ভারতীয় সিনেমা প্রদর্শন করা হলে দেশের চলচ্চিত্র শিল্পের ক্ষতি নয়, বরং উপকার হবে বলে মন্তব্য করেছেন তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ।
তিনি বলেন, বাংলাদেশের প্রেক্ষাগৃহে বছরে দশটি ভারতীয় সিনেমা প্রদর্শন করা হলে এদেশের চলচ্চিত্র শিল্পের কোনো ক্ষতি হবে না। বরং আরও উপকৃত হবে।
বুধবার (২৬ এপ্রিল) সচিবালয়ে মন্ত্রণালয় সভাকক্ষে সম্মিলিত চলচ্চিত্র পরিষদ নেতাদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে তিনি এই কথা বলেন। এসময় পরিচালক সমিতির সভাপতি কাজী হায়াত, সদস্য এসডি রুবেল, চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির সভাপতি চিত্রনায়ক ইলিয়াস কাঞ্চন, সেক্রেটারি চিত্রনায়িকা নিপুণ, চিত্রনায়ক ফেরদৌস আহমেদ, বাংলাদেশ চলচ্চিত্র প্রদর্শক সমিতির উপদেষ্টা সুদীপ্ত দাসসহ আরও অনেকে উপস্থিত ছিলেন।
তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী বলেন, ‘দেশে ভারতীয় সিনেমা মুক্তি পেলে চলচ্চিত্রের মান বাড়বে ও প্রেক্ষাগৃহের সংখ্যাও বাড়বে। মানুষ হলমুখী হবে, অনেক হল খুলবে, তখন আমাদের চলচ্চিত্রের জন্য আরও বড় জায়গা তৈরি হবে।’
ভারতীয় ছবির মাধ্যমে পাকিস্তানের চলচ্চিত্রের অবস্থার উন্নতি হয়েছে জানিয়ে তথ্যমন্ত্রী জানান, পাকিস্তানে হলের সংখ্যা কমতে কমতে ত্রিশ-পঁয়ত্রিশটিতে নেমে এসেছিল। তখন তারা ভারতীয় হিন্দি ছবি আমদানি শুরু করে দেয়। এরপর হলের সংখ্যা বেড়ে এক হাজার ২০০ হয়েছে। তাদের চলচ্চিত্রের মানও অনেক উন্নত হয়েছে।
ড. হাছান মাহমুদ বলেন, ‘আমাদের দেশেও ভালো ভালো ছবি হচ্ছে। সামাজিক ছবি প্রচুর হচ্ছে। ছবি থেকে অশ্লীলতা বিদায় নিয়েছে। সামাজিক ও অ্যাকশনধর্মী ছবি হচ্ছে। আমাদের চলচ্চিত্র ঘুরে দাঁড়িয়েছে। করোনা মহামারি না হলে এরমধ্যে আরও অনেক সিনেমা হল চালু হয়ে যেতো। দেশে সিনেপ্লেক্সের সংখ্যাও বাড়ছে।’
একটি চলচ্চিত্র যাদুঘর করা যেতে পারে বলে মন্তব্য করে তিনি বলেন, চলচ্চিত্র শিল্পের জন্য একটি যাদুঘর হতে পারে। এফডিসিতে নতুন ভবন হওয়ার পর সেটা করা হবে।
হাছান মাহমুদ বলেন, বাংলাদেশে যেভাবে বিরোধী দল সকাল-বিকাল-সন্ধ্যা, মাঝেমাঝে রাতের বেলা, সরকারের বিরুদ্ধে বিষোদগার করছে, যেভাবে রাজনৈতিক কর্মসূচি পালন করছে, তা পাশের দেশ ভারতেও নেই। আমি বিএনপিকে বেশি দূরে যেতে বলবো না। তারা যেন ভারতের দিকে একটু তাকিয়ে দেখে।
জামিনে মুক্তির পর বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, ছোট কারাগার থেকে বড় কারাগারে প্রবেশ করেছি। এ বিষয়ে জানতে চাইলে আওয়ামী লীগের এই যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘রিজভী কারাগার থেকে বের হয়ে যে বক্তব্য রেখেছেন, তাতেই প্রমাণিত হয় যে বাকস্বাধীনতা এ দেশে নিশ্চিত আছে। তিনি ছোট কারাগার থেকে বড় কারাগারে এসেছেন। তিনি যদি আবার ছোট কারাগারে যেতে চান, তাহলে সরকার ব্যবস্থা নিতে পারে।’
আমাদের দেশের গণতান্ত্রিক চর্চা ভারতসহ অনেক দেশের চেয়েও অনেক ক্ষেত্রে উন্নত। বাংলাদেশে গণমাধ্যমের স্বাধীনতা অনেক বেশি বলে মন্তব্য করেন ড. হাছান মাহমুদ।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, ভারতে বিরোধীদলীয় নেতা রাহুল গান্ধীর একটি বক্তব্যের কারণে দুই বছরের কারাদণ্ড হয়েছে, সংসদ সদস্য পদ চলে গেছে। তার বিরুদ্ধে যিনি মামলা করেছেন, তিনি ভারতের ক্ষমতাসীন দল বিজেপির একজন সদস্য ও এমপি ছিলেন। আমাদের দেশে প্রধানমন্ত্রী থেকে শুরু করে আমাদের দল ও নেতাদের বিরুদ্ধে যেভাবে বক্তব্য রাখা হয়, সেজন্য কি আমরা আদালতে গিয়েছি? এখান থেকেই বোঝা যায়, তাদের বাকস্বাধীনতা ও দেশে গণতন্ত্র কতটুকু আছে।