আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে জেলা সফরে বের হচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা। ইতিমধ্যে তিন জেলায় তার সফর সূচি চূড়ান্ত হয়েছে। ২৪ নভেম্বর যশোরের শামসুল হুদা স্টেডিয়ামে আওয়ামী লীগ আয়োজিত জনসভার মাধ্যমে এই সফর শুরু করবেন। এরপর ৪ ডিসেম্বর চট্টগ্রামের পলোগ্রাউন্ডে এবং ৭ ডিসেম্বর কক্সবাজারের শেখ কামাল ক্রিকেট স্টেডিয়ামে দলীয় জনসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখবেন তিনি। এই তিন জনসভায় সব মিলিয়ে ৩০ লাখ লোক সমাগম ঘটানোর লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে।
দলীয় সূত্রে জানা গেছে, দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচনের আগে পর্যায়ক্রমে সব জেলায় যাবেন শেখ হাসিনা। সম্প্রতি দলীয় ফোরামের বৈঠকে তিনি বলেন, এখন থেকে দলকে আরো সময় দেবেন তিনি। যশোরে বঙ্গবন্ধুর জনসভার স্থানেই শেখ হাসিনার জনসভা: ১৯৭২ সালের ২৬ ডিসেম্বর যশোর স্টেডিয়ামে ভাষণ দিয়েছিলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। একই মাঠে ৫০ বছর পর জনসভায় ভাষণ দেবেন তার জ্যেষ্ঠ কন্যা শেখ হাসিনা। নৌকার আদলে সেখানে তৈরি করা হচ্ছে জনসভার মঞ্চ। যশোর জুড়ে চলছে সাজসজ্জার কাজ। তৈরি করা হচ্ছে তোরণ, অভ্যর্থনা গেট।
যশোর জেলা আওয়ামী লীগের নেতারা জানান, জনসভায় ৫ থেকে ১০ লাখ মানুষের উপস্থিতি ঘটানোর টার্গেট রয়েছে। জনসভায় যশোরের আটটি উপজেলাসহ খুলনা বিভাগের ১০ জেলা থেকে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা অংশ নেবেন। সূত্রে জানা গেছে, জনসভা সফল করতে আওয়ামী লীগের আটটি উপকমিটির নেতৃবৃন্দ কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন। ইতিমধ্যে বিশাল এই গণজমায়েতের জন্য বাস, প্রাইভেট কার ও মাইক্রোবাস মিলিয়ে ৫ হাজার যানবাহন আসা ও পার্কিংয়ের জন্য স্থান নির্ধারণ করেছে ট্রাফিক বিভাগ। ৪ হাজার গাড়ি পার্কিংয়ের জন্য ১০টি স্পট নির্ধারণ করা হয়েছে। এর মধ্যে মন্ত্রী-এমপিদের জন্য চারটি স্পট, অন্য ভিআইপিদের জন্য একটি স্পট ও আওয়ামী লীগ নেতাকর্মী ও শুভানুধ্যায়ীদের বাস, প্রাইভেট কার ও মাইক্রোবাস পার্কিংয়ের জন্য আরো পাঁচটি পার্কিং এলাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। জনসভার দিন শহরে কোনো যানবাহন প্রবেশ করতে দেওয়া হবে না।
সর্বশেষ পাঁচ বছর আগে ২০১৭ সালের ৩১ ডিসেম্বর যশোর ঈদগাহ মাঠে নির্বাচনি জনসভায় ভাষণ দিয়েছিলেন শেখ হাসিনা। ৩০০ মাইকে ১০ লাখ মানুষ শুনবেন প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য: চট্টগ্রামের ৪ ডিসেম্বরের জনসভা উপলক্ষ্যে পলোগ্রাউন্ড মাঠে ৪ লাখ নেতাকর্মীসহ মাঠের বাইরে ১১ লাখ মানুষের সমাগম ঘটানোর লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে। তারা যেন প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য শুনতে পারেন, সে জন্য লাগানো হবে ৩০০ মাইক। পলোগ্রাউন্ডে সাত ফুট উঁচু মঞ্চ তৈরি করা হবে। এর দৈর্ঘ্য ও প্রস্থ হবে যথাক্রমে ১২০ ও ১৪০ ফুট। যাতে বসতে পারবেন ২০০ অতিথি। চট্টগ্রামে এর আগে ২০১৮ সালের ২১ মার্চ পটিয়া আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে আওয়ামী লীগের জনসভায় যোগ দিয়েছিলেন শেখ হাসিনা।
সমুদ্রপাড়ের জনসভায় ৫ লাখ মানুষের সমাগম ঘটবে : কক্সবাজারে সমুদ্রপাড়ের শেখ কামাল ক্রিকেট স্টেডিয়ামে ৭ ডিসেম্বরের জনসভাস্থল ও এর আশাপাশ এলাকায় ৫ লাখ মানুষের সমাগম ঘটানোর টার্গেট নির্ধারণ করা হয়েছে। ইতিমধ্যে জেলা আওয়ামী লীগ প্রধানমন্ত্রীর জনসভা সফল করতে কয়েক দফা বৈঠক করেছে। জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও পৌর মেয়র মুজিবুর রহমান বলেন, প্রায় সাড়ে পাঁচ বছর পর দলের সভাপতি কক্সবাজার আসছেন। এতে নেতাকর্মীদের মধ্যে উচ্ছ্বাস তৈরি হয়েছে। এর আগে ২০১৭ সালের ৬ মে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সর্বশেষ কক্সবাজার যান।
আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘এখন থেকে প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা ঢাকার বাইরে জনসভা ও গণসমাবেশ করবেন। করোনার কারণে তিনি এত দিন সশরীরে যেতে পারেননি।’