সংরক্ষিত নারী সদস্য পদে নির্বাচিত হয়ে সবাইকে তাক লাগিয়ে দিয়েছেন তৃতীয় লিঙ্গের মারুফা আক্তার মিতু। তিনি সপ্তম ধাপের ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে রংপুরের মিঠাপুকুর উপজেলায় দুর্গাপুর ইউনিয়নে সংরক্ষিত নারী সদস্য হয়েছেন। দুর্গাপুর ইউনিয়নের দায়িত্বে নিয়োজিত উপজেলা রিটার্নিং কর্মকর্তা ও উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, ১, ২ ও ৩ নম্বর ওয়ার্ডে সংরক্ষিত নারী ইউপি সদস্য পদে মোট ৪ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। এদের মধ্যে তৃতীয় লিঙ্গের মারুফা আক্তার মিতু মাইক প্রতীকে সর্বোচ্চ ৪ হাজার ৫৮০ ভোট পেয়ে বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী রহিমা বেগম বই প্রতীকে ৩ হাজার ৬৫৩ ভোট। অন্য প্রার্থী প্রভাতী রানী কলম প্রতীকে ৮৬৮ ও শাহজাদী বেগম হেলিকপ্টার প্রতীকে ৫৯৪ ভোট পেয়েছেন।
এই প্রথমবারের মতো মিঠাপুকুর উপজেলায় তৃতীয় লিঙ্গের একজন নারী সদস্য নির্বাচিত হওয়ায় ভোটারদের মাঝে উৎসবের আমেজ বিরাজ করছে। মিঠাপুকুর প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক গণমাধ্যমকর্মী সবুজ আহমেদ অভিমত ব্যক্ত করে বলেন, সমাজের অবহেলিত হিজড়া সম্প্রদায়ের জন্য এটা একটা বিরাট অর্জন। গৌরবের বিষয়। আমি নিজেও তাকে ভোট দিয়েছি। তারাও আমাদের সমাজের অংশ। মারুফা আক্তার নির্বাচিত হওয়ায় আমি গর্বিত। কাশিপুর গ্রামের হাফিজুর রহমান মানিক বলেন, সব নির্বাচনে নারী ও পুরুষ নির্বাচিত হয়ে আসছেন। এই প্রথম একজন তৃতীয় লিঙ্গের ব্যক্তিকে সদস্য হিসেবে পেয়েছি। খুব ভালো লাগছে।
মারুফা আক্তার মিতু আবেগজড়িত কণ্ঠে বলেন, আমার দীর্ঘদিনের সাধনা ছিল, সমাজের সাধারণ মানুষের মতোই কাজ করার। অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়ানো। এজন্য একটি ভালো অবস্থানে থাকতে হবে। আর তাই, নির্বাচনে দাঁড়িয়েছিলাম। সবাই আমাকে এভাবে আপন করে নেবে, এটা ভাবতেই পারিনি। তিনি আরও বলেন, আমার জীবনে কোনো কিছু চাওয়া নেই। কোনো আত্মীয় স্বজনও নেই। সরকারি যা কিছু বরাদ্দ পাব, গরীব মেহনতি মানুষের মাঝে বিলিয়ে দেব।