বিশ্ববাজারের সঙ্গে সমন্বয় করে দেশে জ্বালানি তেল, বিদ্যুৎ ও গ্যাসের দাম প্রতি মাসে সমন্বয়ের জন্য সরকার একটি কৌশল নির্ধারণ করেছে বলে জানিয়েছেন বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ। যার মাধ্যমে ভোক্তা পর্যায়ে তেল-গ্যাস ও বিদ্যুতের দাম নির্ধারণ ছাড়াও পুনর্নির্ধারণ ও সমন্বয় করতে পারবে সরকার।
সোমবার (৯ জানুয়ারি) রাজধানীর বিদ্যুৎ ভবনে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে প্রতিমন্ত্রী এ কথা জানান।
এ সময় এই সমন্বয় শুধু তেলের ক্ষেত্রেই হবে না-কি বিদ্যুৎ ও গ্যাসের ক্ষেত্রেও হবে- সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘সব, সবগুলোর।’
সম্প্রতি বিদ্যুতের দাম বাড়ানোর প্রসঙ্গে নসরুল হামিদ বলেন, বিশ্ববাজারে জ্বালানির দাম বাড়ার প্রভাবেই বিদ্যুতের দাম সমন্বয়ের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। তবে দাম বাড়ানোর পরও ভর্তুকি অব্যাহত রাখতে হবে সরকারকে।
গত ১ ডিসেম্বর মন্ত্রিসভার অনুমোদনের পর ‘বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন (সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০২২’ জারি হয়। এই অধ্যাদেশ অনুযায়ী সরকার বিশেষ ক্ষেত্রে বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশনের (বিইআরসি) বদলে ভোক্তা পর্যায়ে জ্বালানি তেল, বিদ্যুৎ ও গ্যাসের দাম নির্ধারণ, পুনর্নির্ধারণ ও সমন্বয় করতে পারবে। এরই ধারাবাহিকতায় সোমবার এমন বিধান যুক্ত করে ‘বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন (সংশোধন) আইন-২০২৩’ এর খসড়ার চূড়ান্ত অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা। এটি সংসদে পাস হলে বিশেষ পরিস্থিতিতে সরকার চাইলে বিদ্যুৎ, গ্যাস ও জ্বালানির দাম পুনর্নির্ধারণ বা সমন্বয় করতে পারবে।
বৈঠক শেষে সচিবালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে প্রস্তাব অনুমোদনের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব মো. মাহবুব হোসেন।
উল্লেখ্য, খুচরা পর্যায়ে বিদ্যুতের দাম প্রতি কিলোওয়াটে (ইউনিট) ১ টাকা ১০ পয়সা বৃদ্ধির সুপারিশ করেছে বিইআরসির কারিগরি কমিটি। এ নিয়ে গতকাল রোববার (৮ জানুয়ারি) রাজধানীর বিয়াম ফাউন্ডেশনের শহীদ এ কে এম শামসুল হক খান অডিটোরিয়ামে গণশুনানি অনুষ্ঠিত হয়। গণশুনানিতে জানুয়ারির মধ্যেই এ বিষয়ে সিদ্ধান্তের ইঙ্গিত দিয়েছেন বিইআরসি চেয়ারম্যান আবদুল জলিল।
প্রস্তাবে খুচরা বিদ্যুতের মূল্য গড়ে ৭ টাকা ১৩ পয়সা থেকে বাড়িয়ে ৮ টাকা ২৩ পয়সা করার সুপারিশ করা হয়েছে। এতে গড়ে বিদ্যুতের দাম বাড়তে পারে ১৫ দশমিক ৪৩ ভাগ। ৬টি বিতরণ কোম্পানি- বাবিউবো, বাপবিবো, ডিপিডিসি, ডেসকো, ওজোপাডিকো ও নেসকোর প্রস্তাব বিশ্লেষণ ও মূল্যায়ন করে কারিগরি কমিটির সুপারিশে বলা হয়েছে, বিদ্যমান এনার্জি রেট ৭ টাকা ০২ পয়সার সঙ্গে বিতরণ ব্যয় বাবদ ১ টাকা ২১ পয়সা যোগ করা যেতে পারে। এতে খুচরা বিদ্যুতের ভারিত গড় মূল্য দাঁড়াবে ৮ টাকা ২৩ পয়সা, যা এতদিন ৭ টাকা ১৩ পয়সা ছিল।