শুক্রবার (১০ নভেম্বর) বেলা ১১টায় ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি মিলনায়তনে সন্মিলিত শিক্ষা আন্দোলনের সংবাদ সম্মেলনে এসব দাবি জানানো হয়।
নতুন কারিকুলামের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের উচ্চশিক্ষা বাধাগ্রস্ত হবে দাবি করে বলা হয়, এই কারিকুলাম অনুযায়ী নবম শ্রেণিতে গিয়ে শিক্ষার্থীদের আগ্রহ অনুযায়ী বিভাগ বা বিষয় বেছে নেওয়ার সুযোগ থাকছে না। পদার্থবিজ্ঞান, রসায়ন ও জীববিজ্ঞান মিলিয়ে একটি বিজ্ঞান বই এবং উচ্চতর গণিত ও গণিত মিলিয়ে একটি গণিতে বই সবার পাঠের জন্য বানানো হয়েছে। ফলে বিজ্ঞানে আগ্রহী শিক্ষার্থীরা এখন আগের চেয়েও কম বিজ্ঞান ও গণিত শিখবে। আমাদের আশঙ্কা এতে তারা উচ্চশিক্ষায় গিয়ে ব্যর্থ হবে।
তারা আরও বলেন, এই কারিকুলামে সাময়িক পরীক্ষার মতো লিখিত পরীক্ষা নেই। এর বদলে রয়েছে প্রতিদিনের শেখার মূল্যায়ন এবং সামষ্টিক মূল্যায়নের নামে দলগত কাজ, প্রোজেক্ট বা অ্যাসাইনমেন্ট। এগুলো কীভাবে করতে হবে তার কিছুই শিক্ষার্থীরা বুঝতে পারছে না, শিক্ষকও বুঝতে পারছেন না। এক-এক সময়ে এক-এক রকম নির্দেশনা আসছে। অপর্যাপ্ত শিক্ষক আর ঘিঞ্জি ক্লাসের মধ্যে অতিরিক্ত শিক্ষার্থী নিয়ে ক্লাস বা মূল্যায়ন কিছুই সঠিকভাবে হচ্ছে না। ফলে অভিভাবকদেরও বাড়তি টাকা ও সময় ব্যয় হচ্ছে।
এছাড়া এই কারিকুলাম ও পাঠ্যবইয়ে কী আছে তার চেয়ে বড় বিষয় হলো, কী হচ্ছে বা কী ঘটছে। এই কারিকুলামের ফলে শুধু শিক্ষার্থীরা নয়, তাদের সঙ্গে তাদের অভিভাবক এবং শিক্ষকরাও চরম নৈরাজ্যকর এক পরিস্থিতির মধ্যে পড়েছে জানিয়ে এ অবস্থা থেকে রেহাই চান অভিভাবকরা।
এসময় তারা আগামী ১৪ নভেম্বর বেলা ১১টা থেকে সাড়ে ১২টা পর্যন্ত সারাদেশের সব স্কুলের সামনে অভিভাবক সমাবেশ এবং ডিসি বরাবর স্মারকলিপি প্রদান। ২৪ নভেম্বর সকাল ১০টায় শহীদ মিনারে অভিভাবক সমাবেশের কর্মসূচি ঘোষণা দেন। একইসঙ্গে সংগঠনটির পক্ষ থেকে আট দফা দাবি জানানো হয়। এগুলো হলো:
১. শিক্ষানীতিবিরোধী নতুন কারিকুলাম সম্পূর্ণ বাতিল করতে হবে।
২. নাম্বারভিত্তিক ২টা সাময়িক লিখিত পরীক্ষা (৬০ নাম্বার) চালু রাখতে হবে এবং ফ্রাসটেস্টগুলোকে ধারাবাহিক মূল্যায়ন (৪০ নাম্বার) হিসাবে ধরতে হবে।
৩. নবম শ্রেণি থেকেই শিক্ষার্থীর আগ্রহ অনুযায়ী বিষয় নির্বাচনের সুযোগ অথবা বিজ্ঞান বিভাগ রাখতে হবে।
৪. ত্রিভুজ, বৃত্ত, চতুৰ্ভুজ ইত্যাদি নির্দেশক বা ইন্ডিকেটর বাতিল করে নাম্বার ও গ্রেডভিত্তিক মূল্যায়ন পদ্ধতি রাখতে হবে।
৫. শিখন ও অভিজ্ঞতাভিত্তিক ক্লাসের ব্যয় সরকারকে বহন করতে হবে এবং স্কুল পিরিয়ডেই সব প্রোজেক্ট সম্পন্ন হতে হবে।
৬. শিক্ষার্থীদের দলগত ও প্রোজেক্টের কাজে ডিভাইসমুখী হতে অনুৎসাহিত করতে হবে এবং তাত্ত্বিক বিষয়ে অধ্যয়নমুখী করতে হবে।
৭. প্রতি বছর প্রতি ক্লাসে নিবন্ধন ও সনদ প্রদানের সিদ্ধান্ত বাতিল করতে হবে, প্রাথমিক ও জুনিয়র বৃত্তি পরীক্ষা চালু রাখতে হবে এবং এসএসসি ও এইচএসসি ২টা পাবলিক পরীক্ষা বহাল রাখতে হবে।
৮. সব সময়ে সব শ্রেণিতে নতুন কারিকুলাম বাস্তবায়নের আগে অবশ্যই তা মন্ত্রিপরিষদ এবং সংসদে উত্থাপন করতে হবে।