বিশ্বের রহস্যজনক গুহাগুলোর অন্যতম মেক্সিকোর নাইকা মাইন কেভ। কেন এই গুহার ভিতরের তাপমাত্রা ছাড়িয়ে যায় ১৩০ ডিগ্রি? কী রয়েছে বিশ্বের উষ্ণতম এই গুহায়।
গুহা মানেই প্রায় অন্ধকার রহস্যময় একটি স্থান। আর ভিতরের অংশ স্যাঁতস্যাঁতে ও ঠাণ্ডা। কিন্তু বিশ্বের সব গুহা মোটেই এক রকম নয়। ভয়ংকর গরম গুহার অস্তিত্বও রয়েছে পৃথিবীতে। যার নিচে দিয়ে সর্বক্ষণ বইছে গরম লাভার স্রোত!
বিশ্বের অন্যতম গরম গুহা রয়েছে উত্তর আমেরিকার দেশ মেক্সিকোয়। যার নাম নাইকা মাইন কেভ। ২০০০ সালে গুহাটির হদিশ খুঁজে পান অভিযাত্রীরা। বছরভর এর ভিতরের অংশে তাপমাত্রা থাকে ১২২ থেকে ১৩৬ ডিগ্রি। ফলে গুহাটির মেঝেতে পা রাখা রীতিমতো কঠিন বলে জানিয়েছেন বিজ্ঞানীরা।
গুহার ভিতরের ভয়ংকর এই তাপের উৎস কী? গবেষকরা জানিয়েছেন, নাইকা মাইন কেভ মেঝের নিচে বইছে গরম লাভার স্রোত। ফলে গুহার মধ্যের আপেক্ষিক আর্দ্রতাও অনেকটা বেশি। সবসময় এটি ১০০ শতাংশর বেশি থাকে।
এছাড়া নাইকা মাইন কেভের আরও একটি বৈশিষ্ট্য রয়েছে। এটি পৃথিবীর সবচেয়ে বড় স্ফটিক গুহা। এর ভিতর জুড়ে তলোয়ারের মতো গজিয়ে উঠেছে স্ফটিক। কয়েক বছর আগে যা চুরি করতে গিয়ে চরম পরিণতি হয় এক শ্রমিকের। প্রবল গরমের কারণে প্রাণ হারাতে হয় তাকে।
স্থানীয় সংবাদমাধ্যমগুলোর প্রতিবেদন অনুযায়ী, গুহাটির মধ্যে বিপুল স্ফটিকের অস্তিত্বের হদিশ মেলার খবর ছড়িয়ে পড়তেই সেগুলো লুটের পরিকল্পনা করেন ওই ব্যক্তি। প্রশাসনের নজর এড়িয়ে গুহার মধ্যে প্রবেশ করেন তিনি। এরপর বেশ কয়েকটি স্ফটিক গুহার ছাদ থেকে খুলেও ফেলেন ওই ব্যক্তি। কিন্তু সেগুলি নিয়ে গুহার বাইরে বেরিয়ে আসতে পারেননি তিনি। হাতে স্ফটিক থাকা অবস্থাতেই প্রবল গরম ও অক্সিজেনের অভাবে মৃত্যু হয় তার।
এরপর থেকেই মেক্সিকো প্রশাসনের তরফে নাইকা মাইন কেভে প্রবেশের ক্ষেত্রে জারি হয়েছে নিষেধাজ্ঞা। কোনও সাধারণ পর্যটককে সেখানে ঢুকতে দেওয়া হয় না। তবে গুহায় ঢোকার ক্ষেত্রে ভূপদার্থবিদদের ছাড় রয়েছে। একাধিক সতর্কতা অবলম্বন করে সেখানে ঢুকতে হয় তাদের।
মেক্সিকোর ওই গুহায় প্রবেশের ক্ষেত্রে অক্সিজেনের সিলিন্ডার নেওয়া বাধ্যতামূলক। এছাড়া শরীর ঠাণ্ডা রাখতে পরতে হয় বিশেষ এক ধরনের পোশাক। শুধু তাই নয়, গুহাটিতে প্রবেশের আগে বিশেষ প্রশিক্ষণও দেয় মেক্সিকো প্রশাসন।
গুহার ভিতরে কীভাবে গজিয়ে উঠল রাশি রাশি স্ফটিক? বিষয়টি নিয়ে অবশ্য এখনও স্পষ্ট করে কিছু জানাতে পারেননি ভূবিজ্ঞানীরা। এ নিয়ে এখনও গবেষণা চালাচ্ছেন তারা।