১২ সেপ্টেম্বর রবিবার দীর্ঘ প্রায় দেড় বছর পর প্রাথমিক বিদ্যালয় খুলে দিয়ে শ্রেণি পাঠদান শুরু করা হবে। সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রতিদিন পঞ্চম শ্রেণিসহ অন্য একটি শ্রেণির শিক্ষার্থীদের বিদ্যালয়ে আনা হবে। দু’টি শ্রেণির পাঠদান চলবে সর্বোচ্চ তিন ঘণ্টা। প্রত্যেক শ্রেণির বাংলা, গণিত ও ইংরেজি; এই বিষয় পড়ানো হবে।
প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতরের মহাপচিালক আলমগীর মুহম্মদ মনসুরুল আলম বলেন, ‘পঞ্চম শ্রেণিসহ অন্য একটি শ্রেণির শিক্ষার্থীরা বিদ্যালয়ে আসবে। সর্বোচ্চ দুই শ্রেণির শিক্ষার্থীদের বিদ্যালয়ে আনা হবে। নির্দেশনা বিদ্যালয়গুলোয় পাঠানো হয়েছে।’ কোভিড-১৯ সংক্রান্ত জাতীয় কারিগরি পরামর্শক কমিটির সুপারিশ অনুযায়ী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রাঠদান কার্যক্র চালু করতে নির্দেশনা পাঠানো হয়েছে। নির্দেশনা অনুযায়ী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শ্রেণি পাঠদান চলবে।
সপ্তাহের প্রত্যেক দিনই পঞ্চম শ্রেণির পাঠদান চলবে বিদ্যালয়ে। পঞ্চম শ্রেণির সঙ্গে সপ্তাহের প্রথম দিন শনিবার চতুর্থ শ্রেণি, রবিবার তৃতীয় শ্রেণি, সোমবার দ্বিতীয় শ্রেণি, মঙ্গলবার প্রথম শ্রেণির পাঠদান করা হবে। সপ্তাহের বাকী দুদিন বুধ ও বৃহস্পতিবার শুধু পঞ্চম শ্রেণির পাঠদান চলবে। সকাল সাড়ে ৯টা থেকে ৯টা ৪০ মিনিট কোভিড-১৯ সচেতনতা বিষয়ে অবহিত করবেন শ্রেণি শিক্ষক। ৯টা ৪০ মিনিট থেকে ১০টা ২৫ মিনিট পর্যন্ত বিষয় ভিত্তিক শ্রেণি পাঠদান চলবে। এরপর ১০টা ৩০ মিনিট থেকে ১১টা ১৫ মিনিট পর্যয়ন্ত দ্বিতীয় ক্লাস এবং তৃতীয় ক্লাস চলবে ১১টা ২০ মিনিট থেকে ১২টা ৫ মিনিট পর্যন্ত।
দৈনিক সমাবেশ বন্ধ রেখে শ্রেণিকক্ষে শিক্ষার্থীরা শিক্ষকের তত্ত্বাবধানে নিরাপদ দূরত্ব রেখে নিজ আসনে সীমিত পরিসরে হালকা শারীরিক কসরত (পিটি) অনুশীলন করতে পারে। তবে এ ক্ষেত্রে শিক্ষার্থীদের শ্বাসকষ্টের অনুভবের বিষয়ে সচেতন থেকে প্রয়োজনে শারীরিক কসরত থেকে অব্যাহতি দিতে হবে।
শ্রেণিকক্ষে শিক্ষার্থীদের পরস্পর থেকে শারীরিক দূরত্ব নিশ্চিতে আসন বিন্যাস করে প্রতি বেঞ্চে একজন শিক্ষার্থীকে বসাতে হবে। শারীরিক দূরত্ব রক্ষার বিষয়টি নিশ্চিত করতে একই শ্রেণিকে একাধিক গ্রুপে ভাগ করে একাধিক কক্ষে ও একাধিক শিক্ষকের সহায়তায় পাঠদান করতে হবে। পরবর্তী নির্দেশনা না দেওয়া পর্যন্ত প্রাক-প্রাথমিকের শ্রেণি কার্যযক্রম বন্ধ থাকবে। টিফিন বিরতি ব্যতিত শ্রেণি কার্যক্রম সর্বোচ্চ ৩ ঘণ্টার মধ্যে পরিচালিত হবে।
শ্রেণি কার্যক্রমে গ্রুপ ওয়ার্ক ও পেয়ার-ওয়ার্কের মত সম্ভাব্য স্বাস্থ্যঝুঁকি সৃষ্টিকারী শিখন কাজ আপাতত পরিহার করতে হবে। শিক্ষকরা মাস্ক পরেই শ্রেণি কক্ষে পাঠদান কার্যক্রম পরিচালনা করবেন ও শ্রেণিকক্ষে অবস্থানকারী শিক্ষার্থীদের মাস্ক পরিধান নিশ্চিত করবেন। বিদ্যালয়ে প্রবেশের পর নিরবিচ্ছিন্নভাবে প্রয়োজনীয় পাঠদান কার্যক্রম পরিচালনা শেষে স্বাস্থ্যবিধি মেনে সারিবদ্ধভাবে শিক্ষার্থীদের বিদ্যালয় ত্যাগ নিশ্চিত করতে হবে।
সকল শ্রেণিকক্ষে শিক্ষার্থীদের একত্রে শ্রেণিকক্ষ ত্যাগ করে বিদ্যালয়ে স্বাস্থ্যঝুঁকি থেকে বিরত রাখতে শিক্ষকদের তত্ত্বাবধানে পর্যায়ক্রমে একের পর এক কক্ষের শিক্ষার্থীদের বিদ্যালয় ও সংলগ্ণ এলাকা ত্যাগ করতে হবে। একধিক শিফটে শ্রেণি কার্যক্রম পরিচালিত হলে পূর্ববর্তী শিফটের পাঠদান সমাপ্তি ও পরবর্তী শিফটের পাঠদান শুরুর মাঝে কমপক্ষে ৩০ মিনিটের বিরতি রেখে বিদ্যালয় ও সংলগ্ন এলাকায় জনসমাগম প্রতিরোধ করতে হবে।
একই গ্লাসে পানি পান থেকে বিরত রাখতে শিক্ষার্থীরা প্রয়োজনে পানির বোতল আনবে। শিক্ষার্থীদের শ্রেণিকক্ষে পাঠদানের পাশাপাশি ঘরে বসে শিখি, বাংলাদেশ বেতার ও সংসদ টেলিভিশনে পাঠদান কার্যক্রম, গুগলমিটের মাধ্যমে অনলাইন পাঠদান কার্যক্রম ক্লাস রুটিনের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে অব্যাহত রাখতে হবে।
কোনও শিক্ষার্থী নিজে বা পরিবারের সদস্যদের কোভিড লক্ষণ ও আক্রান্ত হলে তারা বিদ্যালয়ে আসতে পারবে না, তারা ‘ঘরে বসে শিখি’ এবং অনলাইন পাঠদানে অংশগ্রহণ করবে। কোনও এলাকায় কোভিড-১৯ সংক্রমণের হার স্বাস্থ্য অধিদফতর নির্দেশিত বিপৎসীমা অতিক্রম করলে উপজেলা করোনা প্রতিরোধ কমিটি তাৎক্ষণিকভাবে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতর ও জেলা প্রশাসনকে অবহিত রেখে সংশ্লিষ্ট এলাকার প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোয় পাঠদান কার্যক্রম সাময়িকভাবে বন্ধ ঘোষণা করবে।