গণফোরামের সভাপতি ড. কামাল হোসেন বলেছেন, রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে পারস্পরিক দ্বন্দ্ব, সংঘাত ও অবিশ্বাস আজ মুক্তিযুদ্ধের অর্জনকে বিপন্ন করে তুলছে। বিরোধী দলগুলোর ওপর সরকারের সীমাহীন দমন-পীড়নের ফলে দেশ আজ চরম সংকটে পতিত হয়েছে। ফলে বিদেশি রাষ্ট্রগুলো আমাদের গণতন্ত্র ও নির্বাচন নিয়ে প্রশ্ন উত্থাপন করার সুযোগ পেয়েছে। যার ফলে জাতি হিসেবে আমরা লজ্জিত। তবে আমরা একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন চাই৷ এ নির্বাচনকে সামনে রেখে আমরা ছয় দফা দাবি ঘোষণা করছি৷
মঙ্গলবার (২৯ আগস্ট) জাতীয় প্রেস ক্লাবে আয়োজিত গণফোরামের ৩০তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।
ড. কামাল বলেন, আগামী জাতীয় নির্বাচন জাতির সামনে একটি উত্তরণের উপায় হিসেবে উপস্থাপিত হয়েছে বলে গণফোরাম বিশ্বাস করে। পথ ও মত হিসেবে গণতন্ত্রই আমাদের শেষ কথা, যেখানে সকল ক্ষমতার মালিক হবে জনগণ। যেখানে অস্ত্র, অর্থ ও পেশিশক্তি নির্ভর রুগ্ন রাজনীতির বিপরীতে জনগণের ঐক্যবদ্ধ রাজনৈতিক শক্তির বিকাশ ঘটবে, যেখানে নেতিবাচক রাজনীতির পরিবর্তে ইতিবাচক, সৃজনশীল ও জাতীয় সমঝোতার রাজনীতি নিশ্চিত হবে। আমরা সন্ত্রাস, দুর্নীতি ও সাম্প্রদায়িকতামুক্ত বাংলাদেশ গড়তে চাই। আমরা এমন জাতীয় সংসদ চাই, যা জনগণের কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠা করবে। এমন নির্বাহী বিভাগ চাই যারা জনগণের কল্যাণ নিশ্চিত করবে, এমন বিচার বিভাগ চাই যারা ন্যায়বিচার নিশ্চিত করবে। এজন্য দরকার জনগণের কাছে দায়বদ্ধ ও জবাবদিহিমূলক একটি নির্বাচিত সরকার।
প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর বক্তব্য শেষে ছয় দফা দাবি ঘোষণা করেন তিনি। দাবিগুলো হলো:
১) একটি অবাধ, সুষ্ঠু, গ্রহণযোগ্য ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের লক্ষ্যে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা সাপেক্ষে নির্বাচনকালীন নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকার গঠন করা।
২) গ্রহণযোগ্য ব্যক্তিদের সমন্বয়ে নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠন করা।
৩) নির্বাচনকে সামনে রেখে বাকস্বাধীনতা, ব্যক্তি, সংবাদপত্র, ইলেকট্রনিকস মিডিয়া, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ও সব রাজনৈতিক দলের সভা-সমাবেশের স্বাধীনতা নিশ্চিত করা এবং তাদের নিরপেক্ষ ভূমিকা রাখতে বাধা না দেওয়া।
৪) নির্বাচনে লেভেল প্রেয়িং ফিল্ড নিশ্চিত করতে নির্বাচনকালীন সরকার বাধ্য থাকবে।
৫) বিরোধী দলগুলোর নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে মিথ্যা ও হয়রানিমূলক মামলা অবিলম্বে প্রত্যাহার করতে হবে।
৬) নির্বাচনে স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে দেশি ও বিদেশি পর্যবেক্ষক নিয়োগের ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে।