আগামী সপ্তাহে ঢাকা ও ওয়াশিংটনের মধ্যে শুল্ক ইস্যুতে দরকষাকষির জন্য তৃতীয় দফায় আলোচনা হওয়ার কথা রয়েছে। দেশটির দেয়া শর্তের মধ্যে স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক আইন থেকে কতটুকু বাস্তবায়ন সম্ভব তা উল্লেখ করে আলোচনা শুরুর আগেই প্রতিবেদন আকারে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে পাঠাতে বলা হয়েছে।
বৈঠকে বাণিজ্য সচিব মাহবুবুর রহমানসহ খাদ্য, কৃষি, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি, কৃষি, পররাষ্ট্রসহ ১১ মন্ত্রণালয় এবং জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) ও বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশনের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
বৈঠকের মাঝপথে বাণিজ্য উপদেষ্টা চলে গেলে এতে নেতৃত্ব দেন বাণিজ্য সচিব মাহবুবুর রহমান। বৈঠক শেষে তিনি উপস্থিত সাংবাদিকের বলেন, ‘আমদানি-রফতানির অনেক কিছুতে বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বিভাগ জড়িত। তাদের সবার আবার নিজস্ব আইন রয়েছে। তাই আজ তাদের মতামত নিতেই এ বৈঠক করা হয়।’
বাণিজ্য সচিব আরো বলেন, ‘এ বিষয়ে এখন নিয়মিত বৈঠক হবে। তারপর অবস্থানপত্র প্রস্তুত করে যুক্তরাষ্ট্রকে পাঠাব। তার ভিত্তিতেই দুই দেশের মধ্যে আলোচনা হবে।’
মাহবুবুর রহমান বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রের শুল্ক ইস্যুটি বৈশ্বিক বিষয়। সারা বিশ্ব যে পদ্ধতি অনুসরণ করে, বাংলাদেশও তাই করছে।’ তবে তৃতীয় দফার আলোচনা বিষয়ে ট্রাম্প প্রশাসন এখনো বাংলাদেশকে নির্দিষ্ট কোনো সময় দেয়নি জানিয়ে বাণিজ্য সচিব বলেন, ‘আমরা যোগাযোগ করছি।’
এর আগে গত মঙ্গলবার যুক্তরাষ্ট্র ও বাংলাদেশের মধ্যে ‘রেসিপ্রোকাল ট্যারিফ এগ্রিমেন্ট’-এর খসড়ার বিষয়ে আলোচনার জন্য বাণিজ্য উপদেষ্টার সভাপতিত্বে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে এক সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভা শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি জানান, শুল্ক নিয়ে আলোচনা করতে সরকারের একটি প্রতিনিধি দল আবার যুক্তরাষ্ট্রে যাচ্ছে। এ সময় বাণিজ্য উপদেষ্টা বলেন, ‘প্রস্তুতি সম্পন্ন করে আমরা দ্রুত আবার যুক্তরাষ্ট্রে ফেরত যাচ্ছি। আশা করি দেশটি আমাদের রফতানির ওপর যৌক্তিক শুল্ক নির্ধারণ করবে।’
শেখ বশিরউদ্দীন বলেন, ‘দ্বিতীয় ধাপের আলোচনা শেষ করে তৃতীয় ধাপের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছি। চলতি মাসে যুক্তরাষ্ট্রে যাব। আশা করছি একটা ভালো আউটকাম আসবে। যুক্তরাষ্ট্রে আমাদের আলোচনাগুলো আশাব্যঞ্জক হয়েছে। আলোচনাটা যথেষ্ট এনগেজিং ছিল। যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্যমন্ত্রীর সঙ্গেও বৈঠক হয়েছে। আমাদের সঙ্গে যারা নেগোসিয়েশনে যুক্ত ছিলেন তাদের ৩৫-৪০ জনের সঙ্গে আমাদের কয়েক দফা কথা হয়েছে।’
বাণিজ্য উপদেষ্টা বলেন, ‘আন্তঃমন্ত্রণালয় আলোচনার মাধ্যমে প্রস্তুতি সম্পন্ন করে আমরা দ্রুত আবার যুক্তরাষ্ট্রে ফেরত যাচ্ছি। আমরা সময়ের জন্য তাদের (যুক্তরাষ্ট্র) জানাব। আশা করছি সামনের সপ্তাহের মাঝামাঝি নাগাদ সময় পেয়ে যাব। শুল্কহার নির্ধারণের অংকটা আমি আসলে নিজে জানি না। আশা করি তারা যৌক্তিক শুল্ক নির্ধারণ করবে।’
এদিকে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে অবস্থানপত্র তৈরির প্রস্তুতি হিসেবে গতকাল বিকাল ৫টার দিকে জুম প্লাটফর্মে মার্কিন কোম্পানি শেভরনের কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলাদা বৈঠক করেন বাণিজ্য উপদেষ্টা। একইভাবে সাড়ে ৫টায় দেশটির আরেক কোম্পানি এক্সিলারেট এনার্জির সঙ্গেও বৈঠক হয়। ২২ জুলাই আমেরিকান অ্যাপারেলস অ্যান্ড ফুটওয়্যার অ্যাসোসিয়েশনের সঙ্গে আরেকটি বৈঠক হওয়ার কথা রয়েছে।