দীর্ঘ দুই বছর পর টঙ্গীর তুরাগ নদীর তীরে বসেছে বিশ্ব ইজতেমার জমায়েত। আর সেখানে একসঙ্গে জুমার নামাজ আদায় করেছেন দেশ-বিদেশের লাখো ধর্মপ্রাণ মুসল্লি। নামাজ শেষে দুই হাত তুলে আল্লাহর কাছে অশ্রুসিক্ত চোখে প্রার্থনা করেন তারা।
শুক্রবার (১৩ জানুয়ারি) বাদ ফজর পাকিস্তানের মাওলানা জিয়াউল হকের আম বয়ানের মধ্য দিয়ে ইজতেমার প্রথম পর্বের আনুষ্ঠানিক কার্যক্রম শুরু হয়। রোববার (১৫ জানুয়ারি) আখেরি মোনাজাতের মধ্য দিয়ে শেষ হবে বিশ্ব ইজতেমার এ পর্ব। দ্বিতীয় পর্ব শুরু হবে শুক্রবার (২০ জানুয়ারি)।
মুসলিম উম্মার দ্বিতীয় বৃহৎ এ জামায়াতে ইমামতি করেন কাকরাইল মসজিদের খতিব ও তাবলীগের শূরা সদস্য মাওলানা জোবায়ের।
দুপুর ১২টা ১৫ মিনিটে হয় জুমার আজান, ১টা ৪০ মিনিটে শুরু হয় জুমার খুদবা। দুপুর ১টা ৪৫ মিনিটে শুরু হয় জুমার নামাজ, শেষ হয় দুপুর ১টা ৫২ মিনিটে।
সকাল থেকে ইজতেমা এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে গতকাল রাত থেকেই তুরাগতীরে হাজির হন লাখো মুসল্লি, এসেছেন দেশের বাইরে থেকেও। আর ভোর থেকে টঙ্গীর আশেপাশের এলাকা ঢাকা, গাজীপুর, আশুলিয়া, সাভারসহ বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা ধর্মপ্রাণ মুসল্লিদের জনস্রোত নামে ইজতেমা ময়দানে। ১৬০ একরের ইজতেমা ময়দান কানায় কানায় পূর্ণ হওয়ায় মুসল্লিরা আশেপাশের খালি জায়গা, ফুটপাত ও রাস্তায় জায়গা নিয়েছেন। সেখানে বসেই তারা শুনছিলেন শীর্ষস্থানীয় মুরুব্বিদের বয়ান। আর মাঠের বাইরে থাকা মুসল্লিদের বয়ান ও নির্দেশনা শোনার সুবিধার্থে প্রায় ৫০ মিটার পরপরই স্থাপন করা হয়েছে মাইক।
এদিকে বিশ্ব ইজতেমার আয়োজক কমিটির সদস্য প্রকৌশলী আব্দুন নূর বলেন, দেশ-বিদেশের লাখো মুসলিম জনতার পদচারণায় মুখরিত হয়ে উঠেছে টঙ্গীর তুরাগ তীর। ইতোমধ্যে পুরো ময়দান পূর্ণ হয়ে গেছে। জিকির-আসকারে সময় পার করছেন মুসল্লিরা।
উত্তরা থেকে আসা জাহিদুল ইসলাম বলেন, উত্তরার ৭ নং সেক্টরের ১৮ নম্বর রোডে বাসা। নিয়মিত সেখানেই নামাজ পড়ি। বাসার কাছে এতো বড় আয়োজন, সেটি তো মিস করা যায় না। যেখানে লাখো মানুষ এক কাতারে নামাজ পড়ে, যেখানে এতো বরকত নাজিল হয় সেখানেই জুমার নামাজটা পড়তে এসেছি।
পুরান ঢাকা থেকে আসা রুবেল খান বলেন, বছরে একটা জামায়াত অন্তত লাখো মানুষের কাতারে পড়তে চাই। তাই সকাল ১০টায় রওনা হয়েছি বাসা থেকে।