বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) ছাত্র আবরার ফাহাদ রাব্বী হত্যা মামলার রায় ঘোষণা করা হবে আজ রোববার। দুপুর ১২টায় ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল ১-এর বিচারক আবু জাফর মো. কামরুজ্জামান এ রায় ঘোষণা করবেন। সংশ্লিষ্ট আদালতের রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী আবু আব্দুল্লাহ ভূঁঞা যুগান্তরকে বলেন, আমরা ২৫ আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণে সক্ষম হয়েছি। আসামিদের সর্বোচ্চ সাজা প্রত্যাশা করছি। অন্যদিকে আসমিপক্ষের আইনজীবীরা বলেছেন, রাষ্ট্রপক্ষ অভিযোগ প্রমাণে ব্যর্থ হয়েছে। তারা আসামিদের খালাস পাবেন বলে আশা করছেন।
২০১৯ সালের ৫ অক্টোবর শেরেবাংলা হলের গেস্টরুমে আসামিরা সভা করে বুয়েটের ১৭তম ব্যাচের ছাত্র আবরারকে হত্যার সিদ্ধান্ত নেয়। পর দিন রাতে তাকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়। আবরার নিহতের ঘটনায় তার বাবা মো. বরকত উল্লাহ বাদী হয়ে ২০১৯ সালের ৭ অক্টোবর রাজধানীর চকবাজার থানায় মামলাটি করেন।
তদন্ত শেষে গত বছরের ১৩ নভেম্বর আদালতে মামলার চার্জশিট (অভিযোগপত্র) দেয় ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। ২৫ জনকে অভিযুক্ত করে এ চার্জশিট দেওয়া হয়। এর মধ্যে ১১ আসামি সরাসরি হত্যাকাণ্ডে অংশ নেন। বাকি ১৪ জনকে বিভিন্নভাবে সম্পৃক্ততার কারণে চার্জশিটে অন্তর্ভুক্ত করা হয়।
গত বছরের ২১ জানুয়ারি এ মামলার চার্জশিট গ্রহণ করেন আদালত। ওই বছরের ১৮ মার্চ ঢাকা মহানগর দায়রা জজ কেএম ইমরুল কায়েশ মামলাটি বদলির আদেশ দেন। এর পর একই বছরের ১৫ সেপ্টেম্বর ২৫ আসামির বিরুদ্ধে চার্জ (অভিযোগ) গঠনের মাধ্যমে মামলার আনুষ্ঠানিক বিচার শুরু হয়। গত ১৪ মার্চ এ মামলায় কারাগারে থাকা ২২ আসামি আত্মপক্ষ সমর্থনের শুনানিতে নিজেদের নির্দোষ দাবি করেন। অপর তিন আসামি পলাতক থাকায় আত্মপক্ষ শুনানি করতে পারেনি। এর পর কয়েকজন আসামি নিজেদের পক্ষে সাফাই সাক্ষ্যও দেন। ৭ সেপ্টেম্বর মামলায় কিছু ত্রুটি থাকায় রাষ্ট্রপক্ষ পুনরায় চার্জ গঠনের আবেদন করে।
৮ সেপ্টেম্বর আদালত ২৫ আসামির বিরুদ্ধে পুনরায় চার্জ গঠনের আদেশ দেন। এর পর ১৪ সেপ্টেম্বর আত্মপক্ষ শুনানিতে ২২ আসামি ফের নিজেদের নির্দোষ দাবি করেন। এর পর আসামিপক্ষ ও রাষ্ট্রপক্ষের যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষে মামলাটি রায়ের পর্যায়ে পৌঁছায়। মামলার চার্জশিটে বলা হয়, আসামিরা যোগসাজশে শিবির সন্দেহে আবরারের বিরুদ্ধে মিথ্যা, বানোয়াট, ভিত্তিহীন অভিযোগ এনে নির্মমভাবে পিটিয়ে তাকে হত্যা করেন। চার্জশিটে আবরার ফাহাদ রাব্বী হত্যা মামলায় আবরারের রুমমেট মিজানুর রহমান ওরফে মিজানকে হত্যার মূল হোতা হিসাবে চিহ্নিত করা হয়। তিনিই আবরারকে শিবির বলে সন্দেহ প্রকাশ করেন।
এর পর শেরেবাংলা হলের গেস্টরুমে কয়েকজন আসামি সভা করে এ হত্যার সিদ্ধান্ত নেন। পরে আবরারকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়। চার্জশিটে অভিযুক্ত ২৫ জনের মধ্যে এজাহারভুক্ত ১৯ জন এবং তদন্তে আগত ৬ জন রয়েছেন। এ ছাড়া অভিযুক্তদের মধ্যে আটজন আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। ২৫ আসামির মধ্যে বুয়েট শিক্ষার্থী মোর্শেদুজ্জামান জিসান, এহতেশামুল রাব্বি তানিম ও মোস্তবা রাফিদ পলাতক। বাকি ২২ জন কারাগারে।