একটি নিরপেক্ষ ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের জন্য যা করণীয় রাষ্ট্রপতি হিসেবে তাই করবেন বলে জানিয়েছেন নবনির্বাচিত রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন। নির্বাচন কীভাবে হবে সেটা সংবিধানে বলে দেওয়া আছে, সুতরাং সেটা নিয়ে কাউকে মাথা না ঘামাতে আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।
শনিবার (১৬ এপ্রিল) রাজধানীর গুলশানে তার লেখা ‘এগিয়ে যাও বাংলাদেশ’ বইটি আনুষ্ঠানিকভাবে হস্তান্তর অনুষ্ঠানে নতুন রাষ্ট্রপতি এসব কথা বলেন।
রাষ্ট্রপ্রধান হিসেবে নির্বাচনে নিজের দায়িত্ব প্রসঙ্গে নবনির্বাচিত রাষ্ট্রপতি বলেন, ‘একটি নিরপেক্ষ, অংশগ্রহণমূলক ও গ্রহণযোগ্য জাতীয় সংসদ নির্বাচনের জন্য রাষ্ট্রপতি হিসেবে যা করণীয় তাই করব।’
সাহাবুদ্দিন বলেন, ‘সামনে জাতীয় সংসদ নির্বাচন। সকলে মুখে মুখে বলছি, নির্বাচন খুব ক্রুশিয়াল হবে, কিন্তু আমি মনে করি কোনো ক্রুশিয়াল নয়।’
নবনির্বাচিত রাষ্ট্রপতি বলেন, ‘দেশে একটি সংবিধান আছে। কারও মাথা ঘামানোর প্রয়োজন নেই। দেশের সংবিধান অনুযায়ী স্বাধীন নির্বাচন কমিশন (ইসি) একদম তাদের সর্বোচ্চ স্বাধীনতা প্রয়োগ করে সংবিধানের আলোকে একটি নিরপেক্ষ, অংশগ্রহণমূলক এবং গ্রহণযোগ্য জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠান করতে সক্ষম হবে।’
আগামী ২৪ এপ্রিল শপথ নিতে যাওয়া নতুন রাষ্ট্রপতি বলেন, ‘সেখানে রাষ্ট্রপতি একজন সুপ্রিম কমান্ডার হিসেবে আমার যেটুকু দায়িত্ব এই নিরপেক্ষতাটাকে বজায় রাখার জন্য, সমস্ত আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখার জন্য জন্য যতটুকু প্রয়োজন করব।’
তাঁকে রাষ্ট্রপতি মনোনীত করায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতি অশেষ কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করেন। তিনি আওয়ামী লীগ উপদেষ্টামণ্ডলী ও কার্যনির্বাহী কমিটিসহ সংশ্লিষ্ট সবাইকেও ধন্যবাদ জানান।
নিজের বই প্রসঙ্গে নতুন রাষ্ট্রপতি বলেন, বিভিন্ন ঘটনাবহুল প্রবন্ধ সমৃদ্ধ বই ‘এগিয়ে যাবে বাংলাদেশ’ গ্রন্থের পাতায় পাতায় বিধৃত হয়েছে শৈশব থেকে শুরু করে পুরো জীবনের কথা; সংগ্রাম, রাজনীতি, মুক্তিযুদ্ধ, জেল জীবন, কর্মজীবন, সংসার-জীবন, চিন্তাদর্শ তথা সবকিছুর পরিচয়।
২০৪ পৃষ্ঠার এই বইটিতে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সঙ্গে তাঁর দুষ্প্রাপ্য ও ঐতিহাসিক কিছু আলোকচিত্র যুক্ত করা হয়েছে।
নবনির্বাচিত রাষ্ট্রপতি বলেন, তাঁর ব্যক্তিজীবন এবং সমকালীন রাজনৈতিক ঘটনাবলি, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এবং বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ তথা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার যে উন্নয়ন কর্মকাণ্ড সেগুলোর একটা ব্যাপকভিত্তিক পরিচয় উঠে আসছে।
বইটি প্রকাশের জন্য আগামী প্রকাশনী ও গবেষকসহ সংশ্লিষ্ট সবার প্রতি কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করেন। তিনি বলেন, এছাড়া বইটিতে রয়েছে বঙ্গবন্ধুকন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার স্বদেশ প্রত্যাবর্তন, গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার সংগ্রাম, রাষ্ট্রপ্রধান হিসেবে গৃহীত নানা পদক্ষেপ, ডিজিটাল বাংলাদেশ গঠন, করোনাসঙ্কট মোকাবেলা, পদ্মা সেতু ও মেট্রোরেল নির্মাণ, রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র বাস্তবায়ন, স্মার্ট বাংলাদেশ কর্মসূচিসহ বহুবিধ উন্নয়ন কর্মকাণ্ড এবং রাষ্ট্রনেতা হিসেবে বিশ্বের বুকে বাংলাদেশের উজ্জ্বল ভাবমূর্তি প্রতিষ্ঠার বিষয় নিয়ে লেখা সাতটি কলাম।
বইটির প্রকাশক বীর মুক্তিযোদ্ধা ওসমান গনি ও পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের মানবিক ও সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের সাবেক ডিন ও গবেষক ড. এম আবদুল আলীম নবনির্বাচিত রাষ্ট্রপতির কাছে হস্তান্তর করেন। এ সময় আগামী প্রকাশনীর পক্ষে মৌলি আজাদ উপস্থিত ছিলেন।
গত ১৩ ফেব্রুয়ারি দেশের ২২তম রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হন দুর্নীতি দমন কমিশনের সাবেক কমিশনার সাহাবুদ্দিন চুপ্পু। আগামী ২৪ এপ্রিল বর্তমান রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদের মেয়াদ শেষ হব। ওইদিন বেলা ১১টায় বঙ্গভবনে সাহাবুদ্দিনের শপথ নেওয়ার কথা রয়েছে। তাকে শপথ পড়াবেন স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী।