দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের আর মাত্র কয়েক মাস বাকি। নির্বাচনের সময় যতই ঘনিয়ে আসছে রাজনৈতিক উত্তাপ ততই বাড়ছে। সরকারের পতনের এক দফা দাবিতে ধারাবাহিক কর্মসূচি পালন করছে বিএনপি ও তাদের সমমনা দলগুলো। অন্যদিকে রাজপথে সরব ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগও। দুই দলের পাল্টাপাল্টি কর্মসূচিতে কিছুদিন ধরেই উত্তপ্ত রাজনৈতিক ময়দান। প্রধান দুই দলের কর্মসূচি ঘিরে আজও ঢাকায় এমন উত্তাপ থাকবে।
ঢাকার প্রবেশমুখে অবস্থান কর্মসূচিতে হামলার প্রতিবাদে আজ সোমবার (৩১ জুলাই) সারাদেশের সকল জেলা ও বিভাগীয় শহরে জনসমাবেশের কর্মসূচি ঘোষণা করেছে বিএনপি। ঢাকার জনসমাবেশটি শুরু হবে বেলা ৩টায় রাজধানীর ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে।
অন্যদিকে একইদিন শান্তি সমাবেশ ও বিক্ষোভ পালন করবে ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগ। নগরীর দুই স্থানে কর্মসূচি পালন করবে ক্ষমতাসীন দলটি। কর্মদিবসে দুই দল কর্মসূচি ডাকায় রাজধানী যানজটে স্থবির হতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকারের পদত্যাগ ও নির্দলীয় সরকারের অধীনে নতুন নির্বাচনসহ নানা দাবিতে অনেকদিন ধরেই আন্দোলন করে আসছে বিরোধী দল বিএনপি।
গত বছরের ডিসেম্বরে ঢাকার গোলাপবাগের সমাবেশ থেকে ১০ দফার ঘোষণা দিয়েছিল বিএনপি। এসব দাবির মধ্যে ছিলো বর্তমান সংসদ বিলুপ্ত ঘোষণা করে ক্ষমতাসীন সরকারের পদত্যাগ, ১৯৯৬ সালের সংবিধান সংশোধনের আলোকে নিরপেক্ষ নির্বাচনকালীন সরকার বা অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠন এবং খালেদা জিয়াসহ সব বিরোধী দলীয় নেতাকর্মীদের সাজা বাতিল।
গত ১২ জুলাই নয়াপল্টনে এক সমাবেশ থেকে ‘সরকারের পদত্যাগের এক দফা’ দাবি ঘোষণা করে সমমনা দল ও জোটকে নিয়ে যুগপৎ আন্দোলনের ঘোষণা দেয় বিএনপি। এরপর এই দাবিতে তারা দুই দিন ঢাকাসহ সারাদেশে পদযাত্রার কর্মসূচি ঘোষণা পালন করেছে।
কর্মসূচির অংশ হিসেবে সর্বশেষ গত শনিবার ঢাকার সব প্রবেশপথে পাঁচ ঘণ্টার অবস্থান কর্মসূচি পালন করে দিলটি। অবস্থান কর্মসূচি পালনের সময় পুলিশ ও ক্ষমতাসীনদের সঙ্গে বিএনপি নেতাকর্মীদের ব্যাপক সংঘর্ষ হয়। এতে ২০ পুলিশ সদস্যসহ বেশ কয়েকজন আহত হয়।
এর প্রতিবাদে সোমবার (৩১ জুলাই) সারাদেশের সকল জেলা ও বিভাগীয় শহরে জনসমাবেশের ডাক দেয় বিএনপি। ঢাকার জনসমাবেশটি শুরু হবে বেলা তিনটায় সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে।
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেন, আমরা নয়াপল্টনে জনসমাবেশ করতে চেয়েছিলাম, পরবর্তীতে আলোচনার প্রেক্ষিতে সেটি নয়াপল্টনের পরিবর্তে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এই জনসমাবেশে দলের নেতাকর্মীদের পাশাপাশি রাজধানীবাসীকে অংশ নেওয়ার আহ্বান জানাচ্ছি।
অন্যদিকে একইদিন আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে পাল্টা কর্মসূচি দেওয়া হয়েছে। ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ বজলুর রহমান ঢাকা মেইলকে এই তথ্য নিশ্চিত করে জানান, সোমবার মহানগর উত্তরের অধিভুক্ত দুটি স্থানে এই শান্তি সমাবেশ, একই সঙ্গে বিক্ষোভ পালিত হবে।
এর মধ্যে সকালে নগরীর মিরপুর-১ নম্বরে শান্তি সমাবেশে যোগ দেবেন নগর আওয়ামী লীগ সভাপতি নিজেই। থাকবেন স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা। বিকেলে বাড্ডা এলাকায় শান্তি সমাবেশ ও বিক্ষোভ পালিত হবে। সেখানে নেতৃত্ব দেবেন মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এস এম মান্নান কচি। এদিন শান্তি সমাবেশ বা বিক্ষোভ পালন করবে না মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগ।
সংগঠনটির দফতর সম্পাদক রিয়াজ উদ্দিন রিয়াজ জানিয়েছেন, সোমবার সকল থানা ওয়ার্ডে সর্বোচ্চ সতর্ক থাকবে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগ।
দেশের বড় দুটি দলের কর্মসূচি ঘিরে আজও রাজধানীর সড়কে হতে পারে তীব্র যানজট। ভোগান্তিতে পড়তে পারেন মানুষ। দুই দলের কর্মসূচি ঘিরে চাপা উত্তেজনা বিরাজ করছে নগরবাসীর মধ্যে। যেকোনো বিশৃঙ্খলা এড়াতে মাঠে থাকবে পুলিশসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীর সদস্যরা।