দেশব্যাপী শুরু হলো শেখ রাসেল কুইজ প্রতিযোগিতা। ১৮ বছর বয়সী শিশু-কিশোর এতে অংশ নিতে পারবে। সঠিক উত্তর দাতাকে দেওয়া হবে কোর আই ৭ জেনারেশন মানের ল্যাপটপ। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কনিষ্ঠপুত্র শেখ রাসেলের জন্মদিন ১৮ অক্টোবরকে ‘শেখ রাসেল দিবস-২০২১’ হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে। এই দিবস উপলক্ষে বাংলাদেশ সরকারের তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগ নিয়েছে বিশেষ কার্যক্রম। রোববার (৩ অক্টোবর) তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি অধিদপ্তর ‘শেখ রাসেল দিবস-২০২১’ উপলক্ষে ‘শেখ রাসেল ওয়েবসাইট ও অনলাইন কুইজ প্রতিযোগিতা উদ্বোধন’ শীর্ষক একটি সংবাদ সম্মেলন আয়োজন করে।
রাজধানীর আগারগাঁওয়ের আইসিটি টাওয়ারের বিসিসি অডিটোরিয়ামে এর আয়োজন করা হয়। আয়োজনে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক। সংবাদ সম্মেলনটিতে আইসিটি বিভাগের সিনিয়র সচিব এন এম জিয়াউল আলম পিএএর সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জাতীয় শিশু-কিশোর পরিষদের প্রতিষ্ঠাতা মহাসচিব কে এম শহীদুল্লাহ।
এছাড়া অনুষ্ঠানটিতে স্বাগত বক্তব্য দেন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (অতিরিক্ত সচিব) এ বি এম আরশাদ হোসেন।
উদ্বোধন অনুষ্ঠানে জুনাইদ আহমেদ পলক বলেন, আমাদের উদ্দেশ্য শেখ রাসেলের শৈশব তুলে ধরা। মুক্তিযুদ্ধের প্রতিটি স্তরে শেখ রাসেলের ১০ বছর জড়িত। শেখ রাসেল মানে অদম্য এক সাহস-বিশ্বাস। বিশ্বে আর কোনো শিশু শেখ রাসেলের মতো নির্মমতার শিকার যাতে না হয় সেই বিষয় তুলে ধরা হবে। বাংলাদেশের মাটিতে যেন এমন কলংকজনক অধ্যায় না আসে।
তিনি আরো বলেন, সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কনিষ্ঠপুত্র শেখ রাসেলকে জাতির পিতা ও বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুননেছা মুজিবসহ অন্যান্যদের সঙ্গে ১৫ আগস্ট ১৯৭৫ সালে অত্যন্ত নির্মম ও নিষ্ঠুরভাবে হত্যা করা হয়। শিশু শেখ রাসেলের এ নির্মম হত্যাকাণ্ড ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টের কলংকময় কালো রাতকে অধিকতর কলংকিত করেছে। শেখ রাসেল ছিলেন মায়ের অত্যন্ত আদরের সন্তান ও সবার স্নেহে ছিলেন ধন্য। শিশুদের বন্ধু ও গরিব দুঃখী মানুষের সাহায্যকারী। নিজে কম খেয়ে আর্ত মানবতার সেবাই ছিল তার জীবনের ব্রত ও উদ্দেশ্য। আজকের শিশুরা শেখ রাসেলের জীবনাদর্শ থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে আগামীতে উন্নত বাংলাদেশকে পরিচালিত করতে ও নেতৃত্ব দিতে পারবে। প্রতিমন্ত্রী আরও বলেন, শেখ রাসেলের জন্ম ১৯৬৪ সালের ১৮ অক্টোবর। প্রতিবছর ১৮ অক্টোবর ‘শেখ রাসেল দিবস’ পালনের মাধ্যমে ভবিষ্যৎ বাংলাদেশের কর্ণধার তথা বর্তমান প্রজন্মের শিক্ষার্থীদেরকে উন্নত বাংলাদেশের নাগরিক হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করার প্রত্যয়ে শিশু-কিশোরদের মধ্যে শেখ রাসেলের স্মৃতি অম্লান থাকবে। একইসঙ্গে আগামীদিনে বাংলাদেশকে নেতৃত্ব দানের ক্ষেত্রে শেখ রাসেলের দীপ্ত