বৃষ্টির পর নতুন লক্ষ্য নির্ধারণ করার কারণে দক্ষিণ আফ্রিকার প্রয়োজন ছিল ৩০ বলে ৭৩ রান। হেনরিক্স ক্লাসেন এবং ট্রিস্টান স্টাবস এই লক্ষ্য তাড়া করতে গিয়ে যেভাবে শুরু করেছিলেন, তাতে মনে হচ্ছিল বুঝি দক্ষিণ আফ্রিকাই জিতে যাবে।
কিন্তু সহসাই ম্যাচের লাগাম টেনে ধরে পাকিস্তান এবং শেষ পর্যন্ত দক্ষিণ আফ্রিকাকে লক্ষ্যে পৌঁছাতেও বাধা দিতে সক্ষম হয় তারা। বৃষ্টি বিঘ্নিত ম্যাচে ডিএল মেথডে দক্ষিণ আফ্রিকাকে ৩৩ রানে হারিয়ে সেমিফাইনালে ওঠার সম্ভাবনা টিকিয়ে রাখলো পাকিস্তান।
শাহিন শাহ আফ্রিদি আর শাদাব খানদের আঁটোসাঁটো বোলিংই মূলতঃ পাকিস্তানকে জয় উপহার দিয়েছে। আফ্রিদি ৩ ওভারে ১৪ রান দিয়ে নেন ৩ উইকেট। শাদাব খান ২ ওভারে ১৬ রান দিয়ে নেন ২ উইকেট। ১টি করে উইকেট নেন নাসিম শাহ, হারিস রউফ এবং মোহাম্মদ ওয়াসিম।
ব্যাটে বলে অসাধারণ নৈপুণ্য দেখিয়ে সেরার পুরস্কার জিতে নিলেন শাদাব খান। ব্যাট হাতে ২২ বলে ৫২ রানের টর্নেডো ইনিংস খেলার পর বল হাতে ২ উইকেট। সেরার পুরস্কার তো তার হাতেই মানায়।
সেমিফাইনালের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচ ছিল এটি। দক্ষিণ আফ্রিকা এবং পাকিস্তানের মধ্যকার ম্যাচটির মাধ্যমেই নির্ধারণ হলো, পাকিস্তানের টিকে থাকা। যদি দক্ষিণ আফ্রিকা জিততে পারতো, সেমির পথ প্রায় নিশ্চিত হতো তাদের।
৪ ম্যাচে ৪ পয়েন্ট নিয়ে পাকিস্তান এখন তৃতীয় স্থানে। ৫ পয়েন্ট নিয়ে দ্বিতীয় স্থানে দক্ষিণ আফ্রিকা এবং ৬ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষে ভারত। শেষ ম্যাচে দক্ষিণ আফ্রিকার প্রতিপক্ষ নেদারল্যান্ডস। অ্যাডিলেডে প্রোটিয়াদের জন্য খুবই সহজ সুযোগ, ডাচদের হারিয়ে সেমিফাইনাল নিশ্চিত করার। ম্যাচটিদে দক্ষিণ আফ্রিকা হেরে গেলে কিংবা বৃষ্টির কারণে ম্যাচ বাতিল হলে বাংলাদেশ অথবা পাকিস্তানের সম্ভাবনা তৈরি হবে।
আবার যদি দক্ষিণ আফ্রিকা এবং পাকিস্তান জয় পায় এবং জিম্বাবুয়ের কাছে ভারত হেরে যায়, তাহলে বিদায় হতে পারে ভারতেরই। এ ক্ষেত্রে বাংলাদেশ জিতলেও সেমিতে ওঠার দারুণ সম্ভাবনা রয়েছে। মোট কথা, শেষ রাউন্ড পর্যন্ত নাটকীয়তা থেকেই গেলো।
প্রায় প্রতি ম্যাচেই যেভাবে বৃষ্টি বাধা হয়ে দাঁড়াচ্ছে এবারের বিশ্বকাপে, তাতে করে সবারই প্রধান প্রতিপক্ষ হয়ে উঠেছে আবহাওয়া তথা বৃষ্টি। সিডনিতে আজ পাকিস্তান-দক্ষিণ আফ্রিকা ম্যাচেও এসেছিল বৃষ্টির বাধা। ওই বাধা পেরিয়ে আর জিততে পারেনি দক্ষিণ আফ্রিকা।
পাকিস্তানের ৯ উইকেটে করা ১৮৫ রানের জবাব দিতে নেমে ৯ ওভারে ৪ উইকেট হারিয়ে ৬৯ রান করে দক্ষিণ আফ্রিকা। এ অবস্থায় নামে বৃষ্টি। দীর্ঘক্ষণ বৃষ্টির পর অবশেষে খেলা যখন শুরু হয়, তখন দক্ষিণ আফ্রিকার কাছ থেকে ওভার কেটে নেয়া হয় ৬টি।
নতুন পরিবর্তিত লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয় ১৪ ওভারে ১৪২ রান। ৯ ওভারে ৬৯ রান করে ফেলার ফলে বাকি ৫ ওভারে দক্ষিণ আফ্রিকাকে করতে হতো ৭৩ রান।
বৃষ্টি আসার আগে অধিনায়ক টেম্বা বাভুমা ১৯ বলে ৩৬ রান করলেও অন্যরা দাঁড়াতেই পারেনি। কুইন্টন ডি কক শূন্য রানে, রাইলি রুশো ৭ রানে আউট হয়ে যান। এইডেন মারক্রাম ১৪ বলে ২০ রান করে আউট হন। ৬৬ রানে ৪ উইকেট হারিয়ে আগেই বিপদে পড়েছিল দক্ষিণ আফ্রিকা।
বৃষ্টির পর হেনরিক্স ক্লাসেন এবং ট্রিস্টান স্টাবস কিছুটা ঝড় তুলেছিলেন বটে; কিন্তু শাহিন শাহ আফ্রিদির বলে এই জুটি ভাঙার পর দক্ষিণ আফ্রিকার প্রতিরোধ ভেঙে যায়। ৯ বলে ১৫ রান করেন ক্লাসেন। স্টাবস ১৮ বলে ১৮ রান করেন।
এরপর ওয়েন পার্নেল ৪ বলে ৩ রান করে আউট হন। কাগিসো রাবাদা ২ বলে ১ রান, অ্যানরিক নরকিয়া ৫ বলে ১ রানে আউট হন। লুঙ্গি এনগিদি মাঠে নেমেই একটি বাউন্ডারি মারে অপরাজিত থাকেন। তাবিরজ শামসি ১ বলে ১ রান করে অপরাজিত থাকেন।