নরসিংদীর পলাশ থানার সেন্ট্রাল কলেজের অধ্যক্ষ আমির হোসেন গাজীর বিরুদ্ধে ১৬ শিক্ষার্থীকে পাইপ দিয়ে পিটিয়ে রক্তাক্ত জখম করার অভিযোগ উঠেছে। সোমবার (০৯ মে) বেলা ১১টায় কলেজের শ্রেণিকক্ষে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের মধ্যে ব্যাপক ক্ষোভ বিরাজ করছে।
ছাত্রদের কাছ থেকে অতিরিক্ত টাকা আদায়সহ নানা অনিয়মের কারণে গত বছর কলেজটির উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার ফরম ফিলাপ করার ক্ষমতা স্থগিত করে শিক্ষা বোর্ড। শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, প্রতিদিন কলেজের দ্বাদশ শ্রেণির বিজ্ঞান বিভাগে ৬টি বিষয়ে পাঠদান হয়। রোববার ৬ষ্ঠ ক্লাসের শিক্ষক পাঠদান করবে না এমন খবরে ক্লাসের অধিকাংশ শিক্ষার্থী শ্রেণিকক্ষ থেকে বেরিয়ে পড়ে। তবে শিক্ষক ক্লাসে এলে কয়েকজন ছাত্র এসে পাঠদানে যুক্ত হয়।
পরদিন (গতকাল) সোমবার যথারিতি সব শিক্ষার্থী শ্রেণিকক্ষে উপস্থিত হয়ে পাঠগ্রহণ শুরু করে। বেলা ১১টার দিকে কলেজের অধ্যক্ষ আমির হোসেন গাজী অ্যালুমিনিয়ামের পাইপ নিয়ে শ্রেণিকক্ষে প্রবেশ করে ৬ষ্ঠ ক্লাস না করা শিক্ষার্থীদের দাঁড় করান। পরে একে একে শাকিব, সিজান, আদনান, সোহেল, শিফাত, নয়ন, তাহসিন, আশরাফুল, আমিরুল, তাসফিকসহ ১৬ শিক্ষার্থীকে পাইপ দিয়ে পিটিয়ে গুরুতর জখম করেন।
এ খবর ছড়িয়ে পড়লে শিক্ষার্থী ও তাদের অভিভাবকদের মধ্যে ব্যাপক ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। আবার অনেক শিক্ষার্থী সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আহতের ছবি পোস্ট করে অধ্যক্ষের বিচার দাবি করেন। যা অল্প সময়ের মধ্যে ব্যাপকভাবে ভাইরাল হয়ে যায়। স্বাধীনূর রহমান নামে এক শিক্ষার্থী ফেসবুকে লেখেন, শিক্ষকরা গুরুজন, বাবা-মার মতো। সেখানে কলেজের প্রিন্সিপাল হয়ে এইভাবে মারছে। আমার বাবা-মা তথা কেউই কোনোদিন এভাবে মারে নাই। আমি আজ সারাটা ক্লাস শুধু ভাবছি কি হলো আমার সাথে! শুধু আমার সাথে যে তাই না। ক্লাসের অধিকাংশ ছাত্র আজ এই আঘাতের শিকার হইছে কেউ কম বা কেউ বেশি। যেখানে ছাত্রদের ওপর হাত তোলাই নিষেধ, সেখানে একে তো শিক্ষাকে ব্যবসা বানাইছেই তার ওপর এইসব হইতেছে!
আরেক আহত শিক্ষার্থী সোহেল মিয়া সাংবাদিকদের বলেন, অধ্যক্ষ স্যার ক্লাসে তিনটি অ্যালুমিনিয়ামের পাইপ ও পানি নিয়ে ঢুকেছে। আমাদের পাইপ দিয়ে পিটিয়ে ক্লান্ত হলে সেই পানি পান করে আবার পিটিয়েছে। আমরা শিক্ষকের কাছ থেকে এই ধরনের আচরণ আশা করিনি। অভিযোগের সম্পর্কে জানতে চাইলে নরসিংদীর পলাশ থানা সেন্ট্রাল কলেজের অধ্যক্ষ আমির হোসেন গাজী ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, আমি শিক্ষার্থীদের শাসন করেছি। এখন কেউ কেউ এটাকে ইস্যু বানিয়ে পরিবেশ ঘোলা করার চেষ্টা করছে। ছাত্র পেটানোর ঘটনা সম্পর্কে জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা গৌতম মিত্রের কাছে জানতে চাইলে বিষয়টি তাঁর জানা নেই বলে জানিয়ে বলেন, ছাত্র পেটানো কেন, কোনো শিক্ষকের ছাত্রকে তিরস্কার করে কথা বলার বিধানও আইনে নেই। খোঁজ নিয়ে এ ব্যাপারে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।