং পকেটে থাকা প্রায় চার হাজার টাকা ছিনিয়ে নিয়ে যায়। পরে স্থানীয়রা গুরুতর আহতাবস্থায় তাকে উদ্ধার করে গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করেন। বর্তমানে তিনি সেখানেই চিকিৎসাধীন আছেন।
এ বিষয়ে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট কাপাসিয়া উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) রোবাইয়া ইয়াসমিন তমা জানান, শনিবার বিকালে নলগাঁও গ্রামে নির্বাচন আচরণবিধি ভেঙে প্রচারণা চালাচ্ছিলেন চাঁদপুর ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের চেয়ারম্যান প্রার্থী মিজানুর রহমান খান। এ সময় তার ছেলের নেতৃত্বে একটি মোটরসাইকেল মহড়া চলাকালীন তা বন্ধ করে তাকে ১০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। এ সময় তার সঙ্গে থাকা নেতাকর্মীরা পরিস্থিত উত্তপ্ত করেন। ঘটনার ছবি তুলতে গেলে সাংবাদিককে লাঞ্ছিত করা হয়।
হামলার বিষয়ে জানতে চাঁদপুর ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী মিজানুর রহমান বলেন, মাত্রই হামলার ঘটনাটি শুনলাম। এ ঘটনার সঙ্গে আমার কোনো লোকজন জড়িত নয়, হয়তো অন্য কেউ নির্বাচনকে প্রভাবিত করতে এ হামলার ঘটনা ঘটিয়ে আমার নাম ব্যবহার করছে। কাপাসিয়া থানার ওসি এএফএম নাছিম বলেন, মোবাইল কোর্ট করা নিয়ে উত্তেজনা তৈরি হওয়ায় আমি ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনি। পরে এসে জানতে পারি একজন সাংবাদিককে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করা হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে থানায় কেউ কোনো অভিযোগ করেননি। অভিযোগ পেলে তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।