রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনের সড়কে জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের নেতাকর্মীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ হয়েছে। ছাত্রদলের নেতাকর্মীদের ইটপাটকেল নিক্ষেপ ও পুলিশ লাঠিচার্জ, টিয়ারগ্যাস ও ফাঁকা গুলি ছোড়ে। এতে বিএনপি এবং এর অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের কয়েকজন নেতাকর্মী আহত হন। এসআই রেজাউল ইসলামসহ কয়েকজন পুলিশও আহত হয়। পরে ঢাকা মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব রফিকুল আলম মজনুসহ ছাত্রদলের অন্তত ২০ নেতাকর্মীকে আটক করেছে পুলিশ।
সংঘর্ষের পর সন্ধ্যা থেকে বিপুল সংখ্যক পুলিশ বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয় অবরুদ্ধ করে রেখেছে। কার্যালয়ের ভেতর আটকে পড়েছেন দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী, যুবদলের সভাপতি সাইফুল আলম নিরব, সাধারণ সম্পাদক সুলতান সালাহউদ্দিন টুকু, নুরুল ইসলাম নয়ন,স্বেচ্ছাসেবক দলের আব্দুল কাদের জুয়েল, সাইফুল ইসলাম ফিরোজ প্রমুখ।
ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা অভিযোগ করেছেন, পুলিশ তাদের শান্তিপূর্ণ মিছিলে বাধা দিয়েছে। পল্টন থানার ওসি সালাউদ্দিন মিয়া জানান, থানা পর্যায়ের ছাত্রদলের কর্মী সমাবেশ ছিল। সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে পূর্ব ঘোষণা ছাড়াই হঠাৎ করে ছাত্রদলের বেশ কয়েকজন বিএনপি অফিসের সামনের রাস্তা অবরোধ করে মিছিল বের করে। এতে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায় এবং সেখানে থাকা অল্প সংখ্যক পুলিশ সদস্য তাদের মিছিল করতে নিষেধ করেন। কিন্তু তারা কোনো কথা না শুনে বিভিন্ন দিক থেকে পুলিশের উপর ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে। হামলায় পল্টন থানার এসআই রেজাউল ইসলামের মাথা ফেটে যায় এবং সহকারী কমিশনার আবুল হাসানসহ পাঁচজন পুলিশ সদস্য আহত হন। এই অবস্থায় পুলিশ লাঠিচার্জ, টিয়ারগ্যাস ছুঁড়ে করে তাদের ছত্রভঙ্গ করে দেয় এবং ঘটনাস্থল থেকে অন্তত ১০ জনকে আটক করেছে।
সহকারী কমিশনার আবুল হাসান জানান, কারণ ছাড়াই বিনা উস্কানিতে বিএনপি, ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা হামলা চালায়। রফিকুল আলম মজনু গ্রেফতার, রিজভীর নিন্দা রাত সাড়ে ৯টায় নয়া পল্টনের কার্যালয়ে এক জরুরি সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী অভিযোগ করেন,সন্ধ্যায় মাগরিবের নামাজের পরপরই পুলিশ বিনা উস্কানিতে বিএনপির নয়া পল্টনের অফিসের প্রধান ফটকের সামনে ছাত্রদলের নেতা-কর্মীদের ওপর হামলা চালায়। এতে অসংখ্য নেতা-কর্মী গুরুতর আহত হয় দাবি করেন তিনি।
পুলিশ অনেক নেতা-কর্মীকে গ্রেপ্তার করেছে দাবি করে তিনি বলেন, ঘটনার পরে রাত ৮ টার সময় বাসায় যাওয়ার উদ্দেশ্যে দলীয় কার্যালয় থেকে বের হওয়ার সময় ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির সদস্য সচিব ও গত সংসদ নির্বাচনে ফেনী-১ আসনের বিএনপি থেকে মনোনীত ধানের শীষের প্রার্থী রফিকুল আলম মজনুকে আটক করে পুলিশ।
এছাড়াও শ্যামপুর থানা বিএনপি নেতা কাজী ইমতিয়াজ আহমেদ টিপু, মৎস্যজীবী দলের যুগ্ম আহবায়ক জহিরুল ইসলাম বাশার, মুগদা থানা বিএনপি’র সদস্য মো. মজিবর, ছাত্রদলের স্টাফ মুন্নাসহ ২০ জনের অধিক নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। পুলিশী হামলায় ছাত্রদলের সাংগঠনিক সম্পাদক সাঈফ মাহমুদ জুয়েল, মহানগর পশ্চিম ছাত্রদলের সদস্য সচিব আশরাফুল ইসলাম মামুন, যুগ্ম আহবায়ক আকরাম আহমেদ, তাইফুর রহমান ফুয়াদসহ ১৫ জনের অধিক নেতাকর্মী আহত হয়। বিএনপি এবং অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের প্রায় ৩০/৩৫টি মোটরসাইকেল উঠিয়ে নিয়ে গেছে পুলিশ। আমি পুলিশী এই হামলার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি এবং অবিলম্বে রফিকুল আলম মজনুসহ আটককৃত নেতাকর্মীদের নিঃশর্ত মুক্তির দাবী জানাচ্ছি।