আহতরা হলেন—নাজিরপুর ইউনিয়ন যুবদলের আহ্বায়ক সালেহ আহমেদ বিপুল (৪০), বিএনপি কর্মী হারুন (৩৬) ও জামাল হোসেন (৪৫) এবং জামায়াত কর্মী সোহাগ আহমেদ (৩০) ও কামাল হোসেন (৩২)।
এ ঘটনায় জামায়াত কর্মী সোহাগের বাবা বাদী হয়ে গুরুদাসপুর থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন। যুবদল নেতা-কর্মীদের অভিযোগ, তারা হামলার ভয়ে চিকিৎসাও নিতে পারছেন না।
গুরুদাসপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. গোলাম সারওয়ার হোসেন বলেন, ‘এক পক্ষের অভিযোগ পাওয়া গেছে। বৃহস্পতিবার রাতে খবর পাওয়ার পর পুলিশ পাঠিয়ে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক করা হয়েছে। তদন্ত সাপেক্ষে অপরাধীদের আইনের আওতায় নিয়ে আসা হবে।’
নাজিরপুর ইউনিয়ন জামায়াতের আমির হামিদুর রহমান সবুজ বলেন, নাজিরপুর ইউনিয়ন জামায়াতের ইফতার মাহফিল উপলক্ষ্যে গণসংযোগ করছিলেন জামায়াতকর্মী চিকিৎসক আব্দুর রহিম, সোহাগ আহমেদ ও কামাল হোসেন। এ সময় নাজিরপুর ইউনিয়ন যুবদলের আহ্বায়ক সালেহ আহমেদ বিপুলের সঙ্গে বাকবিতণ্ডা হয়। বিষয়টি সমাধান করা হলেও কিছু সময় পরে বিপুল তার জনবল নিয়ে সোহাগ ও কামালের ওপর অতর্কিত হামলা চালায়। এরপরেই দুপক্ষের সংঘর্ষ শুরু হয়। জামায়াতের দুই কর্মী রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
নাজিরপুর ইউনিয়ন যুবদলের সাবেক আহ্বায়ক সালেহ আহমেদ বিপুল বলেন, ‘নাজিরপুর বাজারে আমার বিপুল খেলাঘর নামের একটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান রয়েছে। আমি রাজনীতির পাশাপাশি ব্যবসা করি। জামায়াতের নেতা-কর্মীরা যেটা দাবি করেছেন তা সম্পূর্ণ মিথ্যা।’
সালেহ আহমেদ বিপুল বলেন, ‘আমার প্রতিবেশী চিকিৎসক আব্দুর রহিম আমার দোকানের কর্মচারীকে প্রায় সময় মারধর করে। আমি সেই বিষয়ে আব্দুর রহিমের সঙ্গে কথা বলছিলাম। হঠাৎ করেই আমার শার্টের কলার চেপে ধরে মারধর করতে থাকে। ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে দিলে স্থানীয় লোকজন এসে বিষয়টি সমাধান করে দেয়। কিন্তু আব্দুর রহিম তার আক্রোশ মেটানোর জন্য জামায়াতের নেতাকর্মীদের মোবাইল ফোনে ইফতার পার্টির গণসংযোগে বাধা দেওয়ার মিথ্যা কথা বলে ডেকে আনে। তারা প্রায় ২৫০-৩০০ লোক হাতে ধারালো অস্ত্র নিয়ে এসে আমার এবং আমার সঙ্গে থাকা আরও দুই বিএনপি কর্মীর ওপর হামলা চালায়। ঘটনাস্থলেই আমরা তিনজন রক্তাক্ত হয়ে মাটিতে পড়ে গেলে বিএনপির অন্যান্য নেতা-কর্মীরা আমাদের উদ্ধার করে নিরাপদ আশ্রয়ে নিয়ে যায়।’
জামায়াত নেতাকর্মীরা বাড়িতেও হামলা চালিয়েছে এমন অভিযোগ করে সালেহ আহমেদ বিপুল বলেন, ‘জামায়াত নেতা-কর্মীরা আমার বাড়িতে হামলা চালায়। বাড়িতে বৃদ্ধ বাবা-মা, স্ত্রী ভয়ে চিৎকার করছিল। পরে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি শান্ত করলেও এখনও আমি জীবনের নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি। যেকোনো সময় দলবদ্ধ হয়ে এসে আমার ওপর হামলা চালাতে পারে। গভীর রাতে রক্তাক্ত শরীর নিয়ে নাটোরে চিকিৎসা নিতে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছি। তার আগে বাড়ি থেকে বের হতে পারছিলাম না। আমার কোনো স্বজন বাড়ি থেকে বের হতে না পারায় থানায় এখনও অভিযোগ দিতে পারেনি। তবে দলীয় নেতা-কর্মীরা অভিযোগ দেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন।’