তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, বাকশাল নিয়ে বিএনপি বিভ্রান্তি ছড়ায়। বাকশাল সম্পর্কে বিষোদগার করা হয়। জিয়াউর রহমানকে প্রথমে বাকশালের সদস্য করা হয়নি। সেনা, নৌ ও বিমান বাহিনীর প্রধানদের সদস্য করা হলেও জিয়াউর রহমান তখন উপ-প্রধান থাকায় তাকে সদস্য করা হয়নি। পরে দরখাস্ত করে বাকশালের সদস্য হয়েছিলেন জিয়াউর রহমান। তিনি বাকশালের পক্ষে পত্রিকায় নিবন্ধ লিখেছিলেন। সুতরাং আজ বিএনপি যে বাকশালের বিরুদ্ধে কথা বলে সে নৈতিক অধিকার তাদের নেই।
বৃহস্পতিবার (২৭ এপ্রিল) দুপুরে তথ্য অধিদপ্তরের সম্মেলন কক্ষে সুভাষ সিংহ রায় গ্রন্থিত ‘বঙ্গবন্ধুর দ্বিতীয় বিপ্লব ও বাকশাল’ বইয়ের মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানে এ কথা বলেন তিনি।
মন্ত্রী বলেন, ‘স্বাধীনতা যুদ্ধের পর ছয়জন সংসদ সদস্যকে গুলি করে হত্যা করা হয়। পাটের গুদামগুলোতে আগুন দেওয়া হচ্ছিল, হানাহানি হচ্ছিল। সেই প্রেক্ষাপটের মোকাবিলা করতে বঙ্গবন্ধু মনে করেছিলেন জাতিকে ঐক্যবদ্ধ করতে একটি প্লাটফর্মের নিচে আনা প্রয়োজন। সে পরিপ্রেক্ষিতেই বঙ্গবন্ধু বাকশাল গঠন করেছিলেন। বিভিন্ন দলের গুরুত্বপূর্ণ নেতাদের তখন বাকশালের কেন্দ্রীয় কমিটিতে সদস্য করা হয়েছিল। বাকশালের অধীনে তখন গণতান্ত্রিক চর্চা অনেক ভালো ছিল। সে সময় দুটি নির্বাচন হয়। ময়মনসিংহের একটি উপ-নির্বাচনে তখন সৈয়দ নজরুল ইসলামের ছোট ভাই নির্বাচন করে পরাজিত হয়েছিলেন। আরও এক উপ-নির্বাচনে আওয়ামী প্রার্থী পরাজিত হয়েছিলেন। বাকশালে একটি প্লাটফর্মেই সব রাজনৈতিক নেতারা বক্তৃতা দিতেন; সেখান থেকে জনগণ যাকে চাইতো বা যার কর্মসূচি পছন্দ করতো তাকে ভোট দিতেন।’
বিএনপি দাবি করেছে প্রধানমন্ত্রী চতুর্থবার ক্ষমতায় আসার জন্য বিভিন্ন দেশ সফর করে সমর্থন যোগাচ্ছেন, এবিষয়ে মতামত জানতে চাইলে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘দেখুন রাত-বিরাতে কারা বিদেশিদের কাছে যায়, আর কারা বিদেশিদেরকে দাওয়াত খাওয়ায় সেটাতো পত্রপত্রিকায়, টিভিতে প্রচারিত ও প্রকাশিত হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর এ সফরটি হলো রাষ্ট্রীয় সফর। জাপান সরকারের আমন্ত্রণে তিনি সেখানে গেছেন রাষ্ট্রীয় সফরে।’
তিনি বলেন, ‘বিশ্বব্যাংকের প্রেসিডেন্টের আমন্ত্রণে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র গেছেন। কারণ যে বিশ্বব্যাংক আমাদের পদ্মা সেতু থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছিল, অপবাদ দেওয়ার চেষ্টা করেছিল, আন্তর্জাতিক আদালতে হেরে গিয়েছিল, সেই বিশ্বব্যাংক প্রধানমন্ত্রীকে আমন্ত্রণ জানিয়ে নিয়ে যাচ্ছে। আমরা বিশ্ব ব্যাংককে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে নিজের টাকায় পদ্মা সেতু করেছি। সে কারণে তিনি সেখানে গেছেন। এছাড়া সেখানে অন্যান্য সরকারি মিটিং অবশ্যই হবে। প্রধানমন্ত্রী যুক্তরাজ্য যাচ্ছেন রাজা চার্লসের অভিষেক অনুষ্ঠানে যোগদানের জন্য এগুলো রাষ্ট্রীয় সফর।’
তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা জনগণের শক্তিকে বিশ্বাস করি। আওয়ামী লীগ জনগণের শক্তিতে বলীয়ান। আওয়ামী লীগ অন্যকোনো শক্তিকে বিশ্বাস করে না। আওয়ামী লীগ যখন ক্ষমতায় গেছে জনগণের ওপর ভর করেই জনগণের সমর্থন নিয়েই গেছে। তারা (বিএনপি) ক্ষমতায় গেছে পেছনের দরজা দিয়ে। পেছনের দরজা দিয়ে অবৈধভাবে দল গঠিত হয়েছে। সুতরাং তারা পেছনের দরজাটা খুব পছন্দ করে। হায়েনা যখন শিকার করে তখন পেছনের দিকে কামড় দেয়। বিএনপিও পেছনের দরজা পছন্দ করে।’
বিএনপির নেতারা গতকাল বলেছেন শিগগিরই তারা নতুন কর্মসূচি নিয়ে রাজপথে নামবেন, যা আওয়ামী লীগের জন্য অশনি সংকেত হবে? এমন প্রশ্নের জবাবে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘বিএনপি রাজপথে বিভিন্ন সময় নতুন কর্মসূচি, পুরোনো কর্মসূচির কথা বলে। আমরা আগে দেখেছি বিএনপি হাঁটা শুরু করেছিল, এবার হামাগুঁড়ি দেবে কি না আমি জানি না!’