নাটোরের লালপুরে থানা হেফাজতে আসামিদের নির্যাতনের অভিযোগে উঠেছে একজন অতিরিক্ত পুলিশ সুপারসহ পাঁচ পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে। অটোরিকশা ছিনতাইয়ের একটি মামলায় গ্রেফতার চার আসামির মধ্যে তিনজনকে নির্যাতন করা হয়েছে বলে আদালতে অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগীরা।
বৃহস্পতিবার (১৩) সন্ধ্যায় লালপুর আমলি আদালতের সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. মোসলেম উদ্দীন অভিযুক্ত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে মামলা করার জন্য নাটোরের পুলিশ সুপারকে নির্দেশ দিয়েছেন।
এদিকে, আসামিদের বক্তব্য ও শরীরে আঘাতের চিহ্ন পর্যালোচনা করে স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য নাটোরের জেল সুপার ও আধুনিক সদর হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ককে নির্দেশ দেন। আসামিদের শরীরে থাকা জখমের কারণ এবং জখমের সুনির্দিষ্ট বর্ণনা দিয়ে মেডিকেল সার্টিফিকেট প্রস্তুত করে পরবর্তী বৃহস্পতিবার (২০ জুলাই) বিকেল ৪টার মধ্যে আদালতে উপস্থাপন করার নির্দেশ দেন আদালত।
অভিযুক্ত পুলিশ সদস্যরা হলেন—বড়াইগ্রাম সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শরীফ আল রাজিব, লালপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. উজ্জ্বল হোসেন, উপপরিদর্শক (এসআই) জাহিদ হাসান, ওমর ফারুক ও এক কনস্টেবল।
আদালত সূত্রে জানা গেছে, লালপুর থানা পুলিশ অটোরিকশা ছিনতাই মামলায় পাবনার ঈশ্বরদীর ফতেহ মোহাম্মদপুর গ্রামের মো. সোহাগ (৩০), মোকাররমপুর গ্রামের মো. সালাম (৩১), নাটোরের বড়ইগ্রামের নগর গ্রামের মো. শামীম মোল্লা (২৯) ও কুষ্টিয়া সদর উপজেলার বারাদি গ্রামের মো. রাকিবুল ইসলামকে (৩০) গ্রেফতার করে। বুধবার তাদের লালপুর আমলি আদালতে হাজির করা হয়। এসময় আসামিরা আদালতের কাছে দেওয়া জবানবন্দিতে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনের অভিযোগ করেন।
এ বিষয়ে লালপুর থানার কর্মকর্তা (ওসি) উজ্জ্বল হোসেন বলেন, থানায় আসামি নির্যাতনের কোনো ঘটনা ঘটেনি বলে তিনি জানান।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শরীফ আল রাজিবের ফোনে একাধিক বার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
আদালতের বেঞ্চ সহকারী আবদুল্লাহ বিশ্বাস বলেন, আসামিদের মধ্যে সোহাগ হোসেনের স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি রেকর্ড করার জন্য আবেদন করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই ওমর ফারুক। তিনি অন্য আসামিদের জেলহাজতে পাঠানোর জন্য উপস্থাপন করেন। এ সময় চার আসামির মধ্যে একজন বাদে তিনজনই থানায় পুলিশি হেফাজতে নির্যাতনের অভিযোগ করেন।
জেলা পুলিশ সুপার মো. সাইফুর রহমান বলেন, অটোরিকশা ছিনতাই মামলার আসামিদের ধরার সময় তারা দৌড়ে পালাতে গেলে কিছু দাগটাগ হয়েছে। পরে আসামিরা আদালতে নির্যাতনের অভিযোগ করেছে। আদালতের আদেশের কথা শুনেছেন। আদেশের কপি পেলে তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে তিনি জানান।