তেল-গ্যাসের বর্ধিত দাম প্রত্যাহার ও নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্বগতির প্রতিবাদে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে গণ অধিকার পরিষদের বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। সোমবার বিকালে অনুষ্ঠিত এই মানববন্ধনের মূল প্রতিপাদ্য ছিল ‘দাম কমাও, মানুষ বাঁচাও’। সমাবেশে গণ অধিকার পরিষদের আহ্বায়ক ড. রেজা কিবরিয়া বলেন, আমরা আগামীতে দেশের জনগণকে সাথে নিয়ে সরকার গঠন করতে চাই। তারুণ্য আমাদের সবচেয়ে বড় শক্তি। এই তরুণ্যকে সরকার কখনোই দমন করতে পারেনি। আজকে তেল-গ্যাসের মূল্য বৃদ্ধি কেন? কেন নিত্য প্রয়োজনীয় নিম্ন আয়ের মানুষের ক্রয়ক্ষমতার বাইরে?
কারণ বাজারের উপরে সরকারের নিয়ন্ত্রণ নেই। যে যার মত লুটেপুটে খাচ্ছে।এই অবৈধ, জবাবদিহিতাহীন, ভোটডাকাত সরকার কোনকিছুই নিয়ন্ত্রণ করতে পারছেনা। জনগণকে কষ্ট দিয়ে এই অবৈধ সরকার আর এক মুহুর্তও ক্ষমতায় থাকতে পারেনা। তাই গণ অধিকার আদায়ে সবাই রাস্তায় নামতে হবে। গণ অধিকার পরিষদের সদস্য সচিব নুরুল হক নুর বলেন, সরকার সব খেয়ে ফেলেছে, আছে শুধু খোসা। শেয়ারবাজার,ব্যাংক, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, মানুষের ধর্মীয় মূল্যবোধ ধ্বংস করছে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, সচিবালয় সব জায়গায় দলীয়করণ করে প্রতিষ্ঠানগুলোকে ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে নিয়ে এসেছে। দলীয় প্রতীকে স্থানীয় সরকার নির্বাচন করে গ্রামে-গঞ্জে সহিংসতা ছড়িয়ে দিয়েছে। নৌকায় ভোট না দিলে একে ৪৭ ব্যবহারের হুমকি হুমকি দিচ্ছে। এটাই প্রমাণ করে, সরকার অবৈধভাবে ক্ষমতায় থাকতে কিভাবে রাজনীতিতে দুর্বৃত্তায়ন ঘটিয়েছে।
ডাকসুর সাবেক এই ভিপি বলেন, জনগণের প্রতি দায়বদ্ধতা না থাকার কারণেই কোন ধরনের সমন্বয় না করে তেলের দাম লিটারে ১৫ টাকা বাড়িয়েছে। অথচ গত ৭ বছরে বিশ্ববাজারে তেলের দাম কম থাকলেও সরকার দাম না কমিয়ে ৪০ হাজার কোটি টাকা লাভ করছে, যা দিয়ে অন্তত ৬ মাস ভর্তুকি দেওয়া যায়। কিন্তু সরকার জনগণের পকেট থেকে টাকা লোপাট করতেই এই দাম বাড়িয়েছে। যার ভুক্তভোগী জনগণ। তেল-গ্যাসের বর্ধিত দাম প্রত্যাহার ও নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্যের দাম কমানো না হলে জনগণকে নিয়ে পরবর্তীতে ধারাবাহিক কর্মসূচি দেওয়া হবে।
সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক রাশেদ খাঁন বলেন, তেল- গ্যাসের দাম বেড়ে লাভবান হলো সরকার, বাস ও লঞ্চের ভাড়া বাড়ায় লাভবান হলো মালিকরা।বরাবরের মত জনগণের উপরে সব কিছু চাপিয়ে দেওয়া হলো। জনজীবনে হাহাকার। সরকার মানুষের সাথে প্রতারণা করছে। সরকার বলেছিলো ঘরে ঘরে চাকরি দিবে, কিন্তু এখন ঘরে ঘরে মানুষ না খেয়ে মরছে। ১০ টাকায় চাল খাওয়ানোর কথা বলে ৭০ টাকায় চাল খাওয়াচ্ছে। সিনিয়র যুগ্ম সদস্য সচিব মুহাম্মদ আতাউল্লাহ বলেন, দেশ আজ দুর্নীতিবাজ ও মাফিয়া সিন্ডিকেটের কবলে । তরুণ সমাজকে মাফিয়া ও দুর্নীতিবাজদের হাত থেকে দেশকে রক্ষা করতে হবে। আজকে সরকার আমাদের ভাতে ও ভোটে মারছে। ভাত ও ভোটের অধিকার রক্ষায় সকলে একতাবদ্ধ হওয়ার বিকল্প নেই।
যুগ্ম আহ্বায়ক ফারুক হাসানের সঞ্চালনায় বক্তব্য রাখেন গণ অধিকার পরিষদের যুগ্ম আহ্বায়ক সোহরাব হোসেন, সাদ্দাম হোসেন, সহকারি আহ্বায়ক তামান্না ফেরদৌস শিখা, সহকারী সদস্য সচিব শেখ খাইরুল কবির, সহকারী সদস্য সচিব এ্যাড. শিরিন আক্তার, যুব অধিকার পরিষদের ভারপ্রাপ্ত সদস্য সচিব মনজুর মোর্শেদ মামুন , সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক তারেক রহমান, শ্রমিক অধিকার পরিষদের সভাপতি আব্দুর রহমান, সাধারণ সম্পাদক সোহেল রানা এবং ছাত্র অধিকার পরিষদের সভাপতি বিন ইয়ামিন মোল্লা, সাধারণ সম্পাদক আরিফুল ইসলাম প্রমুখ।