তরুণদের ক্ষমতায়নের মাধ্যমে ভবিষ্যৎ বাংলাদেশ বিনির্মাণে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ গ্রামীণফোন। এ প্রতিশ্রুতির অংশ হিসেবে প্রতিষ্ঠানটি ‘জিপি একাডেমি’ উন্মোচন করেছে। এ একাডেমি ডিজিটাল ভবিষ্যতের জন্য তরুণদের দক্ষ করে প্রস্তুত করতে সহায়তা করবে। বুধবার (১৮ মে) রাজধানীতে গ্রামীণফোনের হেড অফিসে (জিপি হাউজ) এ একাডেমি উন্মোচন করা হয়। সদ্য প্রতিষ্ঠিত জিপি একাডেমির লক্ষ্য বাংলাদেশের সম্ভাবনাময় তরুণ প্রজন্মকে ভবিষ্যতের জন্য প্রস্তুত করে তোলা। জিপি একাডেমির প্রোগ্রাম ও কোর্সগুলো এমনভাবে ডিজাইন করা হয়েছে, যা তরুণদের ক্যারিয়ার প্রস্তুতি জোরদার করবে, উদ্যোক্তা হওয়ার দক্ষতাকে শাণিত করবে এবং তাদের চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের জন্য প্রস্তুত হতে প্রয়োজনীয় দক্ষতা অর্জনে সহায়তা করবে।
‘জিপি এক্সপ্লোরারস’প্রোগ্রামের মাধ্যমে গ্রামীণফোন বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া শিক্ষার্থীদের গত দুই বছর ধরে আপস্কিল করে যাচ্ছে। এখন জিপি একাডেমির মাধ্যমে প্রতিষ্ঠানটির লক্ষ্য দেশজুড়ে তরুণদের দক্ষতার বিস্তৃতি ঘটানো। ক্যারিয়ার শুরু করার জন্য জিপি একাডেমির প্রোগ্রাম এমনভাবে ডিজাইন করা হয়েছে, যা একাডেমিক জ্ঞান ও পেশাগত ক্ষেত্রের মধ্যে বিদ্যমান ব্যবধান দূর করবে এবং শিক্ষার্থীদের প্রয়োজনীয় ও চতুর্থ শিল্প বিপ্লব সংশ্লিষ্ট দক্ষতা অর্জনে সহায়তার মাধ্যমে ভবিষ্যতের জন্য প্রস্তুত করে তুলবে।
পাশাপাশি তরুণদের ক্যারিয়ারের পরবর্তী স্তরে প্রবেশের প্রস্তুতির জন্য জিপি একাডেমির কোর্সগুলো তাদের একাডেমিক জ্ঞানের সঙ্গে অন্যান্য ভবিষ্যৎ উপযোগী দক্ষতা বৃদ্ধিতে সহায়তা করবে। অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি জাতীয় দক্ষতা উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (এনএসডিএ) নির্বাহী চেয়ারম্যান (সচিব) দুলাল কৃষ্ণ সাহা গ্রামীণফোনের এ অনন্য উদ্যোগে তার পূর্ণ সমর্থন ব্যক্ত করেন।
তিনি বলেন, আমি প্রযুক্তি এবং উদ্ভাবনীর মাধ্যমে দক্ষতা তৈরির অনন্য গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্রে গ্রামীণফোনের অংশগ্রহণ দেখে আনন্দিত। বেসরকারি খাতে এ ধরনের উদ্যোগ তরুণদের আরও দক্ষ করতে এবং তাদের বাস্তব কর্মক্ষেত্রের জন্য প্রস্তুত করতে কার্যকর হবে। টেলিনর এএসএর ইভিপি ও চিফ পিপল অ্যান্ড সাসটেইনিবিলিটি অফিসার সিসিলি হিউচ জিপি একাডমির সম্ভাবনার কথা উল্লেখ করেন।
