পিরোজপুরের নাজিরপুরে নিখোঁজের চার মাস পর বালু চাপা দেওয়া অবস্থায় লামিয়া আক্তার (১৮) নামে এক গৃহবধূর মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। সোমবার (১৩ মার্চ) দুপুরে উপজেলার চিথলিয়া গ্রাম থেকে মরদেহটি উদ্ধার করা হয়।
নিহত লামিয়া আক্তার নাজিরপুর উপজেলার সদর ইউনিয়নের চিথলিয়া গ্রামের নজরুল ইসলামের মেয়ে এবং একই এলাকার মো. তরিকুল ইসলামের স্ত্রী।
নিহতের পরিবার ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, চিথলিয়া গ্রামের বাসিন্দা মো. মিজান খানের ছেলে তরিকুল ইসলামের সঙ্গে লামিয়া আক্তারের প্রেমের সম্পর্ক ছিল। সেই সূত্রে তাদের বিয়ে হয় গত বছরের ৫ মে। সেই বছরের ডিসেম্বর মাসে শ্বশুরবাড়ি থেকে নিখোঁজ হন লামিয়া। নিখোঁজের পর থানায় মামলা হলে তরিকুলের বাবা মিজান ও প্রতিবেশী বাদশা শেখকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। সর্বশেষ গতকাল রোববার রাতে লামিয়ার ব্যাপারে একটি চিরকুট পৌঁছায় তার পরিবারের কাছে। এই চিরকুটের মাধ্যমে পুলিশ আজ দুপুরে লামিয়ার বালুচাপা দেওয়া মরদেহ উদ্ধার করে।
এ বিষয়ে জানতে লামিয়ার শ্বশুরবাড়িতে গেলে কাউকে পাওয়া যায়নি। তবে লামিয়ার পরিবারের দাবি- তাকে হত্যা করা হয়েছে।
লামিয়ার ছোট খালা সাবিনা খানম বলেন, তরিকুলের সঙ্গে লামিয়ার বিয়ে হয়েছে সাত মাস। তাকে আমরা চার মাস ধরে পাচ্ছি না। ছেলের বাড়িতে আমরা হত্যার আলামত পেয়েছি। তার চাচাতো ভাই নতুন বাড়ি করেছে। সেখানে আমরা অস্বাভাবিকভাবে বালু খোঁচা দেওয়া দেখতে পেয়েছি। আমরা থানায় অভিযোগ দিয়েছি, মামলা করেছি। কিন্তু যারা গ্রেপ্তার হয়েছিল তারা জামিনে রয়েছে। আমরা এ ঘটনার সুষ্ঠু বিচার দাবি করছি।
লামিয়ার মা রাজিয়া বেগম বলেন, সাত মাস আগে বিয়ে হয়েছে লামিয়ার। কিন্তু ছেলের পরিবার মেনে নেয়নি। আমাকে বলেছিল মেয়েকে নিজের কাছে রাখতে, তারপর ছেলে ঘরে তুলে নেবে। স্থানীয় সালিসের মাধ্যমে মেয়েকে শ্বশুর বাড়ি পাঠালে তারপর সে নিখোঁজ হয়। আমি আমার মেয়েকে হত্যার বিচার চাই। আমার মেয়েকে ওরা যেভাবে কষ্ট দিয়ে মারছে, সেই ভাবে কষ্ট দিয়ে যেন ওদের ফাঁসি দেওয়া হয়।
নাজিরপুর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হুমায়ুন কবির বলেন, গত বছরের ডিসেম্বরে এ বিষয়ে থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা হয়। আমরা পরবর্তীতে তথ্য-প্রযুক্তির মাধ্যমে নিশ্চিত হই লামিয়াকে তরিকুল নিয়ে গেছে। আমরা তরিকুলের বাবা ও এক প্রতিবেশীকে গ্রেপ্তার করেছিলাম। পরবর্তীতে গতকাল মেয়ের বাড়িতে একটি চিরকুট পৌঁছায় কে বা কারা। সেখানে এই বালুর মাঠের কথা লেখা ছিল। প্রাথমিকভাবে ধারণা করছি মরদেহটি লামিয়ার। আমাদের সিনিয়র অফিসাররা আসলে ডিএনএ পরীক্ষার মাধ্যমে পরবর্তীতে বিস্তারিত বলা যাবে।