আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী সেলিনা হায়াৎ আইভী নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন (নাসিক) নির্বাচনে মেয়র পদে কেন্দ্রভিত্তিক ফলাফলে বিজয়ী হয়েছেন । নৌকা প্রতীক নিয়ে ১৯২টি কেন্দ্রে তিনি ১ লাখ ৬১ হাজার ২৭৩ ভোট পেয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী তৈমূর আলম খন্দকার পেয়েছেন ৯২ হাজার ১৭১ ভোট।
৬৯ হাজার ১০২ ভোট তাদের পার্থক্য । ফলে টানা তৃতীয়বারের মতো নারায়ণগঞ্জ সিটির মেয়র হতে চলেছেন সেলিনা হায়াৎ আইভী। রোববার রাতে ভোট গণনা শেষে ১৯২ কেন্দ্র থেকে আসা প্রাথমিক তথ্যে সিটি নির্বাচনে মেয়র পদের এ ফল নিশ্চিত হওয়া গেছে। সংশ্লিষ্ট কেন্দ্রের প্রিজাইডিং অফিসার সংবাদকর্মীদের ভোটের এ ফল জানিয়েছেন।
তবে নির্বাচন কমিশনের পক্ষে রিটার্নিং কর্মকর্তা বেসরকারিভাবে যে ফল ঘোষণা করছেন সেখান থেকে এখনো পূর্ণাঙ্গ ফলাফল ঘোষণা করা হয়নি।
বহুল আলোচিত নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন নির্বাচনে রোববার সকাল আটটা থেকে ভোটগ্রহণ শুরু হয়। চলে বিকেল চারটা পর্যন্ত। সারাদিন শান্তিপূর্ণ ও উৎসবমুখর পরিবেশে ভোট গ্রহণ করা হয়। কোথাও কোনো অপ্রীতিকর ঘটনার খবর পাওয়ার যায়নি।
গত বছরের ৩০ নভেম্বর নারায়ণগঞ্জ সিটি নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করে নির্বাচন কমিশন।
নির্বাচনে মেয়র পদে সাতজন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। আইভী ও তৈমূর আলম ছাড়া মেয়র পদে লড়েন বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের এ বি এম সিরাজুল মামুন (দেয়ালঘড়ি), ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মাছুম বিল্লাহ (হাতপাখা), বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টির রাশেদ ফেরদৌস (হাতঘড়ি), বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলনের মো. জসিম উদ্দিন (বটগাছ) এবং স্বতন্ত্র মেয়র প্রার্থী কামরুল ইসলাম (ঘোড়া)।
এছাড়া ২৭টি ওয়ার্ডে সাধারণ কাউন্সিলর পদে ১৪৮ জন এবং সংরক্ষিত নয়টি কাউন্সিলর পদে লড়েন ৩৪ জন প্রার্থী।
এর আগে পরপর দুইবার নারায়ণগঞ্জের মেয়র নির্বাচিত হন সেলিনা হায়াৎ আইভী। ২০১১ সালে তিনি দলের বিদ্রোহী প্রার্থী হয়ে আওয়ামী লীগের প্রার্থী শামীম ওসমানকে পরাজিত করেন। পরের বার ২০১৬ সালে তিনি আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী হিসেবে জয়লাভ করেন। পরাজিত করেন বিএনপির প্রার্থী সাখাওয়াত হোসেনকে।
সিটি করপোরেশন হওয়ার আগে নারায়ণগঞ্জ পৌরসভার চেয়ারম্যানও ছিলেন আইভী। ২০০৩ থেকে ২০১১ সাল পর্যন্ত তিনি পৌরসভার চেয়ারম্যান ছিলেন (এখন পৌর মেয়র বলা হয়)। সেলিনা হায়াৎ আইভীর বাবা আলী আহাম্মদ চুনকা নারায়ণগঞ্জ শহর আওয়ামী লীগের সভাপতি ছিলেন। বাংলাদেশের স্বাধীনতার পর দুবার নারায়ণগঞ্জ পৌরসভার চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন তিনি।
২০১১ সালের ৫ মে নারায়ণগঞ্জ পৌরসভা, সিদ্ধিরগঞ্জ পৌরসভা ও কদম রসুল পৌরসভা বিলুপ্ত করে নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন গঠন করা হয়। একই বছরের ৩০ অক্টোবর নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের প্রথম নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়।