প্রত্যয়কে হৃদয়ে ধারণ করে তারা উন্নত বাংলাদেশ গড়ার শক্তিতে বলীয়ান হবে। এই পরিপ্রেক্ষিতে বিগত ২৩ আগস্টে অনুষ্ঠিত মন্ত্রিসভা বৈঠকে প্রতি বছর ১৮ অক্টোবর ‘শেখ রাসেল দিবস’ পালনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিল, বাংলাদেশ হাইটেক পার্ক কর্তৃপক্ষ, কন্ট্রোলার অব সার্টিফায়িং অথরিটিজ (সিসিএ) এবং ডিজিটাল সিকিউরিটি এজেন্সি, এটুআইসহ সব মন্ত্রণালয় এবং সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও ক্রীড়া সংগঠন শেখ রাসেল জাতীয় শিশু – কিশোর পরিষদের সার্বিক সহযোগিতায় ‘শেখ রাসেল দিবস’র অংশ হিসেবে শেখ রাসেল (www.sheikhrussel.gov.bd) নামক একটি ওয়েবসাইট ও অনলাইন কুইজ প্রতিযোগিতার প্ল্যাটফর্ম তৈরির কাজ ইতোমধ্যেই সম্পন্ন করেছে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগ। এই ওয়েবসাইটের মাধ্যমে শিশু-কিশোর তথা বিশেষ করে স্কুল ও কলেজের শিক্ষার্থীরা গভীরভাবে শেখ রাসেল সম্পর্কে জানতে পারবে।
দুরন্ত, প্রাণবন্ত শেখ রাসেলের জন্ম, শৈশব, শিক্ষাজীবন, এম, পরিবার, পছন্দ, তাঁর উপর রচিত গ্রন্থ, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও তাঁর পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কাটানো মুহূর্তসহ বিভিন্ন বিষয় তরুণ প্রজন্ম বিশেষ করে স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীরা শেখ রাসেল সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে জাতীয়ভাবে আয়োজন করা হচ্ছে ‘শেখ রাসেল অনলাইন কুইজ প্রতিযোগিতা’।
মূলত উল্লেখিত বিষয়সমূহ থেকে প্রশ্ন নির্ধারণ করা হবে ওই প্রতিযোগিতায়। প্রথমে আগ্রহী শিশু-কিশোরদের নিবন্ধনের জন্য ভিজিট করতে হবে quiz.sheikhrussel.Rov.bd এই ঠিকানায়।
এই প্রতিযোগিতায় ৮ থেকে ১৮ বছর বয়সের মধ্যকার যে কেউ অংশ নিতে পারবেন। এই আয়োজনে অংশ নিতে বয়সভিত্তিক ‘ক’ ও ‘খ’ নামক ২টি গ্রুপে বিভক্ত করা হয়েছে। নিবন্ধনকারির বয়স গ্রুপ ‘ক’র ক্ষেত্রে ৮ থেকে ১২ বছর এবং গ্রুপ ‘খ’র ক্ষেত্রে ১৩ থেকে ১৮ বছর বয়সসীমা নির্ধারণ করা হয়েছে। রোববার (৩ অক্টোবর) ১১ অক্টোবর (সোমবার) রাত ১২টা পর্যন্ত অনলাইনে নিবন্ধন করা যাবে। পরবর্তীতে, ‘গ্রুপ ক’ অর্থাৎ ৮ থেকে ১২ বছর বয়সের নিবন্ধনকারিরা ১২ অক্টোবর, মঙ্গলবার ৭টা থেকে ৮টার মধ্যে যেকোনো ১০ মিনিট এবং গ্রু ‘খ’ অর্থাৎ ১৩ থেকে ১৮ বছর বয়সের নিবন্ধনকারিরা ১৩ অক্টোবর (বুধবার) সন্ধ্যা ৭টা থেকে ৮টার মধ্যে যেকোনো ১০ মিনিট সময়ে অনলাইন প্রতিযোগিতায় অংশ নিতে পারবে।
এমসিকিউ পদ্ধতিতে সব প্রশ্নের উত্তরের জন্য চারটি বিকল্প থেকে একটি সঠিক উত্তর বাছাই করতে হবে। কম সময়ে সর্বোচ্চ সংখ্যক উত্তরদাতা থেকে বিজয়ী নির্বাচন করা হবে। তবে চূড়ান্ত বিজয়ীদের ক্ষেত্রে বয়স যাচাই সাপেক্ষে পুরস্কার দেওয়া হবে। ‘ক’ ও ‘খ’ দুটো গ্রুপ থেকেই ৫ জন করে অর্থাৎ মোট ১০ বিজয়ীর প্রত্যেককে দেওয়া হবে কোর আই ৭ জেনারেশন মানের ল্যাপটপ। তবে একজন প্রতিযোগী একবারই অংশ নিতে পারবেন। ভুল কিংবা মিথ্যা তথ্য দিয়ে অংশ নিলে তাকে প্রতিযোগিতা থেকে বাতিল বলে গণ্য করা হবে।