চলতি অর্থবছরের প্রথম প্রান্তিকে (জুলাই-সেপ্টেম্বর) রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা থেকে ৮ হাজার ১৯৫ কোটি ৬৩ লাখ টাকা পিছিয়ে রয়েছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
১৪.৩৪ শতাংশ প্রবৃদ্ধি অর্জিত হলেও আয়কর, ভ্যাট কিংবা কাস্টমসে কোনো বিভাগেই লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করতে পারিনি প্রতিষ্ঠানটি। এর আগে চলতি অর্থবছরে প্রথম দুই মাসে (জুলাই ও আগস্ট) রাজস্ব ঘাটতি ছিল ৪ হাজার ৮৭ কোটি টাকা।
এনবিআর সূত্রে জানা যায়, চলতি ২০২৩-২০২৪ অর্থবছর রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৪ লাখ ৩০ হাজার কোটি টাকা। আর প্রথম প্রান্তিকে বা তিন মাসে রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৮৪ হাজার ৯৪৬ কোটি ৯৩ লাখ টাকা। যার বিপরীতে আদায় হয়েছে ৭৬ হাজার ৭৫১ কোটি ৩০ লাখ টাকা।
এ বিষয়ে এনবিআরের এক কর্মকর্তা ঢাকা পোস্টকে বলেন, দেশে রেকর্ড মূল্যস্ফীতি বিরাজ করছে। আর মূল্যস্ফীতির কারণে বিভিন্ন পণ্যের দাম দ্বিগুণ। যার সরাসরি প্রভাব পড়েছে ভ্যাট আদায়ে। ফলে ভ্যাট আদায়ের প্রকৃতির বিবেচনায় সন্তোষজনক, তবে সেই তুলনায় পিছিয়ে আছে আয়কর। আশা করছি, আগামীতে আয়কর আদায় অনেকাংশে বেড়ে যাবে। সেক্ষেত্রে ঘাটতিও কমে আসবে।
রাজস্ব বোর্ডের তথ্য বলছে, লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে সবচেয়ে বেশি পিছিয়ে ছিল আয়কর। এই খাতে ঘাটতি দাঁড়িয়েছে ৩ হাজার ৫২৬ কোটি ৮৫ লাখ টাকা। পণ্য মূল্য বৃদ্ধির পরও ভ্যাটে ঘাটতির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ২ হাজার ১৫৪ কোটি ৬৮ লাখ টাকা। আর আমদানি ও রপ্তানি শুল্কে ঘাটতি দাঁড়িয়েছে ২ হাজার ৫১৪ কোটি ১০ লাখ টাকা।
আর প্রবৃদ্ধির বিবেচনায় গত বছরের তুলনায় একই সময়ে ভ্যাটের প্রবৃদ্ধি হয়েছে ১৮.০৭ শতাংশ, আয়করে ১৭. ৪৭ শতাংশ আর শুল্কে প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৭. ৪৫ শতাংশ। যদিও শুল্ক খাতে রাজস্ব প্রবৃদ্ধি ভালো না হলেও লক্ষ্যমাত্রার ৯০ শতাংশেরও বেশি আদায় হয়েছে।
চলতি অর্থবছরের প্রথম তিন মাসে শুল্ক খাতে রাজস্ব আহরণের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ২৬ হাজার ৬৪২ কোটি টাকা। এ সময়ে শুল্ক বিভাগ আদায় করেছে ২৪ হাজার ১২৭ কোটি ৯০ লাখ টাকা। আর তিন মাসে ভ্যাট আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৩১ হাজার ১৩৬ কোটি ৯৩ লাখ টাকা। ভ্যাট আদায় হয়েছে ২৮ হাজার ৯৮২ কোটি ২৫ লাখ টাকা। অর্থাৎ ভ্যাট আদায়ে রাজস্ব ঘাটতির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ২ হাজার ১৫৪ দশমিক ৬৮ কোটি টাকা। অন্যদিকে অর্থবছরের প্রথম তিন মাসে আয়কর বিভাগের রাজস্ব আহরণের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ২৭ হাজার ১৬৮ কোটি টাকা। ওই সময়ে আয়কর বিভাগ আদায় করেছে ২৩ হাজার ৬৪১ কোটি ১৫ লাখ টাকা।
চলতি অর্থবছর এনবিআরের রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্য ৪ লাখ ৩০ হাজার কোটি টাকা। যার মধ্যে মূসক থেকে ১ লাখ ৫৯ হাজার ১০০ কোটি টাকা, আয়কর থেকে ১ লাখ ৫৪ হাজার ৮০০ কোটি টাকা ও আমদানি-রপ্তানি শুল্ক থেকে ১ লাখ ১৬ হাজার ১০০ কোটি টাকা লক্ষ্যমাত্রা ঠিক করা হয়েছে।