দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে দু-একটি দল অংশ না নিলেও নির্বাচন গ্রহণযোগ্য হবে বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ছোট ছেলে শেখ রাসেলের ৬০তম জন্মদিন উপলক্ষে বুধবার (১৮ অক্টোবর) তার সমাধিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানানোর পর সাংবাদিকদের সামনে এমন মন্তব্য করেন তিনি।
ওবায়দুল কাদের বলেন, সংবিধান অনুযায়ীই নির্বাচন হবে। নির্বাচন হচ্ছে স্বাধীন নির্বাচন কমিশনারের অধীনে। নির্বাচন সংবিধানের সব নিয়ম মেনেই হবে। সে নির্বাচনে কেউ যদি অংশ না নেয়, সেটার জন্য নির্বাচন আটকে থাকবে না। অনেকে অংশ নেবে। বহু দল অংশ নেবে। এক-দুইটা দল অংশ না নিলে নির্বাচনের কী হবে? নির্বাচন কি অবৈধ হয়ে যাবে? আপনি না এলে আমি কী করব। নির্বাচনে অংশগ্রহণ করা আপনার অধিকার। এটা কারও দয়া নয়। কেউ দয়া করে ত্রাণ বিতরণ করছে না। আপনার অধিকার আপনি প্রয়োগ করবেন। নিজের অধিকার যদি কেউ প্রয়োগ না করে, সেটার জন্য তো তারাই দায়ী।
সেতুমন্ত্রী বলেন, জিয়াউর রহমান যে হত্যার রাজনীতি শুরু করেছিল তার বিরুদ্ধে লড়াই চলবে। বিএনপির হত্যার রাজনীতি বাংলার মাটি থেকে নির্মূল করতে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে লড়াই অব্যাহত থাকবে। শেখ রাসেলের মতো শিশুদের জন্য দেশকে সম্পূর্ণ নিরাপদ করে না তোলা পর্যন্ত লড়াই থাকবে।
বঙ্গবন্ধুর ছোট ছেলে শেখ রাসেল ১৯৬৪ সালের ১৮ অক্টোবর ধানমন্ডির ঐতিহাসিক বঙ্গবন্ধু ভবনে জন্মগ্রহণ করেন। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট মানবতার শত্রু ঘৃণ্য ঘাতকদের নির্মম বুলেট থেকে রক্ষা পাননি শিশু শেখ রাসেল। বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে নরপিশাচরা নির্মমভাবে তাকেও হত্যা করেছিল। তিনি ইউনিভার্সিটি ল্যাবরেটরি স্কুলের চতুর্থ শ্রেণির ছাত্র ছিলেন।
ঘাতকদের হাতে সেদিন একে একে প্রাণ হারিয়েছেন বঙ্গবন্ধুর সহধর্মিণী বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন নেছা মুজিব, বঙ্গবন্ধুর সন্তান শেখ কামাল, শেখ জামাল এবং পুত্রবধূ সুলতানা কামাল ও রোজি জামাল। পৃথিবীর এ জঘন্যতম হত্যাকাণ্ড থেকে বাঁচতে পারেননি বঙ্গবন্ধুর অনুজ শেখ নাসের, ভগ্নিপতি আবদুর রব সেরনিয়াবাত এবং তার ছেলে আরিফ ও সুকান্তবাবু, মেয়ে বেবি, বঙ্গবন্ধুর ভাগ্নে মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক শেখ ফজলুল হক মণি, তার অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী আরজু মণি এবং আবদুল নাঈম খান রিন্টু ও কর্নেল জামিলসহ পরিবারের ১৬ জন সদস্য ও ঘনিষ্ঠজন। বঙ্গবন্ধুর দুই কন্যা শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানা বিদেশে থাকায় তারা প্রাণে রক্ষা পান।
শেখ রাসেলের ৬০তম জন্মদিন উপলক্ষে আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে নানা কর্মসূচি হাতে নেওয়া হয়। সকাল সোয়া সাতটার আগে রাজধানীর বনানী কবরস্থানে শেখ রাসেলসহ ১৫ আগস্ট নিহত শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। পুষ্পস্তবক অর্পণ শেষে বঙ্গবন্ধুকন্যা কিছুক্ষণ নীরবে দাঁড়িয়ে থাকেন। পরে সেখানে সমাহিত স্বজনদের কবরে ফুলের পাপড়ি ছিটিয়ে দেন। এবং নিহত স্বজনদের স্মরণ করে দুই হাত তুলে মোনাজাত করেন।
সরকারপ্রধান চলে যাওয়ার পর ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগ, সহযোগী সংগঠন ও বিভিন্ন সামাজিক সাংস্কৃতিক সংগঠন শ্রদ্ধা নিবেদন করছে।