ঢাকাই চলচ্চিত্রের মিয়া ভাই খ্যাত কিংবদন্তি নায়ক ও বীর মুক্তিযোদ্ধা ফারুক আর নেই (ইন্নালিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। তিনি সিঙ্গাপুরের মাউন্ট এলিজাবেথ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেন। চলচ্চিত্রে তিনি নায়ক ফারুক হিসেবে পরিচিত হলেও তার আসল নাম আকবর হোসেন পাঠান।
নায়ক ফারুকের ছেলে রওশন হোসেন পাঠান মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, সিঙ্গাপুরে স্থানীয় সময় সকাল ১০টায়, বাংলাদেশ সময় আজ (১৫ মে) সকাল ৮টা ৩০ মিনিটের দিকে তার বাবা মারা গেছেন। আমার আব্বুর জন্য দোয়া করবেন।
রওশন আরও জানান, তার বাবা ফারুকের মরদেহ মঙ্গলবার (১৬ মে) ভোরের ফ্লাইটে ঢাকায় আনা হবে।
অভিনেতা ফারুক দীর্ঘদিন সিঙ্গাপুরের মাউন্ট এলিজাবেথ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন। আট বছর ধরে এই হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছিলেন এই অভিনয়শিল্পী ও রাজনীতিবিদ।
নায়ক ফারুক সর্বশেষ ২০২১ সালের মার্চ মাসের প্রথম দিকে নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য সিঙ্গাপুরে যান তিনি। পরীক্ষায় রক্তে সংক্রমণ ধরা পড়ে। এরপর থেকেই শারীরিকভাবে অসুস্থতা অনুভব করছিলেন তিনি।
নায়ক ফারুক ১৯৪৮ সালের ১৮ আগস্ট ঢাকায় জন্মগ্রহণ করেন। এইচ আকবর পরিচালিত ‘জলছবি’ চলচ্চিত্রে অভিনয়ের মধ্য দিয়ে ১৯৭১ সালে ঢাকাই সিনেমায় তার যাত্রা শুরু হয়। প্রথম সিনেমায় তিনি কবরীর সঙ্গে জুটি বেঁধে অভিনয় করেছেন। এরপর ১৯৭৩ সালে খান আতাউর রহমানের পরিচালনায় মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক চলচ্চিত্র ‘আবার তোরা মানুষ হ’ এবং ১৯৭৪ সালে নারায়ণ ঘোষ মিতার ‘আলোর মিছিল’ দুটি সিনেমায় পার্শ্বচরিত্রে অভিনয় করেন ফারুক।
৫০ বছরের বেশি সময় ধরে চলচ্চিত্রে অভিনয় করা নায়ক ফারুক একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে ঢাকা-১৭ আসনে প্রথমবারের মতো সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।
নায়ক ফারুক অভিনয়ে অসামান্য অবদান রাখার জন্য ১৯৭৫ সালে শ্রেষ্ঠ পার্শ্ব অভিনেতা হিসেবে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার লাভ করেন। ২০১৬ সালে ভূষিত হয়েছেন আজীবন সম্মাননায়।
নায়ক ফারুক অভিনীত উল্লেখযোগ্য সিনেমার মধ্যে রয়েছে সারেং বৌ, লাঠিয়াল, সুজন সখী, নয়নমনি, মিয়া ভাই, গোলাপী এখন ট্রেনে, সাহেব, আলোর মিছিল, দিন যায় কথা থাকে ইত্যাদি।