তিনি বলেন, একটি টেকসই ভবিষ্যৎ গড়ে তোলার জন্য ভবিষ্যৎমুখী কর্মদক্ষতা তৈরি করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। টেলিনর এবং সিসকোর যৌথ প্রয়াসে জিপি একাডেমির উদ্বোধনের অংশ হতে পেরে আমি আনন্দিত। আমি বিশ্বাস করি এবং আশা রাখি যে নির্ভরযোগ্য বৈশ্বিক অংশীদারদের সঙ্গে নিয়ে আমাদের এমন সম্মিলিত প্রচেষ্টা বাংলাদেশের তরুণদের ডিজিটাল দক্ষতা বিকাশে, ডিজিটালাইজেশনকে ত্বরান্বিত করতে এবং বিশ্বব্যাপী একটি প্রতিযোগিতামূলক কর্মশক্তি গড়ে তুলতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।
গ্রামীণফোনের প্রধান নির্বাহী ইয়াসির আজমান বলেন, প্রযুক্তি, উদ্ভাবন এবং সামাজিক প্রভাব প্রকল্পের মাধ্যমে বাংলাদেশের তরুণদের প্রকৃত সম্ভাবনাকে বের করে আনার প্রত্যয় ধারণ করে গ্রামীণফোন। আমরা আমাদের বিভিন্ন আপস্কিলিং প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে তরুণদের মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ ডিজিটাল দক্ষতার সমন্বয় ঘটানোর প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। আমি আশাবাদী যে ফিউচার-রেডি স্কিলের মাধ্যমে যুবকদের ক্ষমতায়নের জন্য আমাদের নিয়মিত প্রচেষ্টার ধারাবাহিকতায় টেলিনর এবং সিসকোকে পাশে নিয়ে জিপি একাডেমি পরিবর্তনমুখী দক্ষতার মাধ্যমে তরুণদের সম্ভাবনার উন্মোচন ঘটাবে, যা বাংলাদেশকে একটি স্মার্ট নেশনে পরিণত করতে ভূমিকা রাখবে।
সিসকো বাংলাদেশের জেনারেল ম্যানেজার ফখরুদ্দিন আহমেদ বলেন, টেলিনর এবং গ্রামীণফোনের মধ্যকার অংশীদারিত্ব এবং সিসকোর নেটওয়ার্কিং একাডেমিকে কাজে লাগানোর মাধ্যমে ভবিষ্যতে যে চমৎকার সম্ভাবনাগুলোর সূচনা হতে পারে, তা নিয়ে আমরা উচ্ছ্বসিত। এটি আগামীর প্রযুক্তির সঙ্গে বর্তমানের প্রতিভাকে সমন্বিত করার একটি পদক্ষেপ, যা প্রযুক্তি খাতে তাদের আরও দক্ষ করে তোলে, ফলে তাদের ভালো চাকরি পাওয়ার সুযোগ তৈরি করে এবং ভবিষ্যতের ডিজিটাল বিশ্বের জন্য বাংলাদেশের তরুণদের শাণিত করে।
অনুষ্ঠানে গ্রামীণফোনের সিএইচআরও সৈয়দ তানভির হোসেনের অংশগ্রহণে একটি প্যানেল আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়। অনুষ্ঠানে গ্রামীণফোনের হেড অব কমিউনিকেশন্স খায়রুল বাশারের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে ভোট অব থ্যাংকস দেন আইইউটির প্রকৌশল ও প্রযুক্তি অনুষদের ডিন ড. মো. আশরাফুল হক, সিসকো সিস্টেমের কান্ট্রি জিএম (বাংলাদেশ) ফখরুদ্দিন আহমেদ, টেলিনর গ্রুপের হেড অব সাসটেইনেবিলিটর ভিপি মনীষা ডোগরা এবং জিপি অ্যাকাডেমির প্রাক্তন শিক্ষার্থী সাদমীনা মাহরীন ও গ্রামীণফোনের প্রধান নির্বাহী ইয়াসির আজমান। গ্রামীণফোনের পাবলিক অ্যান্ড রেগুলেটরি অ্যাফেয়ার্সের সিনিয়র ডিরেক্টর হোসেন সাদাত, জিপি একাডেমির লিড ফারহানা ইসলামসহ প্রতিষ্ঠানটির অন্যান্য কর্মকর্তারা অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।