নিজের গড়া প্রতিষ্ঠান গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রধান ফটকের পাশে চিরনিদ্রায় শায়িত হলেন বীর মুক্তিযোদ্ধা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী। হাজারও কর্মকর্তা, কর্মচারী, শিক্ষার্থী, রাজনৈতিক ব্যক্তিবর্গ ও শুভাকাঙ্ক্ষী চোখের জলে বিদায় জানান কীর্তিমান এই পুরুষকে।
শুক্রবার (১৪ এপ্রিল) বাদ জুমা তাকে সমাহিত করা হয়। এর আগে নিজের গড়া প্রতিষ্ঠানে শেষবারের মতো আনা হয় প্রখ্যাত এই চিকিৎসকের মরদেহ।
গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের পিএইচএ মাঠে সকাল ১০টা থেকে দুপুর সাড়ে ১২টা পর্যন্ত তাকে শ্রদ্ধা জানায় সর্বস্তরের জনসাধারণ। শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে জুমার নামাজের পর দুপুর ২টা ৩০ মিনিটে পিএইচএ মাঠে তার পঞ্চম নামাজে জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। পরে তাকে গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের সূচনা ভবনের সামনে সমাহিত করা হয়। দাফন শেষে ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীর আত্মার মাগফেরাত কামনায় দীর্ঘ মোনাজাত করা হয়।
এর আগে বৃহস্পতিবার (১৩ এপ্রিল) সন্ধ্যা ৬টা ৪০ মিনিটে সাভারের গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রে ফ্রিজিং ভ্যানে বীর মুক্তিযোদ্ধা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীর মরদেহ পৌঁছে। আজ শুক্রবার (১৪ এপ্রিল) সকাল ১০টা টার দিকে সবাইকে শ্রদ্ধা জানানোর সুযোগ দেওয়া হয়। জুমার নামাজের আগ পর্যন্ত বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ তাকে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।
ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীর ছেলে বারিস হোসেন চৌধুরী বলেন, আমার মরহুম বাবার সাথে কারও কোনো লেনদেন যদি থেকে থাকে কিংবা কেউ কিছু পেয়ে থাকলে তারা যেন আমার পরিবারের সাথে যোগাযোগ করেন।
বারিস বলেন, আমার বাবা মেডিকেল সায়েন্সের কল্যাণে দেহ দান করে যেতে চেয়েছিলেন। আমরা বাবার স্বপ্ন পূরণের চেষ্টা করেছিলাম। আমরা প্রতিষ্ঠিত দুটি প্রতিষ্ঠানে যোগাযোগ করেছিলাম। কিন্তু তারা বাবাকে অনেক শ্রদ্ধা করেন। তারা বলেছেন আমার বাবার শরীরে কেউ ছুরি চালাতে পারবে না। শ্রদ্ধার জায়গা থেকে তারা বলেছে। এমন সময়ও আমরা আমাদের চেষ্টা চালিয়েছি।
এর আগে ধানমন্ডির বাসভবনে প্রথম ও ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে দ্বিতীয়, শহীদ মিনারে ও রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীর চতুর্থ জানাজা অনুষ্ঠিত হয়।
ধানমন্ডির গণস্বাস্থ্য নগর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গত মঙ্গলবার (১১ এপ্রিল) রাত ১১টার দিকে মারা যান ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী। খ্যাতিমান এই বুদ্ধিজীবী ও চিকিৎসক দীর্ঘদিন ধরে কিডনি জটিলতায় ভুগছিলেন। করোনার পর কিডনি সমস্যার পাশাপাশি তার লিভারের সমস্যাও দেখা দেয়।