মঙ্গলবার (৪ মার্চ) দুপুরে উপজেলার নাজিরপুর বাজারে এই মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়। ফিরোজ আহমেদ নিজেকে গুরুদাসপুর উপজেলা বিএনপির সাবেক সহসভাপতি বলে মানববন্ধনে উল্লেখ করেন।
ফিরোজ আহমেদ বলেন, এক স্কুলছাত্রীর বাবা তার নামে ধর্ষণের মিথ্যা মামলা করেন। এতে তৎকালীন ওসি আব্দুল মতিন ও স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান আইয়ুব আলীর সংশ্লিষ্ঠতা উল্লেখ করে সবার বিচার দাবি করেন তিনি।
তবে স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ২০২২ সালের ২ অক্টোবর সকাল ১০টার দিকে এক এসএসসি পরীক্ষার্থী ব্যবহারিক পরীক্ষা দিতে নাটোরের গুরুদাসপুর উপজেলার মরিয়ম মেমোরিয়াল বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে যান। পরীক্ষা শেষে সাড়ে ১০টার দিকে বিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের সামনে অবস্থানকালে একই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ফিরোজ আহমেদ তাকে একটি মাইক্রোবাসে উঠিয়ে নিয়ে চলে যান। পরে রাজশাহীর এক বাসায় আটকে রেখে অস্ত্রের ভয়ভীতি দেখিয়ে কয়েক দফায় মেয়েটিকে ধর্ষণ করেন ফিরোজ। পরে ওইদিন রাতে পরীক্ষার্থীর মা অপহরণের অভিযোগ এনে প্রধান শিক্ষক ফিরোজ আহমেদসহ তিনজনের নাম উল্লেখ করে থানায় মামলা দায়ের করেন। এরপরেই পুলিশ অভিযানে নেমে তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় ভুক্তভোগীকে উদ্ধার করে। পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে প্রধান শিক্ষক ফিরোজ পালিয়ে যান।
এ ঘটনায় সে সময় প্রধান শিক্ষক ফিরোজ আহমেদের দৃষ্টান্তমূলক বিচারের দাবিতে ফুঁসে উঠেছিলেন এলাকাবাসী। পরে ঘটনাটি দেশজুড়ে চাঞ্চল্য সৃষ্টি করলে র্যাব অভিযান চালিয়ে ফিরোজকে গ্রেপ্তার করে। দীর্ঘদিন কারাগারে থাকার পর জামিনে মুক্ত হয়ে অভিযুক্ত ফিরোজ ভুক্তভোগীর পরিবারসহ মামলার সাক্ষীদের মারপিট, মামলা ও হুমকিসহ নানা অপতৎপরতা শুরু করেন।
এ বিষয়ে কথা বলতে গুরুদাসপুর থানার সাবেক ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল মতিনের মুঠোফোনে কল দিলে তার ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।
গুরুদাসপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. গোলাম সারওয়ার হোসেন ঢাকা পোস্টকে বলেন, শিক্ষককর্তৃক ছাত্রী ধর্ষণের ওই মামলাটি পুলিশ তদন্ত করে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেছে। প্রধান শিক্ষকের (ফিরোজ আহমেদ) বিরুদ্ধে অভিযোগের সত্যতা প্রাপ্তি সাপেক্ষে অভিযোগপত্র দেওয়া হয়। মামলাটি বিচারাধীন রয়েছে।
সুশাসনের জন্য নাগরিকের (সুজন) নাটোর জেলার যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বুলবুল আহমেদ ঢাকা পোস্টকে বলেন, এটা চরম ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচরণ। একজন অপরাধী যার এই সময়ে শাস্তি হওয়া প্রয়োজন ছিল। অথচ এই ঘটনায় এখন সে উল্টো একটি রাজনৈতিক দলের পরিচয় বহন করে মানববন্ধন করছেন। এটা আইনের প্রতি বৃদ্ধাঙুলি দেখানো বলে আমরা মনে করি। এই ধরনের অপরাধীদের কঠোর আইনের আওতায় নিয়ে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেওয়া প্রয়োজন না হলে অপরাধ কর্মকাণ্ডকে উৎসাহিত করা হবে।