আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দলের তৃণমূল পর্যায়ে নেতাকর্মীদের মধ্যকার বিরোধ নিষ্পত্তির নির্দেশ দিয়েছেন। সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকের মনের মিল না হলে স্ব স্ব দায়িত্ব থেকে তাদের অব্যাহতি দেওয়ার আদেশ দিয়েছেন তিনি। শনিবার (১২ জুন) প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবনে অনুষ্ঠিত আওয়ামী লীগের সংসদীয় বোর্ডের সভায় এ নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে বলে সভায় উপস্থিত একাধিক নেতা নিশ্চিত করেছেন।
আওয়ামী লীগ নেতারা বলছেন, ফরিদপুর শহর আওয়ামী লীগের কমিটি নিয়ে জেলার সভাপতি সুবল সাহা ও সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ মাসুদ হোসেনের মধ্যকার বিরোধের বিষয়টি আলোচনায় আসে। ফরিদপুর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের মধ্যে চলমান বিরোধ নিষ্পত্তির জন্য দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরকে নির্দেশ দেন সভাপতি শেখ হাসিনা।
সভা সূত্রে জানা যায়, সভায় উপস্থিত নেতাদের উদ্দেশে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা বলেন, যেখানেই সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকের বিরোধ সেসব জেলা-উপজেলা ও পৌর কমিটির নেতাদের ডেকে সমন্বয় ও নিষ্পত্তি করার চেষ্টা করতে হবে। তাতেও সম্ভব না হলে বিরোধপূর্ণ ইউনিটের নেতাদের দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দিতে হবে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক মনোনয়ন বোর্ডের এক সদস্য জানান, ফরিদপুর জেলা কমিটির ওপর আবারও ক্ষুব্ধ হয়েছেন শেখ হাসিনা। ফরিদপুর জেলা আওয়ামী লীগ কমিটির সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকের বিরোধ নিষ্পত্তি করা না গেলে প্রয়োজনে দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। একইসঙ্গে অনুমোদনের অপেক্ষায় থাকা ফরিদপুর শহর আওয়ামী লীগের পৃথক কমিটি দুটি বাদ দিতে বলেন শেখ হাসিনা।
সভায় উপস্থিত দুই নেতা জানান, বিভাগীয় দায়িত্ব দিয়ে কেন্দ্রীয় নেতাদের সমন্বয় করে আওয়ামী লীগের যেসব কমিটি করা হয়েছে তাদের সাংগঠনিক কার্যক্রম শুরু করে দিতে বলেছেন দলীয় প্রধান।নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক মনোনয়ন বোর্ডের অপর এক সদস্য বলেন, বিরোধ নিষ্পত্তির আলোচনার বাইরেও বর্তমান করোনা পরিস্থিতিতে আগামীতে কোনো ধরনের নির্বাচন না করার বিষয়ে আলোচনা হয়েছে।
এই নেতা আরও বলেন, মনোনয়ন বোর্ডের সভাপতি শেখ হাসিনা ভারতের উদাহরণ টেনে বলেন, করোনাকালীন সময়ে নির্বাচনের কারণেই ভারতে বিপর্যয় নেমে আসতে আমরা দেখেছি। ফলে আগামীতে আমাদের দেশের নির্বাচন অনুষ্ঠানের ব্যাপারে আওয়ামী লীগের অবস্থান নেতিবাচক থাকবে।
আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য কর্নেল (অব.) ফারুক খান বলেন, বিরোধপূর্ণ জেলা কমিটিগুলো নিয়ে আলোচনা হয়েছে। যে আটটি টিমকে সাংগঠনিক দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে তারা করোনার কারণে ঠিকভাবে দায়িত্ব পালন করতে পারছে না। আশা করছি, করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে সাংগঠনিক কার্যক্রম পুনরায় ভালোভাবে চালু করতে পারব। তিনি বলেন, ফরিদপুরের কমিটি নিয়ে একটু সমস্যা হয়েছে। সে বিষয়টি নিষ্পত্তি করার জন্য আমাদের সাধারণ সম্পাদককে নেত্রী নির্দেশ দিয়েছেন।
এর আগে গত ১০ জুলাই দলটির সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের স্বাক্ষরিত এক চিঠির মাধ্যমে আওয়ামী লীগের তৃণমূল নেতাদের সাংগঠনিক টিম গঠনের নির্দেশের কথা জানানো হয়। ওই চিঠিতে বলা হয়, আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা আওয়ামী লীগের সব শাখায় সংগঠনের গতিশীলতা বৃদ্ধি এবং সাংগঠনিক কার্যক্রমকে আরও জোরদার করতে সারাদেশে সাংগঠনিক টিম গঠনের জন্য নির্দেশনা প্রদান করেছেন।