রহিমা বেগম (৪০)। কেরানীগঞ্জ থেকে ঈদের কেনাকাটা করতে রাজধানীর নিউ মার্কেটে এসেছিলেন তিনি। কিন্তু এখানে এসে জানতে পারেন অগ্নিকাণ্ডের কথা। পুরো এলাকা লোকারণ্য। অনেকক্ষণ অপেক্ষা করে অবশেষে কেনাকাটা না করেই ফিরে যেতে হয়েছে তাকে।
শনিবার (১৫ এপ্রিল) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে রহিমা বেগম বলেন, আমার বাড়ি কেরানীগঞ্জে। প্রতি বছর ঈদের কেনাকাটা নিউ মার্কেট থেকে করি। তাই এবারও এসেছিলাম। আগুন লাগার কারণে নিউ মার্কেট বন্ধ রয়েছে। তাই কেনাকাটা না করেই ফিরে যাচ্ছি।
শুধু রহিমা নন, তার মতো অনেকেই ঈদের কেনাকাটা করতে নিউ মার্কেটে এলাকায় এসেছিলেন। তবে মার্কেট বন্ধ থাকায় কেনাকাটা না করেই বাসায় ফিরতে হচ্ছে তাদের।
রামপুরার বাসিন্দা সুলতানা বেগম। রহিমার মতো তিনিও নিউ মার্কেট এসেছিলেন। মার্কেট বন্ধ থাকার কারণে কেনাকাটা না করেই বাসায় ফিরে গেছেন তিনি।
সুলতানা বেগম বলেন, আমার মেয়েকে নিয়ে কেনাকাটার জন্য নিউ মার্কেট এসেছিলাম। আগুন লাগার মার্কেট বন্ধ করে দিয়েছে। তাই কেনাকাটা না করে বাসায় ফিরছি।
কখন নিউ মার্কেট খুলে দেওয়া হবে তা জানতে অপেক্ষা করছেন ব্যবসায়ী ও কর্মচারীরা। ঈদের এই সময়ে তাদের প্রচুর বিক্রি হয়। যত সময় মার্কেট বন্ধ থাকবে তত তারা ক্ষতির মুখে পড়বেন।
নিউ মার্কেটের দুই নম্বর গেটে গিয়ে দেখা গিয়ে দেখা গেছে, গেটটি বন্ধ করে রাখা হয়েছে। গেটের ভেতরে পুলিশ সদস্যরা রয়েছেন। আর বাইরে ব্যবসায়ী ও কর্মচারীরা অপেক্ষা করছেন।
নিউ মার্কেটের দোকান কর্মচারী মুস্তফা মিয়া ঢাকা মেইলকে বলেন, গতকাল রাত আড়াইটার দিকে দোকান বন্ধ করে বাসায় ফিরেছি। সকালে ঘুম থেকে উঠে আগুনের খবর পেয়ে দ্রুত এসেছি। নিউ সুপার মার্কেটে আগুন লাগায় আমাদের নিউ মার্কেটও বন্ধ রয়েছে। তাই বাইরে বসে অপেক্ষা করছি। মার্কেট খোলার সাথে সাথে দোকানে চলে যাব।
মিজানুর রহমান নামের নিউ মার্কেটের এক ব্যবসায়ী ঢাকা মেইলকে বলেন, আগুন লাগায় মার্কেট বন্ধ রয়েছে। মার্কেট খোলার অপেক্ষায় আছি।
নিউ মার্কেটের লেগুনা স্ট্যান্ড এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, পুলিশ সদস্যরা রাস্তায় দায়িত্ব পালন করছেন। নিউ মার্কেটে কাউকে প্রবেশ করতে দিচ্ছেন না।
শুধু নিউ মার্কেটই নয়, আগুন লাগায় গাউছিয়া মার্কেট, নুরজাহান মার্কেট, ধানমন্ডি হকার্স মার্কেট, বলাকা ভবনসহ আশপাশের মার্কেটগুলো বন্ধ রাখা হয়েছে। এছাড়া সিটি কলেজ থেকে নিউ মার্কেটমুখী সড়ক বন্ধ রয়েছে।
গাউছিয়া মার্কেটের ব্যবসায়ী রহিম উদ্দিন জানান, সকালে আগুন লাগার খবর পেয়ে দ্রুত চলে আসি। আগুন লাগার কারণে মার্কেট বন্ধ রয়েছে। এখনো মার্কেট খোলার সিদ্ধান্ত হয়নি। কখন খুলে দেওয়া হবে তাও বলতে পারছি না।
এর আগে শনিবার (১৫ এপ্রিল) ভোর ৫টা ৪০ মিনিটে নিউ মার্কেটের পাশে নিউ সুপার মার্কেটে আগুনের সূত্রপাত হয়। পরে ফায়ার সার্ভিস সদস্যরা এসে আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ শুরু করে। একে একে মোট ৩০টি ইউনিট আগুন নিয়ন্ত্রণে যোগ দেয়। ফায়ার সার্ভিসের সঙ্গে যোগ দেয় বাংলাদেশ সেনাবাহিনী, বাংলাদেশ নৌবাহিনী ও বাংলাদেশ বিমানবাহিনী। ৯টা ১০ মিনিটে আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে। তবে আগুন পুরোপুরি নেভেনি।